বিজেপির নবান্ন অভিযান কর্মসূচি মঙ্গলবার। সেই কর্মসূচি উপলক্ষে কলকাতায় যাওয়ার পথে বিজেপিকর্মীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে। সোমবার উত্তরবঙ্গের তুফানগঞ্জ, মালবাজার, শিলিগুড়ি জংশন, আলিপুরদুয়ার স্টেশনে বিজেপিকর্মীদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, পুলিশ এ ভাবে তাঁদের কর্মীদের আটকে বেআইনি কাজ করছে। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে জানিয়েছেন, এ সবই আসলে ‘নাটক’। তাঁর দাবি, লোকজনের সাড়া মিলছে না বলে এ সব করছে বিজেপি।
সোমবার কোচবিহারের তুফানগঞ্জ স্টেশনে ঢোকার রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে বিজেপিকর্মীদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। বিকেল ৩টের সময় তুফানগঞ্জ থেকে বিশেষ ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু কর্মীরা যথা সময়ে পৌঁছতে পারেননি বলে ট্রেন ছাড়তে প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরি হয় বলেই বিজেপির দাবি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুফানগঞ্জ স্টেশনের বাইরে উত্তেজনা ছড়ায়।
ঘটনার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্টেশনে বিজেপিকর্মী-সমর্থকেরা মিছিল করেন। কোচবিহার জেলা বিজেপির সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘বিজেপিকর্মী-সমর্থকেরা যাতে নবান্ন অভিযানে যেতে না পারেন সেই কারণেই পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের আটকে দিচ্ছে। বর্তমানে পুলিশ তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে।’’
এই প্রসঙ্গে কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘যে হেতু বিজেপির নবান্ন অভিযানে সরকার অনুমতি দেয়নি, তাই ওই অভিযানে অংশ নিতে চাওয়াদের আমরা এখানে আটকেছি।’’
জলপাইগুড়ির মালবাজার স্টেশনে যাওয়ার পথে আটক করা হয় বিজেপি মালবাজার টাউন মণ্ডল সভাপতি নবীন সাহা-সহ শতাধিক বিজেপি কর্মী-সমর্থককে। তাঁদের টেনেহিঁচড়ে পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়েছে বলেও অভিযোগ। আলিপুরদুয়ার জংশন, কামাখ্যাগুড়ি, শামুকতলা থেকে ১৫০ জন বিজেপিকর্মীকে পুলিশ আটক করে বলে অভিযোগ। আলিপুরদুয়ার জংশনে বিশেষ ট্রেনে কর্মীদের উঠতে দেয়নি বলেও অভিযোগ। ওই ট্রেনে ৫০ জন বিজেপিকর্মী ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত তাঁদের নিয়ে রওনা দেয় ট্রেন। ধূপগুড়ি স্টেশনেও বিজেপিকর্মী-সমর্থকদের বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী। পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন পাহাড় থেকে নেমে আসা বিজেপির মহিলা কর্মী-সমর্থক ও দার্জিলিং জেলার বিজেপির সভাপতি আনন্দময় বর্মন।
এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারকে এক হাত নিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয়ে কলকাতা থেকে পালিয়ে গিয়েছেন। ট্রেনের দরজায় ব্যারিকেড করা হয়েছে, যা বেআইনি। রাজ্য সরকারের পুলিশ কেন্দ্রীয় সরকারের এালাকায় বিনা অনুমতিতে ঢুকতে পারে না। স্টেশন কেন্দ্রীয় সরকারের এলাকা। সেখানে গাজোয়ারি করছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।’’
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল পাল্টা বলেন, ‘‘বাধার কোনও প্রশ্নই নেই। ওই ক’টা লোক। অর্ধেক নিরাপত্তারক্ষী ওঁদেরই। যেখানে বিশৃঙ্খলা করেছেন, সাধারণ যাত্রীদের অসুবিধা করেছেন, সেখানে এলাকার প্রশাসন মনে করেছে বলে ব্যবস্থা নিয়েছে। তার সঙ্গে তাঁদের অভিযানের কী সম্পর্ক? ৭ সেপ্টেম্বর অভিযান ডেকেছিল বিজেপি। লোক হয়নি বলে পিছিয়ে দিয়েছে। বিজেপি নবান্ন অভিযানে লোকজনের সাড়া পাচ্ছে না। এখন এই ভাবে নাটক করছে।’’