রাফাল নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে জয় হয়েছে মোদী সরকারের, একই সঙ্গে এই রায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর পুরো বিপক্ষে গেছে। রায় প্রকাশের পরে বৃহস্পতিবারই বিজেপির নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ দাবি করেন, লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কদর্য ভাবে আক্রমণ করার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে রাহুল গান্ধীকে। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টুইট করে কার্যত একই কথা বলেন। রাহুল গান্ধীর ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে শুক্রবার দিল্লির কংগ্রেস অফিসে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।
রাফাল প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টকে ভুল ভাবে উদ্ধৃত করায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে সতর্ক করেছে সর্বোচ্চ আদালত। ভোটের আগে মিথ্যা বলা এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীকে বিঁধে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ বলে দেশজুড়ে স্লোগান তুলেছিল কংগ্রেস। তৎকালীন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীই এই স্লোগান তোলেন। সুপ্রিম কোর্ট এ ব্যাপারে নরেন্দ্র মোদীকে বেকসুর ঘোষণা করার পরেই রাহুল গান্ধীর ক্ষমা চাওয়ার দাবি করছে বিজেপি।
দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতরে শুক্রবার এই দাবিতে বিক্ষোভ করে বিজেপি, শনিবার একই দাবিতে তারা দেশজুড়ে বিক্ষোভ দেখাবে। দিল্লি বিজেপির প্রধান মনোজ তিওয়ারির নেতৃত্বেই মিছিল করে কংগ্রেসের সদর দফতরে যাচ্ছিল বিজেপি, যদিও পথেই তাদের আটকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। মনোজ তিওয়ারি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য কংগ্রেস ও তাদের দলীয় নেতারা রাফাল নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে তাদের মিথ্যা প্রকাশ হয়ে গেছে।” তিনি মনে করেন, কংগ্রেসের নেতাদের, বিশেষ করে রাহুল গান্ধীর ক্ষমা চাওয়া উচিত।
বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ভূপিন্দর যাদব বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কংগ্রেস ও তাদের দলের নেতাদের স্বরূপ প্রকাশ হয়ে গেছে। কংগ্রেস যে রাফাল নিয়ে নতুন করে তদন্ত দাবি করেছে, তাকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালত শুধু তাদের আবেদনই খারিজ করেনি, এ নিয়ে কোনও তদন্ত করার প্রয়োজন নেই বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছে।
যাদব বলেন, “রাহুল গান্ধীর অভিযোগ (রাফাল চুক্তি নিয়ে) যে মিথ্যা তা প্রমাণ হয়ে গেছে। আমাদের দলীয় কর্মীরা এ নিয়ে আগামী কালই দেশজুড়ে পথে নামবেন, জেলায় জেলায় তাঁরা বিক্ষোভ করবেন রাহুল গান্ধীর ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে।”
যাদব বলেন, “ওরা মিথ্যার বেসাতি করছে। প্রথমে সিএজি (কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল) রিপোর্ট এবং পরে সর্বোচ্চ আদালতের রায় দেখিয়ে দিল ওদের অভিযোগ কতটা ভিত্তিহীন।”
বফর্স মামলার প্রসঙ্গও অবধারিত ভাবেই উঠেছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তথা রাহুল গান্ধীর বাবা রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে বফর্স কামান কেনার সময় টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তখনও কংগ্রেসের বিরোধীদের প্রচারে রাজীব গান্ধীর ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছিল। স্লোগান উঠেছিল, “গলি গলিমে শোর হ্যায়, রাজীব গান্ধী চোর হ্যায়।” কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রমাণ করা যায়নি যে বফর্স থেকে টাকা নিয়েছিলেন রাজীব গান্ধী। এ প্রসঙ্গে বিজেপির বক্তব্য হল, বফর্স মামলাকে প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয় বলে মন্তব্য করেছিল দিল্লি হাইকোর্ট।