দীর্ঘ পঞ্চশ বছরের জমি জটিলতা কাটিয়ে ব্যক্তিগত রায়তি জমিতে পাথর তোলার অনুমতি দিল রাজ্য সরকার। কমপক্ষে এক একর জমি থাকলে সরকার পাথর তোলার ছাড়পত্র দেওয়া শুরু করল। যা বীরভূমের পাথর শিল্পাঞ্চল এলাকায় নয়া ইতিহাস বলে মনে করছেন অনেকে। ঘটনা হল, কংগ্রেস আমলে ১৯৭০ সালে জেলার পাথর শিল্পাঞ্চলের বেকারদের উদ্যোগপতি ও শ্রমিকদের হাতে কাজের জন্য বীরভূমের মহম্মদবাজারের পাঁচামি এলাকায় ব্লক বন্ঠন শুরু হয়।
তখন ৩০ একরে এক একটি করে পাথর ব্লক তৈরি করা হয়। পরবর্তী তা কমে ১৫ এবং ৭ একরে এসে দাঁড়ায়। কিন্তু ২০১৬ সালের ২৯ জুলাই পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র সহ আইনি জটিলতায় প্রায় সব খাদান বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সময় জেলায় ২০৭ টি খাদান ছিল। কিন্তু তার মধ্যে হাতে গোনা ৫ থেকে ৬ টি বাদে সব খাদান কাগজে কলমে বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু সমঝোতার মাধ্যমে প্রায় সব খাদান চলছিল। ডিসিআর জরিমানা নিয়ে সেই পাথর বিক্রি হত। সে নিয়েও নানান ধন্ধ ছিল।
অন্যদিকে, জেলা জুড়ে পাঁচামি, তালবাঁধ, শালবাদরা, রামপুরহাট, নলহাটি, মুরারই, রাজগ্রামের খাদান নিয়ে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়। কারণ জমির মালিকানা জটিলতায় বারেবারে তা আটকে যাচ্ছিল। মূল সমস্যা দাঁড়িয়েছিল ব্যক্তিগত রায়তি জমি থেকে কি করে সরকার পাথর তোলার অনুমতি দিতে পারে। দ্বিতীয় সমস্যা দাঁড়িয়েছিল, খাদান এলাকার বহু জমি আদিবাসীদের। তাঁদের সঙ্গে বন্দোবস্ত করে খাদান মালিকরা পাথর তুলছিলেন।
দীর্ঘ ৫০ বছরের সেই জটিলতা কাটিয়ে ব্যক্তিগত রায়তি জমিকে পাথর তোলার অনুমতি দিল রাজ্য সরকার। যাতে কমপক্ষে এক একর জমি থাকলে সরকার পাথর তোলার ছাড়পত্র দেওয়া শুরু করল। তাতে জেলা জুড়ে আজ পর্যন্ত ৭৫টি ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। সোমবার শুরু হল সরকারি খাস জমিতে পাথর তোলার দরপত্র গ্রহণ। যেখানে প্রথম পর্যায়ে ৩২ টি খাস জমিকে চিহ্নিত করে তা পাঁচ বছরের জন্য দীর্ঘমেয়াদি লিজ দেওয়া হবে। পাঁচামিতে ১২টি, নলহাটিতে দু’টি, রামপুরহাটে ৯টি মুরারইয়ে ৯টি খাদান পাথর তোলার জন্য দেওয়া হবে। সোমবার থেকে অনলাইনে সেই দরপত্র নেওয়া শুরু হল।