করোনার আবহে সংহারী রূপ ধারণ করেছে অসমের (Assam) দ্বিতীয় দফার বন্যা পরিস্থিতি। গত মে মাসের শেষের দিকে বছরের প্রথম ধাক্কা মানুষ সামাল দিতে পারেননি। এরই মধ্যে আবার ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছেন উজান থেকে শুরু করে মধ্য এবং নিম্ন অসমের ২৫টি জেলার ২,৪০৪টি গ্রামের ১৩,১৬,৯২৭ জন। বন্যা কবলিত জেলাগুলির মোট ৮৩,১৬৮.০৮ হেক্টর কৃষিজমি জলে প্লাবিত হয়েছে বলে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে।
এদিকে বন্যায় সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছেন নিম্ন অসমের বরপেটার মানুষ। এক বরপেটায়ই প্রায় ৩,০৪,৮৪১ জন মানুষ বন্যার কবলে পড়েছেন। একটি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এর মধ্যে গতকাল এবং বন্যার জলে তলিয়ে গিয়ে এক কিশোরী সহ মৃত্যু হয়েছে ছয় জনের। এ বছরের প্রথম বন্যা নিয়ে নিহতের সংখ্যা ২২ হয়েছে।
আসাম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএসডিএমএ) সূত্রে জানা গেছে, রবিবার ধেমাজির বিজয়পুর গ্রামের কিশোরী রশ্মি দেউরি (১২)-র মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া ওদালগুড়ি জেলায় এক, বরপেটার চেঙায় এক, ডিব্রুগড়ের টেঙাখাতে এক, একই জেলার মরানের এক এবং গোয়ালপাড়ার মাটিয়া এলাকার একজনকে নিয়ে মোট ছয়জনের অকালমৃত্যু হয়েছে এবারের বন্যায়।
প্রলয়ঙ্করী বন্যার কবলে পড়েছে রাজ্যের ২৫টি জেলা। এগুলি ধেমাজি, লখিমপুর, বিশ্বনাথ, ওদালগুড়ি, চিরাং, দরং, নলবাড়ি, বরপেটা, বঙাইগাঁও, কোকরাঝাড়, ধুবড়ি, দক্ষিণ শালমারা, গোয়ালপাড়া, কামরূপ (গ্রামীণ), কামরূপ মেট্রো, মরিগাঁও, হোজাই, নগাঁও, গোলাঘাট, যোরহাট, মাজুলি, শিবসাগর, ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়া এবং পশ্চিম কারবি আংলং জেলা। এই ২৫টি জেলার ২,৪০৪টি গ্রামের ১৩,১৬,৯২৭ জন মানুষ সরাসরি প্রভাবিত হয়েছেন।
এএসডিএমএ সূত্রটি আরও জানিয়েছে, ইতিমধ্যে ১৯টি জেলায় ২৭৩টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। ওই শিবিরগুলিতে ২৭,৪৫২ জন বন্যার্ত আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া ৭,৬৩,৭৬৪টি জীবজন্তু প্রভাবিত হয়েছে। ধেমাজি, বিশ্বনাথ, বরপেটা, বঙাইগাঁও, দক্ষিণ শালমারা, ডিব্রুগড় এবং মরিগাঁও জেলার বিভিন্ন স্থানে ৮৬টি নৌকা নিয়ে ১০,২০৭ জন এনডিআরএফ, এসডিআরএফ জওয়ান, স্থানীয় মানুষ এবং প্রশাসনের লোকজন ত্রাণ ও উদ্ধারে নেমেছেন।
2020-06-30