বিলগ্নিকরণ যে হবেই সেটা আরও স্পষ্ট হয়ে গেল। সরকারি উড়ান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়াকে তুলে দেওয়া হবে বেসরকারি হাতে, বুধবার রাজ্যসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে এমনটাই জানিয়েছেন অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী। মন্ত্রীর কথায়, এমনিতেই বিপুল ঋণের দায়ে ভুগছে এয়ার ইন্ডিয়া, কাজেই বেসরকারিকরণ না হলে পুরোপুরি ঝাঁপ ফেলে দিতে হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বিমান পরিবহণ সংস্থার।
রাজ্যসভায় বিরোধী পক্ষের তরফে অভিযোগ উঠেছিল সঠিক সময় বেতন পেয়ে সংস্থার প্রচুর বিমানচালক চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। সেই অভিযোগ খারিজ করে মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী জানিয়েছেন, চরম অর্থ সংকটের সময় বিমানচালক-সহ বিভিন্ন স্তরের কর্মীদের ২৫ শতাংশ বেতন আটকে রাখতে বাধ্য হয়েছিল সংস্থা। বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই সমস্ত কর্মীদের বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে এয়ার ইন্ডিয়া।
সরকারি উড়ান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৮ হাজার কোটি টাকা। সংস্থার ১০০ শতাংশ শেয়ার বেচে ফেলার জন্য প্রাথমিক উদ্যোগ নেওয়া হবে অক্টোবরের শেষে কিংবা নভেম্বরের গোড়ায়। নির্দিষ্ট সুত্রে খবর, নভেম্বরেই আগ্রহী ক্রেতাদের যোগাযোগ করতে বলা হবে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া কেনার আগ্রহ দেখিয়েছে। ই-বিডিং সিস্টেমের মাধ্যমে এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট আহ্বান করা হবে।
একসময় শোনা গিয়েছিল, ঋণে ডুবে থাকা এয়ার ইন্ডিয়া কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না কোনও ক্রেতা। ইন্ডিগো এবং জেট এয়ারওয়েজের মতো সংস্থা প্রথমে আগ্রহ দেখিয়েও পরে পিছিয়ে গিয়েছিল। এয়ার ইন্ডিয়ার বিপুল ঋণ তো আছেই, তার ওপরে এক দশকের বেশি সময় ধরে সংস্থাটি লোকসানে চলছে।
দীর্ঘ সাত মাস জ্বালানি এবং এভিয়েশন টার্বাইন ফুয়েল (এটিএফ)-এর খরচ মেটায়নি এয়ার ইন্ডিয়া। সেই টাকা মেটানো না পর্যন্ত তাদের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (আইওসি), ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসিএল) এবং হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম কর্প (এইচপিসিএল)-এর মতো সংস্থাগুলি। গত অক্টোবর থেকে বেতন পাচ্ছেন না কর্মীরা। এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সব কর্মীদের বেতন দিতে প্রতি মাসে ৩০০ কোটি টাকা করে দরকার বিমান সংস্থার। সেই টাকার জোগান এই মুহূর্তে তাদের কাছে নেই। এয়ার ইন্ডিয়ার ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকার আর্থিক সাহায্য করলেও বিশেষ কোনও লাভ হয়নি।