: পূর্ণিমা রাতে ঐ ছোটছুটি করে কারা!
দখিনা পবনে দোলে, বসন্ত এসে গেছে…
সেই বসন্ত এখন ভীষন দামী। ভীষণ দামী আমাদের বাঙ্গালীদের নিকট। আমাদের মেয়েদের নিকট। বসন্ত তাই এসে গেলেও আমাদের কানে কোকিলের কলতান নয় বরং বিষাক্ত বিকৃত মানুষের বিকৃত কিছু নারকীয় গান বাজে। সেই গানের বিষাক্ত নীলাভ শিরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পাপের মতো মিশেছে।
আজ বাসন্তিকার বসন্তে লেগেছে অশ্লীলতার বীভৎস দাগ। তাই পূর্ণিমা রাতে অশরীরী ভয়াল প্রেতের মতো কারা যেন ভর করে আমাদের বাঙ্গালী তথা প্রতিটি ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী উৎসবের শরীরে। কখনো মা দুর্গাকে অশ্লীলভাষা, কখনো দেবী লক্ষ্মীর স্থানে কোনো পশু বসিয়ে ,দেবী কালীর মূর্তি তত্ত্বের অশ্লীল ব্যাখ্যা করে, দেবী সরস্বতীকে কলুষিত করে, মহাদেবের পূজার অশ্লীল ব্যাখ্যা করে ভারতীয় তথা হিন্দু ঐতিহ্যকে নষ্ট করার বীভৎস প্রচেষ্টা চলেছে বছরের পর । কলুষিত হয়েছে নারী সম্মান বার বার। পুজো , দোল , দিওয়ালী পালন না করতে দেবার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে হাজারো ছুতো।
তারসঙ্গে বিগত বেশ কিছু বছর ধরে যুক্ত হয়েছে কবিগুরু, সুকান্ত, নজরুল এদের কবিতা, গানকে বিকৃত করার এক নোংরা সংস্কৃতি।
কিন্তু এর শুরুটা আজকে ছিলো না । বহুদিন আগে থেকেই একটু একটু করে এর ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরী করা হয়েছিলো । লিটমাস পেপার সমাজের ঢেউয়ে ডুবিয়ে টেস্টিং চলছিলো যে সভ্য, শিক্ষিত, তথাকথিত এগিয়ে থাকা মানুষ কতটা মানে আর কতটা এড়িয়ে যায় !
যখন মা সরস্বতীকে নগ্ন করে শিল্পের নাম দেয়া হলো, তখন কজন এসেছিলো প্রতিবাদ করতে ? যারা করেছিলো তাদের চাড্ডি নামে দাগিয়ে দেয়া হয়েছিলো ! মনে পরছে ?
যখন সেক্সি দূর্গা নাম দিয়ে চলচিত্র প্রদর্শন হলো, তখনও সবাই শিল্পের স্বাধীনতার দোহাই দিলো । বাকি যে দু’একজন প্রতিবাদ করতে গেছিলো, তারা হলো গোমূত্র-খোর !
যখন অজাতের বাচ্চা কুজাত কবি ত্রিশূলে কন্ডোম চড়ালো, তখন কে প্রতিবাদ করেছিলো ? কেন গর্জে ওঠেনি কোনো সুধী জনের কলম ? যে ক’জন মৃদু স্বরে আপত্তি জানিয়েছিলো, তারা হলো গিয়ে ভক্ত !
আজকে দেখুন আপনাকে কি সুন্দরভাবে হোলি আর দোলে বিভাজিত করার নিপুণ প্রচেষ্টা চলছে । বেশ খানিকটা সফলও ওরা । কারন হলো আপনি যতো দুর্বল হবেন, আপনাকে ভাঙ্গা, ভেঙ্গে একবারে গুঁড়িয়ে দেয়া ততটাই সহজ হবে । আপনিও ওমনি ভুলে গেলেন যে ছোট থেকেই আপনি পরপর তিনদিন ধরে ন্যাড়া পোড়া, দোল আর হোলি পালন করে এসেছেন । কারো কোথাও বিন্দুমাত্র অসুবিধা না করেই ।
রবীন্দ্রভারতীর বসন্ত উৎসবে কিছু #অতি_মুক্তমনা ছেলে এবং মেয়ে নিজেদের বুকে ও পিঠে কিছু অশ্লীল শব্দ লিখে, তার ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করে। তা নিয়ে সোসাল মিডিয়াতে ঝড় ওঠে, গতকাল তারা নাকি গ্রেপ্তার হয়।এবার কথা ওরা কি লিখেছিল?ওরা ওদের বুকে পিঠে আবির দিয়ে লিখেছিল, বাংলার কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে ক্রমান্বয়ে অপমান করে চলেছে যে লোকটা, আমাদের #বাংলার_গর্ব (অবশ্য বর্তমানে একজন স্বঘোষিত আছেন) রবীন্দ্রনাথ থেকে রাহুল দেব বর্মনের গানকে অশ্লীল ভাষা (বাংলাতে খিস্তি) দিয়ে গাওয়া একজন নেশাশক্ত লোক #রোদ্দুর_রায়-এর কিছূ গানের কলি।
বাংলার মনীষীদের বা তাদের সৃষ্টিকে অসম্মানিত করার শুরু কি এরাই করেছে?না, এর শুরু অনেক আগেই, বিপ্লব এবং নিজেদের মত প্রকাশের অধিকার এর নামে বাংলা তথা ভারতীয় সভ্যতাকে ক্রমান্বয়ে আক্রমণের মাধ্যমে। প্রসঙ্গত এরম ঘটনা গত বছর বিশ্বভারতীতেও ঘটে।
সম্প্রতি হয়ে যাওয়া বইমেলায় এই রোদ্দুর রায়ের বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিস্টদের যুব আইকন #শতরূপ_ঘোষ এবং স্বঘোষিত বাংলা ভাষার ঠিকাদার #বাংলাপক্ষের_গর্গ।আজ এই যুবক যুবতিরা তাদের অন্যায় বা অপকর্মের জন্য শাস্তি পায়। তাহলে তাদের যারা দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্রয় দিয়ে, ইন্ধন জুগিয়ে গেছে, তারা কেন শাস্তি পাবেনা?
বিপ্লবের নামে কখনো #মহিলাদের_অন্তর্বাস পরে বা #ন্যাপকিন নিয়ে বিপ্লব। কখনও #হোক_চুম্বন বলে সমলিঙ্গ বা বিপরীত লিঙ্গের সাথে প্রকাশ্য রাজপথে অন্তরঙ্গ হওয়া। হাতে #বা*_নরেন্দ্র লিখে পোস্টার নিয়ে প্রদর্শন। এইগুলো কি বাংলা তথা ভারতের সংস্কৃতি?