ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’র কোনও ‘চোখ’ থাকবে না। বৃহস্পতিবার রাতেই ওড়িশার উপকূলে তার ‘ল্যান্ডফল’ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যেতে পারে। তা চলবে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত। এর ফলে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার মৌসম ভবনের ডিজি মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, ‘চোখ’ না থাকলেও ‘ডেনা’ তাণ্ডব চালাবে উপকূলে। ভারী বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা থাকছে। ‘ল্যান্ডফলের’ পর ঘূর্ণিঝড় দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে বাঁক নেবে। তার পর ক্রমে তার শক্তিক্ষয় হবে।
‘প্রবল’ ঘূর্ণিঝড় রূপেই স্থলভাগে আছড়ে পড়বে ‘ডেনা’। মৌসম ভবন জানিয়েছে, এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে হাওয়ার গতি রয়েছে ঘণ্টায় ৯৫ থেকে ১০৫ কিলোমিটার। অর্থাৎ, সমুদ্রে ওই বেগে ঝড় বইছে। ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে হাওয়ার গতি ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার। যত সময় এগোবে, ঝড়ের তীব্রতা তত বাড়বে। উপকূলে এই ঝড়ের প্রভাবে হাওয়ার সর্বোচ্চ গতি হবে ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার, জানিয়েছে মৌসম ভবন।
কেন ‘চোখ’ থাকবে না ‘ডেনা’র? সমুদ্রের উপর থেকে ঘূর্ণিঝড় ঘুরতে ঘুরতে যখন স্থলভাগের দিকে এগোয়, তখন তার কেন্দ্রে একটি আপাত শান্ত অঞ্চল তৈরি হয়। সেখানে হাওয়ার বেগ তুলনামূলক কম থাকে। ‘ল্যান্ডফলের’ সময় ঝড়ের ওই কেন্দ্র যখন স্থলভাগে প্রবেশ করে, তখন ঘূর্ণিঝড়ের দাপট হয় সবচেয়ে বেশি। আবহবিদদের মতে, অনেক ক্ষেত্রেই ‘চোখ’ তৈরি হয় না ঘূর্ণিঝড়ের। এটি তার অবস্থান, গতিপথের উপর নির্ভর করে। ‘ডেনা’র ক্ষেত্রেও ‘চোখ’ থাকছে না।
ওড়িশার ভিতরকণিকা থেকে ধামারার মধ্যবর্তী স্থানে ‘ডেনা’র ‘ল্যান্ডফল’ হতে চলেছে। বৃহস্পতিবার বেশি রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত সেই প্রক্রিয়া চলতে পারে। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গেও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে পূর্ব মেদিনীপুরে। এ ছাড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে ঢেউয়ের উচ্চতা হতে পারে ৯ থেকে ১৪ ফুট পর্যন্ত। ওড়িশাতেও ঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি তুঙ্গে। উপকূল থেকে বহু মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পর্যটকদেরও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অন্যত্র।