আমাদের হাতের কাছেই মহাভারতের যুদ্ধের উদাহরন আছে। অসুবিধার সময় ‘রাম নাম ‘করতে হয়ে সেই কথা শিখেছি ঠাকুরমার কাছে। বড়ো হয়ে শিখেছি- “অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হয় ‘কুরুক্ষেত্রের প্রাঙ্গনে’।
যুদ্ধের প্রস্তুতি চলেছিলো অনেক বছর ধরে। কতো বছর??? কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময় যুধিষ্ঠিরের বয়ষ ৭৩, ভীম ৭২ এবং অর্জুন –শ্রী কৃষ্ণের বয়ষ ৭১। পান্ডবদের জন্মের আগে থেকেই ওদের রাজ্যচ্যুত করার পরিকল্পনা শুরু হয়েছিলো। মহারাজ পান্ডুকে বনে পাঠিয়ে ( বর্তমান উত্তরাখন্ডের পান্ডুকেশ্বর) ধৃতরাষ্ট্র আগেই রাজা হয়েছিলেন। বিদুরকে আদেশ দিয়ে কার্যত পান্ডুকে বনবাসে পাঠানো হয়েছিলো। সেখানেই পাচ ভাইয়ের জন্ম হয়।
সবই ঠিক ছিলো । গোল বাধলো কুন্তী পাচ ভাইকে নিয়ে হস্তিনাপুরে ফিরে আসার পর। কুন্তী রাজকন্যা ছিলেন। রাজনীতি তিনিও জানতেন। জানতেন তার তিন এবং মাদ্রীর দুই ছেলেকে রাজপ্রাসাদে রেখেই তিনি পান্ডুর প্রতি অবিচারের যোগ্য জবাব দেবেন।
হয়েওছিলো তাই। ১১ অক্ষৌইনী সৈন্য নিয়ে, তৎকালীন ভারতের প্রায় সমস্ত শক্তিশালী রাজাকে সঙ্গে পেয়েও শকুনি জিততে পারেনি। তাকে হারতে হয়েছিলো শ্রী কৃষ্ণের বুদ্ধির কাছে। দুর্য্যোধন ছিলো শকুনির হাতের পু্তুল। আসল যুদ্ধ করেছিলেন (রাজনৈতিক), খেলা খেলেছিলেন ধৃতরাষ্ট্র্র এবং শকুনি এক পক্ষে অন্য পক্ষে শ্রী কৃষ্ণ একা। যুধিষ্টির একবার জিজ্ঞাষা করেছিলেন “ ভ্রাতাশ্রী, আমরা মাত্র ৭ অক্ষৌহিনী ওরা ১১, কি করে আমরা পারবো?” শ্রীকৃষ্ণ বলেছিলেন, যুদ্ধ শুধু সংখ্যায় জেতা যায় না । যুদ্ধ জিততে লাগে বুদ্ধি”।
মদ্র রাজ শল্য ছিলেন পান্ডবদের মামা। সেই কালের একজন শক্তিশালী রাজা তো বটেই। তাছাড়া তিনি ছিলেন শ্রেষ্ট সারথী। শ্রীকৃষ্ণ জানতেন। যুদ্ধের দু বছর আগে শ্রী কৃষ্ণ শল্য কে বুঝিয়েছিলেন যে তাকে যোগ দিতে হবে কৌরব পক্ষে এবং কর্নের সারথী হয়ে তার রথের চাকা গর্তে ফেলতে হবে। ঠিক তাই করেছিলেন মদ্র রাজ শল্য। এই কাজ না করলে অর্জুন কর্নকে হারাতে পারতেন কি না সে বিষয়ে এমনকি শ্রী কৃষ্ণও নিঃ সন্দেহ ছিলেন না।
ব্যাক্তি গত ভাবে শ্রী কৃষ্ণ হারিয়েছিলেন তার ১৪ বছরের ভাগ্নে এবং শিষ্য অভিমন্যুকে। ক্ষয় ক্ষতি হয়েছিলো প্রচুর কিন্তু পাচ ভাইকে দিয়ে শুরু হয়েছিলো এক ধর্ম রাজ্য।
বিজেপির হার হয়েছে। তার জন্য দ্বায়ী রাজ্যের শীর্ষস্থানীয় তিন নেতা। তারা কেন্দ্রকে ভুল বুঝিয়েছেন। ১৫৭ জন প্রার্থী জিতবেন না জেনেও তাদের দাড় করানো হয়েছিলো। এটা একটা সাধারন বিষয় নয়। সুপরিকল্পিত গেম প্লান।
তাহলে আমরা এখন কি ওই যারা গ্রামে গঞ্জে , শহরে বিজেপি অফিস ভাঙ্গছে, ঘর বাড়ি জ্বালাচ্ছে, এবং তাই করে পটকা ফাটীয়ে পৈশাচিক উল্লাস করছে তাদের ভয়ে বিজেপি করা বা ‘বিজেপি করি’ বলা ছেড়ে দেবো????
পান্ডবেরা ১২ বছর বনে বনে ঘুরে ছিলেন, এক বছর বিরাট রাজার দাসত্ব করেছিলেন, দ্রোপদীকে বিরাট রাজের শ্যালক কীচক যৌন হেনস্থা করতে ছাড়েনি। কিন্তু ওরা হিম্মত হারে নি।
আমরা যারা বিজেপি করি, হিন্দুত্ব বাদের আদর্শে বিশ্বাস করি, মনে প্রানে হিন্দু, তারা এই ‘কাল যবন’ দের ভয়ে ভীত হতে পারি না। মাত্র কিছুদিন চুপ চাপ সহ্য করুন। জানি অনেক অসুবিধা হচ্ছে এবং হবে। কিন্তু খুব শীঘ্র আবার আমরা উঠে দাড়াব, ঘুরে দাড়াবো। এখন সেই প্রস্তুতির সময়। ৫ বছর ওরা ভুল করবে আমরা আবার এগিয়ে যাবো।
আমরা আর বংশীধারী শ্রী কৃষ্ণের সেবা করবো না। করবো শস্ত্র ধারী শ্রী কৃষ্ণের। জয় শ্রী কৃষ্ণ , জয় জয় শ্রী কৃষ্ণ, এই হবে আমাদের নতুন স্লোগান।
‘জয় শ্রী রাম’ এ ওদের ভয় হয় “জয় শ্রী কৃষ্ণে’ ওরা ত্রাসগ্রস্থ হবে। আকাশ বাতাস মথিত করে বলুন “জয় শ্রী কৃষ্ণ”। বাড়িতে বাড়িতে শ্রী কৃষ্ণের পুজা করুন। বাড়ির সামনে শ্রী কৃষ্ণের ছবি টানিয়ে রাখুন ( রাধাকৃষ্ণের নয়, অর্জুন শ্রী কৃষ্ণের)। গলায় শ্রী কৃষ্ণের ছবি সহ লকেট পরুন। ভয় পাবেন না। তিনি ছিলেন, আছেন, থাকবেন।
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ