নিজের হাতের অত্যাধুনিক ডিজিটাল ব্যান্ডের দিকে লক্ষ্য করলেন ডঃ জে বসু। রাত এগারোটা পঁচিশ।
নির্জন অবজার্ভেটরির ছাদে বসে পুরোনো দিনের কথাই ভাবছিলেন। বাংলাদেশের সাধারণ এক কমিউনিস্ট ছেলে আজ Roscosmos এবং CNSAর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এক মাল্টি মিলিয়ন সিক্রেট প্রজেক্টের হেড! এ যেন রূপকথা!!
কিন্তু তাঁর কর্মক্ষেত্রের কথাটা তিনি বলতেও পারেন না বাড়িতে। আসলে খুবই গোপনীয় এক প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত আছেন তিনি। এই অবজারভেটরির অবস্থানও তিনি এবং মাত্র কয়েকজন ছাড়া কেউ জানে না। অতি উন্নতমানের প্রযুক্তিতে সিকিওর্ড এই সাইটে একজনও বহিরাগত ঢুকতে পারবে না।
তাঁর কাজটা হলো মহাজাগতিক তরঙ্গ বিশ্লেষণ। এলিয়েন নিয়ে প্রতিটি দেশের সরকার যে গোপন গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন, সেই প্রজেক্টেরই অংশ তিনি।
অনেক কথাই ভাবছিলেন তিনি। মনে পড়ে, ছেলে গাঁজা চরস ছাড়া যাদবপুর ছেড়ে কোন এক প্রত্যন্ত জায়গায় পড়ে থাকবে; এই নিয়ে মায়ের চিন্তা ঘোচাতে কি কষ্টটাই না করতে হয়েছে!
হঠাৎ চিন্তার ঘোর কেটে গেল তাঁর। হাতের ব্যান্ডটায় একটা ম্যাসেজ ঢুকলো।
মুহুর্তের মধ্যেই জড়তা কাটিয়ে যেন লাফিয়ে উঠলেন জ্যোতি। তিনি যেন নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না! এই মেসেজের জন্যই তিনি গত পাঁচ পাঁচটি বছর একটাও মানুষের মুখ না দেখে এই নির্জন জায়গায় দিন কাটিয়েছেন। দ্রুতপায়ে এগিয়ে গেলেন কম্পিউটার রুমের দিকে। কমপিউটার রুমে AI নোভার যান্ত্রিক কণ্ঠে উচ্চারিত হলো “Congratulations! Dr Jyoti You did it. রেডিও ফ্রিকোয়েন্সিটা ParaJ3x নক্ষত্রমন্ডলীর চার নম্বর গ্রহ থেকে আসছে।”
উত্তেজিত ভাবে কম্পিউটারের সামনে বসে পড়লেন জ্যোতি। অবাক হওয়ার বোধহয় আরও কিছু বাকি ছিল। এই ফ্রিকোয়েন্সিতে যে বার্তাগুলো আসছে তা সাংকেতিক হলেও যেন ইচ্ছাকৃতভাবে পাঠানো হচ্ছে। যারা পাঠাচ্ছে তারা যে বিজ্ঞান গবেষণায় অত্যন্ত এগিয়ে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রায় পাঁচ মিনিট লাগলো দীর্ঘ সংকেতটি রেকর্ড করতে।
এরপর শুরু হলো ডিকোডিং। AI নোভোকে দায়িত্ব দিলেও কিছু নির্দেশ দিচ্ছিলেন তিনি। অত্যন্ত উদ্বিগ্নভাবে বসে যেন প্রতি মুহূর্তকেই দীর্ঘ বছর মনে হচ্ছিল।
অবশেষে ডিকোড করা গেল। কম্পিউটারের পাতায় লেখাটি দেখে থম মেরে বসে রইলেন জ্যোতি।
.
.
.
.
কম্পিউটারের পর্দায় শুদ্ধ বাংলায় ফুটে উঠেছে বিখ্যাত সেই চিরন্তন বাণী:
“#কমিউনিস্টরাশুয়োরেরবাচ্চা”
🤔🤔🤔
Arnab Kumar Das