“নমস্তে সদা বৎসলে মাতৃভূমেত্বয়া হিন্দুভূমে সুখং বর্ধিতোহহম্ ।মহামঙ্গলে পুণ্যভূমে ত্বদর্থে পতত্বেষ কায়ো নমস্তে নমস্তে ।।”
-হে স্নেহময়ী মাতৃভূমি তোমাকে নিরন্তর প্রণাম করি, হে হিন্দুভূমি, তোমার দ্বারা আমি সুখে প্রতিপালিত । হে মঙ্গলময়ী পুণ্যভূমি, তোমার জন্য এই শরীর পতিত হোক, তোমাকে বারম্বার প্রণাম করি।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) ভারতের একটি ডানপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদী, আধাসামরিক ও বেসরকারী স্বেচ্ছা-সেবক সংগঠন। আরএসএস সংঘ পরিবার নামে হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর একটি অংশ ১৯২৫ সালে নাগপুর-বাসী ডাক্তার কে. বি. হেডগেওয়ার একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রূপে আরএসএস প্রতিষ্ঠা করেন। উদ্দেশ্য ছিল ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা ও বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরোধিতা।
আরএসএস স্বেচ্ছাসেবকেরা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে অংশ নিয়ে ভারতের একটি অগ্রণী হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠনে পরিণত হয়। ১৯৯০-এর দশকের মধ্যে এই সংগঠন অসংখ্য স্কুল, দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও মতাদর্শ প্রচারের উদ্দেশ্যে ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে।আরএসএস স্বেচ্ছাসেবকরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজও করে থাকে। আরএসএস এক লক্ষেরও বেশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামোন্নয়ন, আদিবাসী উন্নয়ন, গ্রামীণ স্বনির্ভরতা, কৃষি কর্মসূচি পরিচালনা করে এবং কুষ্ঠ ও দুঃস্থ ছাত্রদের দেখাশোনা করে।
১৯২৫ সালে সংগঠন তৈরির পর থেকে যে পথে হাঁটা শুরু হয়েছিল। আজ ৯৫ বছর বাদেও সেই একই পথে হাঁটছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS)। গোটা বিশ্ব যখন করোনা আতঙ্কে কাঁপছে তখন প্রচারের আলো থেকে অনেক দূরত্ব বজায় রেখে চুপচাপ কাজ করে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ছড়িয়ে থাকা আরএসএসের স্বয়ংসেবকরা। তাঁদের কট্টর সমালোচকরা যখন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গোমূত্র ও গোবর খাওয়া মানুষগুলি কোথায় গেলে বলে কটাক্ষ করছেন! তখন সামর্থ্য অনুযায়ী লকডাউনের ফলে সমস্যায় পড়া প্রান্তিক মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন স্বয়ংসেবকরা।
করোনা (Corona) প্রতিরোধে সক্রিয় হল রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ বা আরএসএস (RSS) ৷ নাগপুরে সংস্থার শীর্ষ স্তরের পদাধিকারীদের বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ বার সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যের অধিবাসীদের কাছে মাস্ক, খাবারের প্যাকেট, সাবান বিলি করার কাজ শুরু করল আরএসএস (RSS) ৷ করোনা প্রতিরোধ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধির এই কাজের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা আরএসএস (RSS) -র ৭০,০০০ শাখা সংগঠন গুলির হাতে৷ প্রতিটি শাখার দায়িত্বে থাকা পদাধিকারীর কাছে এই মর্মে নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে বলে নয়াদিল্লিতে জানান আরএসএস (RSS) -র এক পদাধিকারী৷
মাস্ক, খাবারের প্যাকেট ও সাবান বিলি করার এই উদ্যোগের পাশাপাশি এ বার সঙ্ঘ পরিবারের সহযোগী সংগঠনগুলিও উদ্যোগী হচ্ছে করোনা (Corona) প্রতিরোধের লক্ষ্যে৷ এর অংশ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের বিভিন্ন শাখা সংগঠনগুলির সঙ্গে যুক্ত ৫০০০ চিকিৎসক এ বার সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দা বয়স্ক মানুষদের সঙ্গে নিজেরাই ফোনে যোগাযোগ করে জানতে চাইবেন তাদের হাল হকিকত৷ কোনও বয়স্ক ব্যক্তি অসুস্থ বোধ করলে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানোর দায়িত্বের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও করবেন এই চিকিৎসকরা৷ রাষ্ট্রীয় সেবা ভারতী, আরোগ্য ভারতী (Arogya Bharati) এবং ন্যাশনাল মেডিকো অর্গানাইজেশন (National Medico Organization) -এর নথিভুক্ত চিকিৎসকরাই এই দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিতে চলেছেন, জানা গিয়েছে আরএসএস সূত্রে৷