রামায়ণ মন্থন

‘রাম’। ভারতবর্ষের প্রভাতীর স্বর, আমাদের স্বম্ভাষণের স্বর, শেষ যাত্রার একমাত্র সম্বল। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এই ‘রাম’ নাম জড়িয়ে আমাদের জীবনের প্রতিটি স্তরে। কেউ রামায়ণকে ইতিহাস মনে করেন এবং সেক্ষেত্রে রাম আমাদের পূর্বপুরুষ, আমাদের পূজনীয়, আদরণীয় ও দিকদ্রষ্টা। আবার অনেকে রামের ঐতিহাসিক অস্তিত্ব স্বীকার করেন না এবং এ ক্ষেত্রে রামের গুরুত্ব আমাদের জীবনে কমে তো নাই, বরং আরো বাড়ে। কারণ তখন রামায়ণ কেবল একটি নির্দিষ্ট স্থান-কাল-নিমিত্তে আবদ্ধ থাকে না; তা হয়ে যায় সর্বকালে, সর্বক্ষেত্রে ও সর্ব প্রেক্ষিতে সমান প্রাসঙ্গিক। রামায়ণ কোনো ঐতিহাসিক কাহিনী নয়, কোনো কল্পকাহিনীও নয়, বরং তা হল ভারতাত্মার শাশ্বত আখ্যান। তাই ইতিহাসের বিতর্কে না গিয়ে আদিকবি বাল্মিকীর কলম প্রসূত এই আখ্যান মন্থন করে এর অমৃত লাভ করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত।

এই আখ্যান শ্রীরামচন্দ্রের, তিনি কোশল রাজ দশরথ ও তাঁর জ্যেষ্ঠা রানি কৌশল্যার সন্তান। অতি অল্প বয়সে রাক্ষসী তারকা এবং তাঁর পুত্র সুবাহুকে বধ করেন এবং তাঁর অপর পুত্র মারীচকে আর্যাবর্ত থেকে বিতাড়িত করে ঋষিগণের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন; তিনিই অহল্যার শাপমোচন করে এবং বিদেহ রাজ জনকের হরধনু ভঙ্গ করে নিজ পরাক্রম ও দিব্যতার পরিচয় দেন। তাঁর সাথে জনক কন্যা সীতার বিবাহ সম্পন্ন হয় এবং ভ্রাতৃপ্রেমের পরিচয় দিয়ে নিজ ভ্রাতা লক্ষ্মণের সঙ্গে জনক রাজের অপর কন্যা ঊর্মিলা, তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্রী মাণ্ডবী ও শ্রূতকীর্তির সঙ্গে যথাক্রমে ভরত ও শত্রুঘ্নের বিবাহ সম্পাদন করান। প্রজাদের মধ্যে তাঁর মান্যতা বৃদ্ধি পায় এবং তাঁর রাজ্যপ্রাপ্তি ছিল কেবল সময়ের অপেক্ষা। দশরথ রামের রাজ্যাভিষেকের ঘোষণা করেন এবং সারা রাজ্যে উৎসবের বহর লেগে যায়। কিন্তু বিধি বাম হয়ে দাঁড়ায়। তাঁর বিমাতা কৈকেয়ী দশরথকে তাঁর প্রতিজ্ঞা স্মরণ করিয়ে দুটি বর আদায় করেন—প্রথমতঃ তাঁর পুত্র ভরত রাজা হবেন এবং দ্বিতীয়তঃ রাম চোদ্দ বছরের জন্য বনবাসে যাবেন। রাজা এই কথা শুনে মূর্চ্ছিত হন। রামের কাছে খবর যায় এবং এই বরদুটি তাঁর কাছে পিতৃবাক্যের থেকেও অধিক ছিল রাজবাক্য। রাজা তথা রাজ্যের মর্যাদা রাখতে তিনি বনগমন করেন। তাঁর পত্নী সীতা সহগামিনী হন। স্ত্রী-পরিবার ত্যাগ করে লক্ষ্মণও রাম-সীতার সেবা করতে বনগমন করেন। পুত্রশোকে দশরথের মৃত্যু হয়। ভরত ছিলেন মাতুলালয়ে। সমস্ত খবর পেয়ে তিনি অযোধ্যায় আসেন, পিতার অন্ত্যেষ্টি কার্য সম্পাদন করেন এবং রামের নিকট গমন করে রাজ্যগ্ৰহণ করার অনুরোধ করেন। কিন্তু পিতৃশোকে কাতর হলেও রাম ধর্মচ্যূত হননি—রাজবাক্যের মর্যাদা রাখতে বনবাসই তিনি বরণ করেন এবং ভরতকে রাজ্যগ্ৰহণ করতে প্রেরিত করেন। প্রকৃতপক্ষে শাসক ও প্রজার সম্পর্ক নির্ভর করে শাসকের উপর প্রজার বিশ্বাসযোগ্যতার উপর। সেই বিশ্বাস রাখতেই রাম তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়টিতে সমস্ত ভোগ-বিলাস ত্যাগ করে বনবাস যাপন রাষ্ট্রের প্রতি ব্যক্তির দায়িত্বকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। একজন আদর্শ স্ত্রীর উদাহরণ আমরা পাই সীতার মধ্য দিয়ে, তিনি স্বামীর ধর্মকেই নিজের ধর্ম মেনে নিয়ে বনগমন করেন। লক্ষ্মণের স্ত্রী ঊর্মিলাও স্বামীর ভ্রাতৃধর্ম পালনের জন্য তাঁকে বনগমনের অনুমতি দিয়ে যথার্থ সহধর্মিণীর পরিচয় দেন। লক্ষ্মণ নিজের সর্বস্ব ভ্রাতৃসেবায় উৎসর্গ করে আদর্শ ভ্রাতার উদাহরণ প্রস্তুত করেছেন। ভরতও নির্লোভ চরিত্র, ধর্মবোধ ও ভ্রাতৃপ্রেমের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এখানেই মনে পড়ে বনগমনের পূর্বে লক্ষ্মণের নিজ মাতা সুমিত্রার কাছে আজ্ঞা নিতে যাওয়ার কথা। সুমিত্রার তাঁকে আশীর্বাদ করে বলেন,

“রামম্ দশরথম্ বিদ্ধি মাম্ বিদ্ধি জনকাত্মজা।

অযোধ্যামটভীং বিদ্ধি গচ্ছতাত যথা সুখম্। ”

অর্থাৎ, “রামকে দশরথ, সীতাকে আমি এবং বনকে অযোধ্যা মনে করে বৎস যেখানে খুশি যাও।” লক্ষ্মণ মায়ের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। আর এভাবেই এক আদর্শ পরিবার দর্শন উঠে আসে রামায়ণের মধ্য দিয়ে।

রাম কিন্তু বনে অলসভাবে বসে ছিলেন না। তিনি সর্বাধিক ভয়ঙ্কর বন পঞ্চবটীতে অবস্থান করেন এবং লক্ষ্মণের সঙ্গে রাক্ষস নিধন করে মুনিঋষিদের আতঙ্ক দূর করেন। কেটে যায় তেরোটি বৎসর। একদিন লঙ্কাপতি রাক্ষসরাজ রাবণের ভগ্নী সূর্পনখা রামকে দেখে মুগ্ধ হন এবং অতি মনোরম রূপ গ্ৰহণ করে রামের কাছে এসে নিজের পরিচয় দেন এবং রামকে বিবাহের প্রস্তাব দেন। রাম কিন্তু তাঁকে বিবাহ করে রাবণের সাথে বন্ধুত্ব করে নিজের শক্তিবৃদ্ধি করতে পারতেন। কিন্তু তাঁর ভাবনা ছিল বহু যুগ এগিয়ে। বহুবিবাহের মতো কুপ্রথা যে সমাজের এবং পরিবারের পক্ষে কতটা ক্ষতিকর তাই তিনি উপলব্ধি করেছিলেন। তাই এ প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। এতে সূর্পনখা ক্ষুব্ধ হয়ে সীতাকে আক্রমণ করলে লক্ষ্মণ ভুল করে তাঁর নাক কেটে ফেলেন। ফলে সূর্পনখা রাবণকে প্ররোচিত করেন এবং রাবণ সীতাকে হরণ করে আনেন। রাম লক্ষণের সাথে আহার-নিদ্রা ত্যাগ করে বনে বনে ঘুরে বেড়ান। পথে বানররাজ সুগ্ৰীবের সঙ্গে তাঁর দেখা হয় এবং সুগ্ৰীব সীতাহরণের বিষয়ে রামকে জানান। সুগ্ৰীব নিজের ভ্রাতা বালী কর্তৃক রাজ্যচ্যূত হন। তাই রাম বালিকে বধ করেন এবং রাজা হয়ে সুগ্ৰীব বানরদের সীতান্বেষণে প্রেরণ করেন। এদের মধ্যে হনুমান সমুদ্র পার করে লঙ্কায় প্রবেশ করেন এবং সীতাকে খুঁজে বের করেন। তিনি দেখেন সীতা কীভাবে রাবণের সকল প্রলোভন অস্বীকার করে অশোক বাটিকায় রাবণের বন্দিনী হয়ে কাটাচ্ছেন ও শ্রীরামচন্দ্রের কথা স্মরণ করছেন। হনুমান সীতাকে নিজের সঙ্গে যেতে বললে বীরাঙ্গনার মতো সীতা জবাব দেন লুকিয়ে নয়, সসম্মানে তিনি লঙ্কা ত্যাগ করবেন। হনুমান তাঁর পদধূলি নিয়ে ফিরে আসেন।

এরপর রাম বানর সেনা নিয়ে লঙ্কা আক্রমণ করে সবংশে রাবণ নিধন করেন। তবে রাবণের প্রতি তাঁর শত্রুভাব ছিল না। তাই রাবণের জ্ঞানকে সম্মান দিয়ে মৃত্যুশয্যাশায়ী রাবণের থেকে রাজনীতির শিক্ষা নেন তিনি। এটাই রামের স্বভাব—নিরপেক্ষ সম্মান প্রদর্শন। রামকে রাবণের ধর্মাত্মা ভ্রাতা বিভীষণ স্বর্ণলঙ্কার সিংহাসন গ্ৰহণ করতে বললে রাম সেই মহান বাণী শোনালেন যা যুগ যুগ ধরে রাষ্ট্রভক্তির জয়গান গেয়ে এসেছে—“জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী।” অবশেষে সেই সময় আসে যার জন্য এত সংগ্রাম—সীতার সাথে মিলন। কিন্তু রাম উপলব্ধি করেন তাঁর প্রজাদের মনের গহনে লুকিয়ে থাকা অন্ধকার। সীতা দশ মাস রাবণের বন্দিনী ছিলেন আর তাই প্রজারা তাঁকে রানি হিসেবে মানবে না। রাম প্রজাবৎসল, তাই প্রজাদের উপর জোর করে কিছু চাপাতে চান না, তাঁদের জন্য তিনি নিজের সর্বস্ব বলি দিতে রাজি। তিনি সীতাকে জানান যে, সীতা অযোধ্যায় ফিরতে পারবেন না। এতে সীতা অগ্নিকুণ্ডে প্রবেশ করেন। স্বয়ং অগ্নিদেব সীতাকে দগ্ধ করতে না পেরে স্বয়ং তাঁর পবিত্রতার সাক্ষী দেন। রাম সাদরে সীতাকে নিয়ে অযোধ্যায় ফেরেন। মহাসমারোহে রামের রাজ্যাভিষেক সম্পন্ন হয়। এখানে বাল্মিকী আদর্শ রাজ্যের চিত্র এঁকেছেন যেখানে মহামারী, অকালমৃত্যু, রাজ অত্যাচার, রাদকর্মচারীর উপদ্রব নেই; প্রজারা সমৃদ্ধ, মৈত্রীপরায়ণ, বিবাদহীন, রাজ্যের প্রতি সমর্পিত, স্বকার্যে নিপুণ, সৎ ও ধর্মপরায়ণ।

ক্রমে সময় যেতে থাকে এবং রাজপরিবার অপেক্ষা করতে থাকে রাম-সীতার সন্তানের জন্য। রামের জীবনে সুখের চূড়ান্ত মুহূর্ত। কিন্তু এমন সময় তিনি খবর পান সীতাকে নিয়ে প্রজাদের মধ্যে অসন্তোষের কথা। রাম অনুধাবন করেন প্রজারা তাঁদের সন্তানকেও মানবে না, আবার প্রজাদের অসন্তোষের মধ্যে তাঁর সন্তানের বিকাশও সঠিকভাবে হবে না। তাই সীতাকে তিনি নির্বাসনে পাঠান। বনের মধ্যে ঋষি বাল্মিকী সীতাকে দেখতে পান ও নিজ আশ্রমে নিয়ে আসেন। সেখানে জন্ম নেন রাম-সীতার যমজ পুত্র লব ও কুশ। এরপর রামের অশ্বমেধ যজ্ঞ, লব-কুশের অশ্ব আটক, রামের সৈন্যদের সাথে যুদ্ধ, বাল্মিকী মুনির মধ্যস্থতা, রামের যজ্ঞ সমাধান, লব-কুশের রামের সভায় রামায়ণ গান, আত্মপরিচয় প্রকাশ, প্রজাদের সংশয় দূর করতে দেবী সীতার পবিত্রতার নিদর্শন স্বরূপ এবং নারীর মর্যাদা রাখতে অযোধ্যার রাজভোগ ত্যাগ করে পাতাল প্রবেশ—এসব ঘটে যেতে থাকে। তবে রাম অন্য রাজাদের মতো দ্বিতীয়বার বিবাহ করেননি। সীতার প্রতি তাঁর কোনো সন্দেহ ছিল না, প্রজাদের উপর তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো রানিকে তিনি চাপিয়ে দিতে চাননি। সেই রাজতন্ত্রের যুগে রাম এত প্রজাপরায়ণ! আর আজ! সেকথা যাক।

এরপর রাম পিতা-মাতা উভয়ের স্নেহ দিয়ে পুত্রদের বড়ো করে তোলেন। ইতিমধ্যে শত্রুঘ্ন মথুরা ও বিদিশার রাজা লবণাসুরকে বধ করেন এবং রাম এই দুই রজ্যে শত্রুঘ্নকে অভিষিক্ত করেন যেখানে পরবর্তীতে যথাক্রমে শত্রুঘ্নের পুত্র সুবাহু ও শত্রুঘাতি রাজা হন। অপর দিকে ভারতের মাতুল কেকেয়রাজ যুধাজিতের শত্রু গন্ধর্বদের রামের আদেশে ভরত পরাস্ত করেন এবং রামের নির্দেশ মেনে তক্ষশিলা এবং পুস্কলাবতী নগর স্থাপন করে নিজ পুত্র তক্ষ ও পুস্কলকে অভিষিক্ত করেন। এরপর রাম কারুপথ ও মল্লদেশে মারীচ ও চন্দ্রকেতু – লক্ষ্মণের দুই পুত্রকে স্থাপিত করেন।

এরপর রাম বহুকাল রাজত্ব করেন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর একদিন কালপুরুষ ছদ্মবেশে রামের সাথে সাক্ষাৎ করতে আসেন। লক্ষ্মণকে প্রহরায় রেখে এবং তাঁদের বার্তালাপে বিঘ্নদানকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেবেন বলে কথা দেন রাম। এমন সময় আবির্ভাব ঘটে ঋষি দুর্বাসার এবং তিনি লক্ষ্মণের কাছে রামের সাক্ষাৎ প্রার্থনা করেন। লক্ষ্মণ আপত্তি করলে কুপিত দুর্বাসা অযোধ্যাকে ধ্বংস করতে উদ্যত হলে লক্ষ্মণ বাধ্য হয়েই রামের কক্ষে উপস্থিত হন। দুর্বাসা চলে গেলে লক্ষ্মণ রামকে রাজবাক্য স্মরণ করিয়ে দেন। রাম নিজ হস্তে লক্ষ্মণকে মৃত্যুদণ্ড দিতে অপারগ হওয়ায় লক্ষ্মণকে পরিত্যাগ করেন। রামের বিরহে লক্ষ্মণ যে নিজেই প্রাণত্যাগ করবেন তার বলাই বাহুল্য। এতে রাম ভ্রাতৃহত্যার দায় থেকে মুক্তি পান এবং রাজবাক্যও পালিত হয়। লক্ষ্মণ অতঃপর সরযূ নদীতে প্রাণত্যাগ করেন। এদিকে লক্ষ্মণকে ছাড়া রামের জীবন অসম্ভব। রামও লক্ষ্মণকে অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেন। ভারতের উপদেশে রাম লবকে উত্তর কোশলের শ্রাবস্তী ও কুশকে দক্ষিণ কোলের কুশাবতী নগরে অভিষিক্ত করেন। ভরত রামের সঙ্গ নেন, শত্রুঘ্নও পুত্রদের রাজ্য দিয়ে রামকে অনুসরণ করেন, সুগ্ৰীবও বালী পুত্র অঙ্গদকে কিস্কিন্ধ্যায় অভিষিক্ত করে দলবল নিয়ে রামের অনুসারী হন, অযোধ্যাবাসীও মহামন্ত্রী সুমন্ত্রের নেতৃত্বে রামকে অনুসরণ করেন। সকল আত্মীয় স্বজনকে নিয়ে রাম সরযূ নদীর জলে নিজের জীবন বিসর্জন দেন। ভাই-ভাই, রাজা-প্রজা, বন্ধু-বন্ধুর এমন সম্পর্ক আর কোথায়?

রামের জীবনগাথা এখানেই শেষ, তবে তাঁর জীবনধারা নিত্য বহমান। যুগ-যুগ ধরে বহু মানুষ এই ধারায় প্লাবিত হয়েছেন। যে মানুষ ধর্ম ও পুরুষার্থ নিয়ে বাঁচতে চান তাঁর মধ্যেই রাম জেগে ওঠেন। যে আদর্শ পরিবার, আদর্শ সমাজ, আদর্শ রাষ্ট্র ও সর্বোপরি আদর্শ মানুষের চিত্র মহামুনি বাল্মিকী এঁকেছেন বর্তমানে এই ক্ষয়িষ্ণু সমাজ, ক্ষয়িষ্ণু পরিবার ও ক্ষয়িষ্ণু মানবতাকে বাঁচাতে সেরকমই শক্তিশালী আদর্শের প্রয়োজন। রাষ্ট্রের প্রগতির জন্য দরকার রামের জীবন রথের , গোস্বামী তুলসীদাসজী সেই রথকে এভাবে বর্ণনা করেছেন—

“শৌরজ ধীরজ তেহি রথচাকা সত্যশীল দৃঢ় ধ্বজা-পতাকা।

বল-বিবেক-দম-পরহিত ঘোরে ছমা-কৃপা-সমতা রজু জোড়ে”।

অর্থাৎ শৌর্য, ধৈর্য্য সে রথের চাকা; সততা ও শীলতা অর্থাৎ আচরণ তার ধ্বজা; বল, বিবেক, ইন্দ্রিয় দমন ও পরহিতকারিতা তার ঘোড়াসমূহ এবং ক্ষমা, কৃপা ও সমতা হল তার রজ্জু।

সৌভিক দাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.