অনেক নেতাই জনগণকে এটা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে পর্যাপ্ত গবেষণা না করেই ভ্যাকসিন আনবার জন্য এই ভ্যাকসিন নিরাপদ নয়, অর্থাৎ সুকৌশলে জনগণের মধ্যে একটা অবিশ্বাসের বাতাবরণ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে ভ্যাকসিন নিতে কেউ আগ্রহী না হয় বা সন্দিহান হয়ে পড়ে।

যখন ডাক্তারদের ভ্যাক্সিনেশন শুরু হয়েছিল তখন অনেক ডাক্তারই ভ্যাকসিন নিতে চাননি। যখন ষাটোর্ধ্ব ভ্যাক্সিনেশন শুরু হয়েছিল তখনও অনেক সিনিয়র সিটিজেন ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহ দেখাননি। যখন 45 ঊর্ধ্ব নাগরিকদের ভ্যাক্সিনেশন শুরু হল তখনও অনেকেই ভ্যাকসিন নিতে চাননি। এমন অনেক ভোটকর্মীও দেখেছি যারা অতি সহজে ভ্যাকসিন পেলেও সে বিষয়ে আগ্রহ দেখাননি।

দেশজ দুটো ভ্যাকসিন আবিস্কার হবার পর থেকেই একশ্রেণীর সংবাদমাধ্যম, অনেক বুদ্ধিজীবী ক্রমাগত এক ধরনের প্রোপাগান্ডা চালিয়ে গেল যে পর্যাপ্ত গবেষণার আগেই নাকি ভ্যাকসিন বাজারে আনা হয়েছে, ভ্যাকসিন নিলে সমস্যা হতে পারে, ভ্যাকসিন কার্যকরী নয়। যখন ভ্যাক্সিনেশন কর্মসূচি শুরু হলো তার পরেও এই নিয়ে অনেক প্রোপাগান্ডা চলেছে। একদল ডাক্তার তো বেঁকেই বসলেন ভ্যাকসিন নেবেন না। অনেক নেতাই জনগণকে এটা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে পর্যাপ্ত গবেষণা না করেই ভ্যাকসিন আনবার জন্য এই ভ্যাকসিন নিরাপদ নয়। অর্থাৎ সুকৌশলে জনগণের মধ্যে একটা অবিশ্বাসের বাতাবরণ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে ভ্যাকসিন নিতে কেউ আগ্রহী না হয় বা সন্দিহান হয়ে পড়ে।

ফলস্বরূপ যখন ভ্যাক্সিনেশন শুরু হল তখন আমি নিজেই দেখলাম যে ভ্যাকসিন দেবার কেন্দ্রগুলিতে স্বাস্থ্যকর্মীরা ভ্যাকসিন নিয়ে বসে আছেন কিন্তু নেওয়ার লোক নেই। যে ভ্যাকসিনের জন্য আজকে সবাই হাহাকার করছে সেই সময় অনেক ভ্যাকসিন নষ্ট হয়েছে কারন একটা ভায়াল খুললে তাতে অন্তত কুড়ি জনকে ভ্যাক্সিনেশন করা যায়। কিন্তু দেখা গেছে 10 জন নেবার পর আর নেওয়ার লোক নেই অর্থাৎ দশটা ভ্যাকসিন নষ্ট হয়েছে। এমনও খবর আছে যে লোকের অভাবে বা সঠিক পরিচালনার অভাবে সঠিক সময়ে ডাটা এন্ট্রিও করা যায়নি।

এর ফলে যা এসে দাঁড়ালো তা হল
1)একটি জেলা শহরে প্রথম দফায় যে পরিমাণ ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছিল বাস্তবে সেই পরিমাণ ভ্যাকসিন লাগলো না। অর্থাৎ চাহিদা না থাকায় পরবর্তী সাপ্লাই এর কোন প্রয়োজন পরল না।
2) সঠিক কত ভ্যাক্সিনেশন হয়েছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ ডাটা এন্ট্রি না হবার জন্য ওপর থেকে এটাই বোঝা গেল যে নিচে জেলা কেন্দ্রে যে পরিমাণ ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে তা এখনো খরচ হয়নি, অর্থাৎ চাহিদা নেই।
3) ফলস্বরূপ যে কোম্পানিগুলো বিভিন্ন জেলা কেন্দ্রে ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছিল তারাও অতিরিক্ত ভ্যাকসিন উৎপাদন এবং তার সরবরাহের ব্যবস্থা করে উঠতে পারল না কারণ ইতিমধ্যে পাঠানো ভ্যাকসিন সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়নি।

এবার তাহলে ভালো করে উপলব্ধি করে দেখুন একজন নাগরিক হিসেবে আপনি কি সচেতন, দায়িত্বশীল এবং বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন? কিছু অপদার্থ লোকের কথা শুনে বিভ্রান্ত হয়ে সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন নেন নি। এই লোক গুলো সমাজ এবং রাষ্ট্রের শত্রু তো বটেই এবং জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করবার জন্য এদের শাস্তিও হওয়া উচিত। কিন্তু আপনিও সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন না নিয়ে নিজের নাগরিক দায়িত্ব পালন করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.