মোনালিসা দেবী সমস্ত শালীনতা শুধুমাত্র ওই একটি ভদ্রলোকের কথাবার্তার মধ্যেই প্রত্যাশা করেন কেন?
বিগত 10 বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মঞ্চে ভাষার যে নতুন কালচার বর্তমান শাসক শ্রেণী এনেছিল তার বিরুদ্ধে তথাকথিত শহুরে ভন্ড এলিট বা ফেমিনিস্টদের তো কোনদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যাজ নামাতে দেখিনি।
বামফ্রন্টের নেতা-নেতৃত্ব সিঙ্গুরের তাপসী মালিককে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে দেওয়ার পর তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।বামফ্রন্টের শ্যামল চক্রবর্তী বলেছিলেন “আমাদের মহিলা কর্মীরা বিরোধী আন্দোলন কর্মীদের পশ্চাৎদেশ দেখাবে”এগুলো বুঝি মহিলাদের প্রতি সম্মান ছিল?
বর্তমান শাসক দলের একাধিক নেতা নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন কিংবা স্মৃতি ইরানি কিংবা এমনকি প্রাক্তন বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ মারা যাবার পর যে ভাষা প্রয়োগ করেছিল তখনো কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভন্ড এলিটদের দল কোন প্রশ্নই করেনি।
কিন্তু দুইবারের সিটিং এমপি তথা রাজ্যের বিরোধী দলের নেতাকে কুকথা বলা,দাম্ভিকভাবে আমার কথা এখনো শেষ হয়নি বলে হেয় প্রতিপন্ন করা অথবা “আপনি কোথা থেকে ও কথা বলার কোর্স করেছেন” এইভাবে প্রশ্ন করার আড়ালে প্রত্যক্ষ অপমান করার সাহস কে দিয়েছে?
যে কৌশিক সেন রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতী প্রবেশদ্বার বর্তমান শাসক দলের কর্মীবৃন্দ ভেঙে দেওয়ার পর বীরভূমের মানুষের কাছে আবেদন করেছিল “প্লিজ আপনারা কোন আন্দোলন এখন করবেন না, আপনারা আন্দোলন করলে বিজেপি সুবিধা পেয়ে যাবে” তার কাছ থেকে সমকালীন বাঙালি সমাজ শিখবে প্রগতিশীলতা- শালীনতা??
অন্য কোন টিভি চ্যানেলে প্রোগ্রামের সঞ্চালক তৎক্ষণাৎ আপনার মতো প্রশ্নকর্তাকে থামিয়ে দিত যেখানে মোনালিসা দেবী আপনি আদৌ কোন প্রশ্নই করেননি বরং প্রত্যক্ষভাবে চোখগেঁয়ো অশিক্ষিত মানুষটাকে অপমান করতে গিয়েছিলেন।
এটা বাজারি পত্রিকার সাংবাদিক বলে এই প্রশ্নটা করতে দিয়েছে বা প্রশ্নকর্তাকে কিছু বলেনি সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রশ্নকর্তাকে তুলে নিয়ে যাবে।
তানিয়া ভরদ্বাজের নাম ভুলে গেলেন নাকি ?
তখন যে মহিলার মান-সম্মান নিয়ে আজ এত চিন্তিত তিনি তানিয়া ভরদ্বাজের কি করেছিলেন ভুলে গেলেন ?
নাকি পশ্চিম মেদিনীপুর এর প্রান্তিক চাষী শিলাদিত্যের কথা যে শস্যের ন্যূনতম মূল্য পাওয়ার জন্য নবান্নের মালকিনকে প্রশ্ন করলে জেল খাটতে হয়েছিল।
আপনার হয়তো জানা নেই বা জানা থাকলেও এটাই ভন্ড এলিটিজম যে নব্বইয়ের দশকে 56 বছর বয়সী অনিতা দেওয়ান কে কলকাতার উপকণ্ঠে বানতলায় সিপিএমের ক্যাডাররা ধর্ষণ করে যৌনাঙ্গে কাচের বোতল ঢুকিয়ে দিয়েছিল কিন্তু তার জন্য জ্যোতি বসুকে কেউ পটেনশিয়াল রেপিস্ট বলেছিল ?উল্টে জ্যোতি বসু তো ওনার ক্যাডারদের বাঁচাতে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়েছিলেন “এরাম ঘটনা তো কত কিছুই হয়”
অথচ উত্তরপ্রদেশে কোথাও যদি ধর্ষণ হয় সে ক্ষেত্রে কসবার সিপিআইএম প্রার্থী লাইভ টিভিতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কে “পটেনশিয়াল রেপিস্ট” বলবে এটাই বামপন্থীদের এলিটিজম যেটা ওরা নিজেদের জন্মগত অধিকার মনে করে।
সময়, সমাজব্যবস্থা, মানুষের চিন্তন সবই পাল্টাচ্ছে।
এই ধরনের এলিটিজম মানসিকতা আগামী দিনে বঙ্গীয় সমাজে থাকবে না এবং যারা এই মানসিকতা রাখবে তাদের অসুবিধা আছে।
আদৌ কি মনে করেন আপনি এবং এবিপি আনন্দের সামনের সারিতে ওইযে দু’তিনজন মহিলা বসে রয়েছেন তারা পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলের সাড়ে চার কোটি মহিলাকে রিপ্রেজেন্ট করেন?
প্রদীপ পাল।
Collected