কাল সন্ধ্যার একটা ঘটনা। নির্জলা সত্যি। – পাকুড় আসছিলাম। গাড়ীতে বোলপুর এসে ট্রেন ধরেছি। চেয়ার কারে লাইনের পাশের চারটি আসন একটি গ্রুপের। দলনেতা বছর পঞ্চাশের, বাকি তিনজন পঁয়ত্রিশ থেকে চল্লিশের মধ্যে। আমার পাশের জন মোবাইলে সোৎসাহে কবীর শুয়োরের বক্তব্য শুনছে। একজন আবার বলল,- দেখেছিস, দিলীপ ঘোষ বলেছে , এলাকায় এলাকায় শীতলকুচি হবে !
ওরা সমস্বরে বলল,- ছিঃ ছিঃ ।
পাশেরজনের আঙুলে কালির দাগ। তবু জিগ্যেস করলাম, – আপনাদের ভোট হয়ে গিয়েছে ?
- হ্যাঁ, আমাদের যাদবপুর।
আরেকজন বলল,- হ্যাঁ, আমরা ভোটের কাজ টাজ করে পুজো দিতে যাচ্ছি। রামপুরহাটে নেমে তারাপীঠ। - কে জিতবে ওখানে ?
- কে আবার? আমরাই ! সুজন তো এলাকায় আসেই না ।
বুঝলাম তিনুরা চলেছে পাপ স্খালন করতে। তার সঙ্গে ফুর্তিও। ( সকল প্রকার ম’কারের আলোচনাই হচ্ছিল চাপা গলায়।)
আমায় জিগ্যেস করল ,- আপনার ভোট ? - আমি দুর্গাপুরের। আমার ভোট ছাব্বিশে।
- ওখানে কে দাঁড়িয়েছে ?
- খেয়াল করিনি ভাই । জানার দরকারও নেই ।
- হ্যা হ্যা হ্যা ! ভোটটা তো দিদির! কি , তাই তো ?
আমি আস্তে আস্তে বললাম, – গত দুটো বিধানসভায় তাই তো দিয়েছিলাম, কিন্তু … - কিন্তু ?
- হ্যাঁ, গত সাত বছর আমি কর্মসূত্রে মুর্শিদাবাদ- বহরমপুর করে বেড়িয়েছি। আপনারা যাদবপুরে থাকেন, আপনাদের অস্তিত্ব কতটা বিপন্ন, এখনো জানেন না বোধহয় । আমি জেনেশুনে নিজের পায়ে কুড়ুল মারবনা। দিদি বলুন বা পিসি, তার শেষ দেখাটা আমার প্রায়োরিটি ।
ওরা সবাই চুপ করে গেল।
রামপুরহাটে নামার সময় একজন বলল,- আসি কাকু।
আমি বললাম, – শুভেচ্ছা রইল। আসুন। আশা করি ভবিষ্যতেও এইভাবে পুজো দেওয়ার অধিকার থাকবে আপনাদের।
ওদের শুভেচ্ছা জানানোর ছলে নিজের জন্যেও একটা আশীর্বাদ চেয়ে নিলাম , এই আর কি ! - BK Gupta