একজন হিন্দু বাঙালির কাছে এমন শ্রদ্ধার আধার বোধ করি খুব কমই আছে

সকাল থেকেই এই বিতর্কটা দানা বাঁধছে বলে অবশেষে বলতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ বিষয়― স্বামীজী। একজন হিন্দু বাঙালির কাছে এমন শ্রদ্ধার আধার বোধ করি খুব কমই আছে। স্বামীজী কি বলেছেন সেই প্রসঙ্গে পরে আসছি। তার আগে জিজ্ঞেস করি, বামেদের কেন মনে হচ্ছে স্বামীজী এমন বলতে পারেন না? যতদূর জানি কমিউনিস্টরা কখনোই স্বামীজীর প্রশংসক ছিলেন না। বরং উল্টো। তবে আজ কেন? সাত শতাংশে এসে অন্তিমে প্রায়শ্চিত্ত না জাতীয়তাবাদী দলের হুড়কো, কি হিসেবে দেখা উচিত? যাই হোক, গাধা জল খায় তবে ঘুলিয়ে খায়। কিন্তু গাধার জন্য তো জলের ধর্ম বদলে যাবে না। জল যেমন,তাকে তেমন ভাবেই গ্রহণ করতে হবে। আর আমরা তো এক মহাসমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।

স্বামী বিবেকানন্দের সাক্ষাৎকার

স্থান- বেলুড় মঠ
সময়:- নির্মাণ কাল, ১৮৯৮
প্রসঙ্গ ‘বৃন্দাবনলীলা’

স্বামীজি — দেশে শ্রীরামচন্দ্র ও মহাবীরের পূজা চালিয়ে দে দিকি । বৃন্দাবনলীলা-ফীলা এখন রেখে দে গীতা-সিংহনাদকার শ্রীকৃষ্ণের পূজা চালা, শক্তিপূজা চালা ।

শিষ্য — কেন, বৃন্দাবনলীলা মন্দ কি?

স্বামীজি — এখন শ্রীকৃষ্ণের ঐরূপ পূজায় তোদের দেশে ফল হবে না। বাঁশী বাজিয়ে এখন আর দেশের কল্যাণ হবে না। এখন চাই মহাত্যাগ, মহানিষ্ঠা, মহাধৈর্য্য এবং স্বার্থগন্ধশূন্য শুদ্ধবুদ্ধি সহায়ে মহা উদ্যম প্রকাশ করে সকল বিষয় ঠিক ঠিক জানবার জন্য উঠে পড়ে লাগা ।

শিষ্য — মহাশয়, তবে আপনার মতে বৃন্দাবন-লীলা কি সত্য নহে?

স্বামীজি — তা কে বলছে? ঐ লীলার ঠিক ঠিক ধারণা ও উপলব্ধি করতে বড় উচ্চ সাধনার প্রয়োজন। এই ঘোর কাম-কাঞ্চনাসক্তি র সময় ঐ লীলার উচ্চভাব কেউ ধারণা করতে পারবে না।

শিষ্য — মহাশয়, তবে কি আপনি বলতে চাহেন, যাহারা মধুর সখ্যাদি ভাব অবলম্বনে এখন সাধনা করিতেছে, তাহারা কেহই ঠিক পথে যাইতেছে না?

স্বামীজি — আমার তো বোধ হয় তাই । বিশেষতঃ আবার যারা মধুরভাবের সাধক ব’লে পরিচয় দেয় তারা। তবে দু-একটি ঠিক ঠিক লোক থাকলেও থাকতে পারে। বাকি সব জানবি ঘোর তমোভাবাপন্ন- full of morbidity (মানসিকদুর্বলতা-সমাচ্ছন্ন)! তাই বলছি, দেশটাকে এখন তুলতে হলে মহাবীরের পূজা চালাতে হবে, শক্তিপূজা চালাতে হবে, শ্রীরামচন্দ্রের পূজা ঘরে ঘরে করতে হবে। তবে তোদের এবং দেশের কল্যাণ। নতুবা উপায় নেই।

( উৎস – স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা, নবম খণ্ড, প্রকাশক উদ্বোধন কার্যালয়, কলকাতা)

স্ক্রিনশট না চাইলেই খুশি হবো। তবুও বলি পূর্ণাঙ্গ সংস্করণে 1912 পৃষ্টার আশেপাশে পাবেন। নিজেরা পড়া অভ্যেস করুন। পড়াশোনা না করলে পশ্চিমবঙ্গের বাম বুদ্ধিজীবী হয়ে যাবেন। “এটা স্বামী বিবেকানন্দ কোথায় বলেছেন ভাই/দাদা/কাকু” এইভাবে অসীম মূর্খতার পরিচয় দিতে নিজেরই লজ্জা হবে। আপনি আর যাই হোন, কমেডি শোয়ের সর্ব লজ্জাত্যাগী জাজ তো নন।

কার্টসি: আমাগো একখান দ্যাশ আসিলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.