ভারতে করোনা ভ্যাকসিন (corona vaccine) দেওয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই অনেকেই ভ্যাকসিন নিয়ে নিয়েছেন, অনেকে এখনও অবধি ভ্যাকসিন নিয়ে উঠতে পারেননি। এদেশে মূলত অক্সফোর্ড – অ্যাস্ট্রাজেনেকা (Oxford Astrazeneca) নির্মিত কোভিশিল্ড (Covisheild) ও ভারত বায়োটেক (Bharat biotech) নির্মিত কোভ্যাকসিন (Covaxin) দেওয়া হচ্ছে। এই দুটোর মধ্যে কোভিশিল্ড নেওয়ার ক্ষেত্রে মানুষের আগ্রহ বেশি লক্ষণীয়। কিন্তু শুরুর সময় থেকেই কোভিশিল্ড নিয়ে দানা বেঁধেছে নানা বিতর্ক। তবে ভারতের পাশাপাশি বিশ্বের বহু দেশে দেওয়া হচ্ছে কোভিশিল্ড। আবার অদ্ভুতভাবে বেশ কিছু দেশে ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন নিষিদ্ধ।
কারণ অনেকের মতে এই ভ্যাকসিন ব্যবহার করার ফলে রক্ত জমাট বাঁধা ও অন্যান্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার দেখা দিতে পারে। তাই বিভিন্ন দেশ এই ভ্যাকসিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সর্বমোট ১৮ টি দেশ কোভিশিল্ডকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। সবার প্রথম এই পদক্ষেপ গ্রহণ করে ইউরোপের দেশ ডেনমার্ক (Denmark)। এছাড়াও অস্ট্রিয়া (Austria), নরওয়ে (Norway), আইসল্যান্ড (Iceland), বুলগেরিয়া (Bulgaria), নেদারল্যান্ড (Netherlands), ফ্রান্স (France), জার্মানি (Germany), ইতালি (Italy), স্পেন (Spain), সুইডেন (Sweden) এবং থাইল্যান্ড (Thailand) এ নিষিদ্ধ কোভিশিল্ড। কানাডার (Canada) বিভিন্ন জায়গাতেও কোভিশিল্ড ব্যবহার নিয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আমেরিকা (America) জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোভিশিল্ডকে তালিকা ভুক্ত করেনি।
বেশিরভাগ দেশে যেখানে কোভিশিল্ড ব্যবহারে অনুমতি মেলেনি কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে যে কোভিশিল্ড ব্যবহার করার রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা ও থ্রমবটিক কার্যকলাপে সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে। রক্ত পরিবহনকারী শিরা উপশিরায় রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার খবর ও সামনে এসেছে। বেশ কিছু দেশে প্রাথমিক ভাবে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের কোভিশিল্ড দেওয়ার অনুমতি ছিলনা কারণ ওই বয়সে রক্তে প্লেটলেট এর সংখ্যা কমে যায় । এর পর বেশ কিছু মৃত্যুর খবর সামনে আশায় নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধি করা হয়।
কিন্তু পরবর্তী কালে লক্ষ করা গেছে যে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নেওয়া পর রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা সকলের মধ্যে ঘটেনি। এটি ভ্যাকসিনের একটি বিরল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রূপেই চিহ্নিত হয়েছে। ভারতে জানুয়ারি মাস থেকে ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই কোভিশিল্ড প্রধান ভ্যাকসিন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়ার পর খুবই অল্প সংখ্যক বিপরীত প্রতিক্রিয়ার খবর সামনে এসেছে । প্রত্যেক ১০ লক্ষ ডোজ এর মধ্যে মাত্রায় ০.৬১ টি রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা সামনে এসেছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এর মতে কোভিশিল্ড (Covishield) ভ্যাকসিনের রক্ত জমাট বাঁধার তুলনায় অনেক আরও ভালো গুণাগুণ রয়েছে।