পেট্রল ও ডিজেলের সেঞ্চুরির মুখেই ফের বড় ধাক্কা গেরস্থের হেঁশেলে। ফেব্রুয়ারি মাসে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার দাম বাড়ল রান্নার গ্যাসের (Gas)। সংবাদসংস্থা এএনআই (ANI) জানিয়েছে, রবিবার এক লাফে সিলিন্ডার (১৪.২ কেজি) পিছু দাম বাড়ানো হল ৫০ টাকা করে। রাত বারোটা থেকেই কার্যকর হয় এই নয়া দাম। ফলে নয়াদিল্লিতে সিলিন্ডারের দাম বেড়ে হল ৭৬৯ টাকা। কলকাতায় তা বেড়ে হল ৭৯৫.৫০ টাকা।
এর আগে কলকাতায় সিলিন্ডারের দাম ছিল ৭৪৫ টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি এই দামবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেহেতু পেট্রল ও ডিজেলের দাম গত কয়েক দিন ধরে লাফিয়ে বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়েই বাড়ল রান্নার গ্যাসের দাম। কারণ রান্নার গ্যাস (LPG) তৈরি হয় অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম থেকেই। এদিকে, জ্বালানির দাম এভাবে লাগাতার বাড়তে থাকায় নাভিশ্বাস উঠেছে আমজনতার। একে করোনার জেরে বেহাল দশা অর্থনীতির, রুটি-রুজি হারিয়ে বহু মানুষ বেকার। সেখানে রান্নার গ্যাসের দাম ৮০০ ছুঁইছুঁই হয়ে যাওয়াটা মরার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতোই। ইতিমধ্যেই বিজেপি বিরোধী দলগুলি এই জ্বালানির দামবৃদ্ধি ইস্যুকে সামনে রেখে আন্দোলন শুরু করেছে। এবার সেই আন্দোলনের ঝাঁজ আরও বাড়বে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা।
ইতিমধ্যেই কলকাতায় পেট্রলের দাম ৯০ টাকা ছাড়িয়েছে। যা সর্বকালীন রেকর্ড। পরিস্থিতি এমন, অনেকেই বাইক বাড়িতে রেখে সাইকেলে চড়া শুরু করেছেন। মফস্বল তো বটেই কলকাতায়ও এক চিত্র। লকডাউনের সময় থেকেই করোনা সংক্রমণ এড়াতে সাইকেল চালানোর প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়েছে মানুষের। আর এখন তেলের দামের এই ঊর্ধ্বমুখিনতায় সাইকেলের চাহিদা আরও বাড়ছে। পেট্রোল পাম্প মালিকরাও বলছেন, আগে যে পরিমাণ বাইক রোজ তেল ভরতে আসত সেই সংখ্যা প্রায় পঁচিশ শতাংশ কমে গিয়েছে। কিন্তু যাঁরা ভরছেন, তাঁরাও যে বেশি টাকার তেল ভরছেন তেমন নয়, আগে দু’শো টাকার তেল ভরলে এখন দু’শোরই ভরছেন। ফলে তেলের বিক্রি কমছে। কলকাতা সাইকেল সমাজের তরফে আবার জানানো হয়েছে, গত এক বছরে কলকাতায় প্রায় দ্বিগুণ মানুষ সাইকেল চালানো ধরেছেন। শহরতলিতেও তাই।
পাম্প মালিকরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন গাড়িতে তেল ভরার লোকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে। কমছে আম আদমির বাইক এবং গাড়ির ট্যাঙ্কে তেল ভরার পরিমাণও। আর তাতেই তাঁরাও সিঁদুরে মেঘ দেখছেন।