ক্রমশ খারাপ হচ্ছে চিনের করোনা পরিস্থিতি, ঢেউ আছড়ে পড়বে ভারতেও? বোঝা হবে মাস দেড়েকে

দেশে করোনার সংক্রমণ আপাতত নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আগামী এক থেকে দেড় মাস ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বলে জানাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, চিনের করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। পূর্ব এশিয়ায় যখনই করোনার সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তার ঢেউ ভারতে আছড়ে পড়তে এক মাসের কাছাকাছি সময় লেগেছে। সুতরাং আগামী এক-দেড় মাসেই স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, এ দেশে করোনার চতুর্থ কোনও ঢেউ আসবে কি না।

কড়াকড়ি উঠে যাওয়ার পরে কলকাতা-সহ দেশের বিভিন্ন শহরে মাস্ক কেউ প্রায় পরছেনই না। এ দিকে চিন-সহ বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পরে বিদেশ থেকে আগতদের নিয়ে চিন্তা বেড়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। এঁদের অনেকেরই করোনা ধরা পড়ছে। আজও চেন্নাই বিমানবন্দরে দুবাই-ফেরত দু’জন পজ়িটিভ হয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, গত ২৪ থেকে ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ‘র‌্যান্ডম’ বা হঠাৎ করা পরীক্ষায় বিদেশ থেকে ভারতে আসা প্রায় ছ’হাজার জনের মধ্যে ৩৯ জন কোভিড পজ়িটিভ হয়েছেন। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়ানোর কথাও ভাবছে কেন্দ্র। আজ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকের পরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া অবশ্য দাবি করেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। করোনার সঙ্গে লড়ার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো রয়েছে দেশে। সংক্রমণ ঠেকাতে তৎপর রয়েছে কেন্দ্র।

এ কথা ঠিক যে, ভারতে নতুন করে কোভিড রোগী বেড়ে যাওয়ার খবর সে ভাবে পাওয়া যায়নি কোনও রাজ্য থেকেই। অর্থনীতির কথা ভেবে লকডাউনের প্রশ্নও উড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। এমনকি মাস্ক বাধ্যতামূলক করার কথাও এখনই ভাবা হচ্ছে না। করোনা রুখতে জোর দেওয়া হয়েছে সচেতনতার উপরে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী যখন গত সপ্তাহে সংসদে বিবৃতি দিয়েছিলেন, তখন দেশে দৈনিক সংক্রমণ ছিল দেড়শোর ঘরে। আজ তা বেড়ে হয়েছে ১৮৮। ফলে অল্প হলেও রোগী কিন্তু বেড়েছে। এই আবহেই আগামী এক থেকে দেড় মাস ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সংক্রমণ ও টিকাকরণের ফলে এ দেশের অধিকাংশ মানুষের শরীরে যে হেতু ‘মিশ্র’ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে, তাই করোনার নতুন ঢেউ এলেও এ বারের ভাইরাস অতীতের ডেল্টা প্রজাতির মতো ঘাতক হবে না। আমজনতা সংক্রমিত হলেও মূলত বাড়িতে থেকেই সুস্থ হয়ে যাবেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কিংবা মৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে পারে অনেক কম। তা সত্ত্বেও বুস্টার নেওয়া, হাত ধোয়া, ভিড়ে মাস্ক ব্যবহারের মতো সতর্কতার কোনও বিকল্প এখনও নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.