একসময় মহাজোটের পথে নকশালদেরও আসন ছাড়তে রাজি হয় সিপিএম -22 জন সৈন্য নকশালদের সাথে লড়াইয়ে বীরগতি পেয়েছেন তাঁদের কথা মাথায় রেখে এই বিধান সভায় একটি ভোটও খুনী সিপিএম বা কমিউনিস্টজোটদের নয়

ছত্তিশগড় থেকে আগত খবরটি দুঃখজনক, 22 জন সৈন্য নকশালদের সাথে লড়াইয়ে বীরগতি পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
রমন সিংয়ের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ছত্তিশগড়ে নকশালদের তৎপরতা খুব দ্রুত বেড়েছে। এই বর্তমান ঘটনাটি একটি সতর্কবার্তা এবং জল মাথার উপরে যাওয়ার প্রমাণ।
এরপরে অবশ্যয় নকশালদের সাথে উচ্চতর যুদ্ধ প্রযুক্তি এবং আক্রমণাত্মক কৌশল দ্বারা মোকাবেলা করা হবে।

তবে জনগণকে অবশ্যয় বিবেচনা করতে হবে যে কংগ্রেস সরকারগুলি অস্তিত্ব আসার সাথে সাথেই কী কারণে: –
🚫খালিস্তান আন্দোলন পাঞ্জাবে সক্রিয় হয়ে যায়…

🚫মহারাষ্ট্রে লুটমার, সাধুদের নৃশংস হত্যা, নৌসৈন্যদের অপহরণ করে নৃশংস হত্যা, পুলিশের মতো প্রতিষ্ঠানগুলিও শিল্পপতিদের লক্ষ্য করে বোমা লাগাতে শুরু করে….

🚫ছত্তিশগড়ে, নকশাল আন্দোলন, যা শেষের দিকে পৌঁচেছিল তা আবার উঠে দাঁড়িয়ে সশস্ত্র বাহিনীর ছেলেদের হত্যা শুরু করে…..

এগুলি ছাড়াও যদি আপনারা ভাল করে লক্ষ্য করেন তবে দেখবেন যে করোনায় আক্রান্ত বেশিরভাগ রাজ্য সেগুলি যেখানে কংগ্রেস শাসন করছে….

এই সব কাকতালীয় হতে পারে না ……

লাতেহার। ঝাড়খন্ডের পাহাড় এবং জঙ্গল অধ্যুষিত একটি জেলা। ভারতের অন্যতম অর্থনৈতিতভাবে অনগ্রসর জেলাগুলোর লিস্টে লাতেহারের নাম ওপরের দিকেই থাকবে। জনসংখ্যার বেশীরভাগ (৬৬%) দলিত এবং আদিবাসী। বলাবাহুল্য মাওবাদীদের অন্যতম বিচরণক্ষেত্র।

লাতেহারের অধিবাসীদের যৎসামান্য আয়ের উৎস বিখ্যাত “একশো দিনের কাজ।” কিন্তু গরীবের সেই ক্ষুদকুঁড়োর মধ্যে ভাগ বসাতে সদা তৎপর ঠিকাদার বাহিনী।

২০০৮ নাগাদ একজন স্থানীয় সমাজকর্মী ,নিয়ামত আনসারী প্রথম এই ব্যাপারটা লক্ষ্য করেন। দারিদ্রসীমার নীচে থাকা গ্রামবাসীদের তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করছে ঠিকাদারেরা। নিয়ামত এবং তাঁর বন্ধু ভুকন সিং সরব হলেন ঠিকাদারদের এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে।

কিন্তু হঠাৎই মাওবাদীরা নিয়ামতকে নিজেদের শত্রু বলে চিহ্নিত করল। ২০০৯এর ফেব্রুয়ারি মাসে একটি “জনআদালতে” নিয়ামত আর ভুকনকে মাওবাদীরা “পুলিশের খোচড় এবং প্রতিক্রিয়াশীল ” হিসেবে চিহ্নিত করে।

নিয়ামত আর ভুকন মাওবাদী এবং ঠিকাদারদের অশুভ আঁতাত ধরে ফেলেছিলেন। প্রান্তিক মানুষদের যথাসামান্য খুদকুঁড়ো ছিনিয়ে আনতে মাওবাদী আর ঠিকাদারেরা কাজ করত একযোগে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নিয়ামত আর ভুকনের বাড়িতে বেশ কয়েকবার মাওবাদীরা হামলা চালায়।

কিন্তু নিয়ামত আনসারী পিছু হটার পাত্র ছিলেন না। ২০০৯এর পয়লা মার্চ নিয়ামত আনসারী স্থানীয় থানায় স্থানীয় ঠিকাদার শঙ্কর দুবে এবং কয়েকজন মাওবাদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।

পরেরদিন কমান্ডার সুদর্শনের নেতৃত্বে কুড়ি জন সশস্ত্র মাওবাদী নিয়ামতের বাড়িতে হামলা চালায়। নিয়ামতকে পিটিয়ে তার রক্তাক্ত, অচেতন অর্ধমৃত দেহকে ফেলে তারা চলে যায়। বন্দুকের নলের সামনে সবাই নিশ্চুপ থাকে। এমনকি নিয়ামতের বৃদ্ধ পিতা প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সাহায্য চাইলেও তারা এগিয়ে আসেনি।

ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধুর সাহায্যে নিয়ামতকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সে তখন মৃত।

পরেরদিন মাওবাদীদের তরফ থেকে একটি প্রচারপত্র বের করা হয় , “নিয়ামত একজন শ্রেণীশত্রু। সে সাম্রাজ্যবাদ, পুঁজিবাদ এবং প্রতিক্রিয়াশীলদের দালাল। তাই জনতার স্বার্থে তাকে খতম করা হল।” নিয়ামত আনসারী কিন্তু নিতান্তই দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিলেন।

নিয়ামতের বন্ধু ভুকন সপরিবারে পালিয়ে যান।পরে ঝাড়খন্ড সরকার রাঁচীতে তাঁকে আশ্রয় দেন, কিন্তু তাঁর অস্তিত্ব গোপন রেখে।

তথাকথিত মেইনস্ট্রিম মিডিয়া যারা উত্তরপ্রদেশের কোন মুসলিম ছেলে মন্দির অপবিত্র করতে ঢুকে মার খেলে সেটা নিয়ে লাফালাফি করতে শুরু করে দেয়, যারা সিআরপিএফ জ‌ওয়ানদের আদিবাসী মহিলাদের স্তনে হাত দেওয়ার স্বকপোলকল্পিত কাহিনী আমাদের বিশ্বাস করাতে চায়, তারা কিন্তু মাওবাদীদের হাতে একজন সংখ্যালঘু যুবকের মৃত্যুতে নিশ্চুপ। এমনকি শহুরে সাম্যবাদী নামের ভন্ডরা যারা তেইশজন সিআরপিএফ জ‌ওয়ানের মৃত্যুতে উল্লসিত, কমরেড কানহাইয়া কুমার যে নিহত মাওবাদীদের শহীদের মর্যাদা দিতে চায়,তারাও কিন্তু এইব্যাপারে মৌন।

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি , একসময় মহাজোটের পথে নকশালদেরও আসন ছাড়তে রাজি হয় সিপিএম।

২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপি-বিরোধী ভোট এককাট্টা করতে নকশালপন্থীদেরও আসন …

লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপি-বিরোধী ভোট এককাট্টা করতে নকশালপন্থীদেরও আসন ছাড়তে চলেছে সিপিএম। নকশালপন্থী সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-কে কৃষ্ণনগর আসনটি ছেড়ে দিতে চায় আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। একই ভাবে রাজ্যের প্রভাবশালী সংখ্যালঘু সংগঠন ‘সারা বাংলা সংখ্যালঘু কাউন্সিলে’র নেতা মহম্মদ কামরুজ্জমানকে বসিরহাট আসনটি ছেড়ে দিতে চায় বামেরা। বসিরহাটের বিকল্প হিসেবে উলুবেড়িয়া ও ডায়মন্ড হারবার নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলেছে। দার্জিলিং আসনটিও এই ভাবে তৃতীয়পক্ষকে ছাড়তে চায় বামেরা। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের এই কৌশল সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকেও অনুমোদিত হয়।

বিহার-সহ দেশের একাধিক রাজ্যে নির্বাচনে অতীতে লিবারেশনের সঙ্গে জোট করেছে সিপিএম। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে নিকট অতীতে লোকসভা নির্বাচনে নকশালপন্থীদের কখনও আসন ছাড়েনি তারা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট এক দিকে যখন কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার প্রক্রিয়া চলচ্ছে, তখন নকশালপন্থী ও সংখ্যালঘু সংগঠনের নেতৃত্বকেও আসন ছাড়ার কৌশল নিয়ে কার্যত মহাজোটই তৈরি করতে চায় তারা। রাজ্যে সিপিএমের সঙ্গে লিবারেশনের যে আসন সমঝোতার কথা চলে, তা অস্বীকার করেননি সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-এর রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষও। তাঁর কথায়, ‘বামফ্রন্ট নেতৃত্বের সঙ্গে কথা চলছে। এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’ লিবারেশন মূলত কৃষ্ণনগর, হুগলি-সহ রাজ্যের পাঁচ-ছয়টি আসনে সাধারণত লড়াই করে। আলিমুদ্দিন সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগর ও হুগলি লোকসভা আসনের মধ্যে অন্তত একটি আসন লিবারেশনকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়। গত ২০১৯ ফেব্রুয়ারিতে বামফ্রন্টের ব্রিগেড সমাবেশেও বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। সিপিএম যে নকশালপন্থীদের আসন ছাড়তে পারে, তখনই তার ইঙ্গিত মিলেছিল।

বস্তুত, রাজ্যের একাধিক লোকসভা আসনে তৃণমূল ও বিজেপি-বিরোধী ভোট একত্র করতেই নকশাল-সহ ছোট দল ও সংগঠনের নেতৃত্বকে আসন ছাড়তে চায় আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একই কৌশলে বামফ্রন্ট-বিরোধী ভোট এককাট্টা করেছিলেন। ২০১৯ এ যেমন বসিরহাট আসনের জন্য সারা বাংলা সংখ্যালঘু কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ কামরুজ্জমানের নাম নিয়ে আলোচনা চলে বাম শিবিরে। প্রভাবশালী এই সংখ্যালঘু নেতা সিপিএম, সিপিআই ও প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে ইতিমধ্যে দফায় দফায় আলোচনাও করেছেন। বাম ও কংগ্রেস সমর্থিত জোট প্রার্থী হিসেবে বসিরহাট কিংবা ডায়মন্ড হারবারে দাঁড়াতে চান তিনি। দার্জিলিঙের ক্ষেত্রেও একই ফর্মুলা নিতে চায় আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। যদিও কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার ওই আসনে দাঁড়াতে আগ্রহী হন। বাম শরিক আরএসপি জলপাইগুড়ি, জয়নগর-সহ তিনটি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে বৈঠকেও বসেন।

সুতরাং, এই বিধান সভায় একটি ভোটও খুনী সিপিএম বা কমিউনিস্ট জোটদের নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.