সাইক্লোন আম্পান প্রায় ধ্বংস করে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের অংশবিশেষকে। আজ ২২শে মে পশ্চিমবঙ্গে প্রকৃতির সেই ধ্বংসলীলাক্ষেত্রগুলি পরিদর্শনে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর নিজস্ব পর্যবেক্ষণ, রাজ্য সরকারের প্রদত্ত তথ্য ইত্যাদির ভিত্তিতে সাইক্লোন বিধ্বস্ত পশ্চিমবঙ্গের জন্য ভারত সরকারের তরফ থেকে যে ত্রান-অনুদান আসবে বলে আশা করা যায়, সেই অনুদান কিভাবে মধ্যস্বত্ত্বলোভীদের হাত যথাসাধ্য এড়িয়ে সাইক্লোন বিধ্বস্ত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারে, বা ধ্বংস হয়ে যাওয়া সম্পত্তির পুনর্নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত হতে পারে (অন্য কোনোভাবে হাত বদল না হয়ে) সে বিষয়ে বিনীত কিছু পরামর্শ রাখাই এই আর্টিকলটির উদ্দেশ্য। সাইক্লোন বিধ্বস্ত অঞ্চল পরিদর্শনের পর প্রাথমিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন ১০০০ কোটি টাকার রিলিফ।
আম্পান পশ্চিমবঙ্গের অন্ততঃ তিনটি জেলাকে দুরমুশ করে দিয়েছে। উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা ও কলকাতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ছবি ও ভিডিওগ্রাফিক তথ্যের কোনো অভাব নেই যদিও জাতীয় সংবাদমাধ্যমগুলি এই বিপুল বিপর্যয়ের খবর তেমন বিশদে কভার করে নি বলে অভিযোগ তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের কিছু মানুষ। এমতাবস্থায় ভারত সরকারের ত্রাণ অনুদান যাতে সামগ্রিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছেই পৌঁছয়, মিডলম্যানদের হাতে তেমনভাবে পৌঁছতে না পারে, তা নিশ্চিত করা ভারত সরকারের কর্তব্য। এই মিডলম্যানরা মূলতঃ শাসক দল ঘনিষ্ঠ হলেও বিপর্যয় মোকাবিলার অনুদান রাজনীতির রঙ না দেখে সব ধরনের মধ্যস্বত্ত্বলোভী বা মিডলম্যানদের এড়িয়েই সঠিক স্থানে যত দ্রুত সম্ভব পৌঁছনো প্রয়োজন।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি তহবিল তছরূপের অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে বার বার উঠেছে এবং এমত তছরূপের পিছনে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন, বিশেষতঃ অর্থ দপ্তরের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হস্তক্ষেপ আছে বলে সন্দেহ করা অসঙ্গত নয়। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে কম্পট্রোলার অ্যাণ্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া পশ্চিমবঙ্গের ওয়েলফেয়ার স্কীমগুলির প্রসেস অডিট করতে চায়, কিন্তু অর্থ দপ্তর CAG’র সঙ্গে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থ দপ্তরের অসহযোগিতার কারণে এ রাজ্যের মানবকল্যাণ প্রকল্পগুলির CAG প্রসেস অডিট হতে পারে নি। অর্থ দপ্তরের এমত অসহযোগিতা পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনের তরফ থেকে সংবিধান অবমাননা এবং তহবিল তছরূপের সঙ্গে অর্থ দপ্তরের সম্ভাব্য সম্পৃক্ততার বিষয়টিকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে। সুতরাং, আম্পানের পর এ রাজ্যের জন্য রিলিফ পাঠাতে হলে ভারত সরকারের হয়ত নয়া পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত যাতে রিলিফ সঠিক স্থানে পৌঁছয়। কোভিডের প্রকোপে ভারতীয় অর্থনীতি যখন বিধ্বস্ত, তখন প্রতিটি সরকারি মুদ্রা যেন আদত ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের কাছে পৌঁছয় তা সুনিশ্চিত করা ভারত সরকারের দায়। অনুদান দিলে অনুদান যাতে সঠিক স্থানে পৌঁছয় সে বন্দোবস্ত করাও জরুরী।
বিজেপি এম পি স্বপন দাশগুপ্ত টুইট করেছেন যে “Cyclone Amphan has been quite devastating in at least 3 districts of West Bengal. Reconstruction of people’s homes will be a priority. Make sure the government aid goes directly to those who lost their homes in the cyclone. The sharks must be kept out.” যদিও এতকাল যে পদ্ধতিতে বিপর্যয় মোকাবিলার অনুদান কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্যে পাঠানো হয়ে আসছে, সেই পদ্ধতিতেই যদি আম্পান মোকাবিলার অনুদান ভারত সরকারের তরফ থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে পাঠানো হয়, তবে এই ‘হাঙ্গর’দের হাত থেকে সরকারি টাকা রক্ষা করে আর্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজটি থিয়োরেটিক্যালি অসম্ভব না হলেও, বাস্তবে প্রায় অসম্ভব।
নব ভারত নির্মাণ হেতু আত্মনির্ভর প্যাকেজ ঘোষণার সময় ভারত সরকার MSME (অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি ব্যবসায়িক উদ্যোগ) সেক্টরের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করেছে, সেই অর্থকে বন্ধকহীন ঋণ (কো-ল্যাটেরাল-ফ্রি লোন) হিসেবে ব্যাঙ্ক ও নন ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল কর্পোরেশন (NBFCs) গুলির মাধ্যমে MSME সেক্টরের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। টাকাকে সরাসরি অনুদান হিসেবে না দিয়ে ব্যাঙ্ক ও এন বি এফ সি’গুলির মাধ্যমে ঋণ হিসেবে দেওয়ার উদ্দেশ্য চতুর্বিধ।
১. অর্থ প্রদানের কাজটিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া বা Institutionalise করা।
২. সরকারি টাকার যথোচিত ব্যবহারের উত্তরদায়িত্ব ব্যাঙ্ক ও MSME, উভয়ের ওপরেই ন্যস্ত করা
৩. MSME সেক্টরকে আর্থিক নিয়মানুবর্তিতা বা fiscal discipline বজায় রেখে চলতে উৎসাহ জোগানো ও পরোক্ষে বাধ্য করা
৪. আর্থিক মধ্যসত্ত্বলোভীদের গুরুত্ব খর্ব করে অর্থব্যবস্থাকে ক্রমশঃ ফর্মালাইজ করে ফেলা
ত্রাণ অনুদান বন্টনকেও অনুরূপভাবে প্রাতিষ্ঠানিক করে তোলা যায় কিনা ভারত সরকারের বোধ হয় তা ভেবে দেখা উচিত, যদিও ব্যাঙ্ক বা এন বি এফ সি গুলিকে হয়ত এই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না কারণ এই প্রতিষ্ঠানগুলি লাভের প্রত্যাশী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। বিপর্যয়-মুক্তির অনুদান তাদের মাধ্যমে পাঠানো হয়ত সম্ভব নয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের আম্পান বিধ্বস্ত আর্ত মানুষের সম্পূর্ণ তালিকা, তাদের ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাঙ্ক-সংক্রান্ত তথ্য, প্রত্যেকের ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ আইটেমাইজড্ বিবরণ এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিটি ক্ষতির আনুমানিক অর্থমূল্য জানাতে ভারত সরকার পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নির্দেশ দিতে পারে, যাতে অনুদানের অর্থমূল্য সরাসরি আর্ত মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে DBT করা যায়।
এটি একটি স্টেপ-বাই-স্টেপ অনলাইন পদ্ধতিতে করা যেতে পারে। আজকাল বহু সরকারি অফিস অনুরূপ পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে। কিছু ব্যবসার লাইসেন্সের আবেদন গ্রহন ও লাইসেন্স প্রদানের কাজও অনুরূপ অনলাইন পদ্ধতিতে হয়ে থাকে।
- ভারত সরকার রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিতে পারে পশ্চিমবঙ্গের তিনটি সাইক্লোন আক্রান্ত জেলার প্রতিটির জন্য একজন করে নোডাল অফিসার নির্বাচন করতে। এ কাজের জন্য দিন তিনেক লাগতে পারে।
- রাজ্য নোডাল অফিসার স্থির করার পর তাঁদের প্রত্যেককে ইউজার আই ডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ভারত সরকার তাঁদেরকে তাঁদের প্রত্যেকের অধীনে একটি করে ইনস্পেক্টিং অফিসারের প্যানেল তৈরি করতে নির্দেশ দিতে পারে। বিপর্যয়ের ভয়াবহতা অনুযায়ী প্রতি ব্লকে ন্যূনতম এক বা একাধিক ইন্সপেক্টিং অফিসার তাঁর প্যানেলে রাখতে পারেন প্রত্যেক নোডাল অফিসার। এ কাজের জন্য আনুমানিক আরও দিন তিনেক লাগা স্বাভাবিক।
- ইতিমধ্যে বিপর্যয় রিলিফ বন্টন উপলক্ষে একটি অনলাইন সাইট ভারত সরকার তৈরি করতে পারে যে সাইটে গিয়ে বিপর্যয়-আক্রান্ত মানুষ তাঁদের সব রকম তথ্য আপলোড করে ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারীর নাম, ঠিকানা, জেলা, ব্যাঙ্ক ডিটেলস্, মোবাইল নম্বর, ক্ষতির তথ্য ও বিবরণ এবং সে ক্ষতির আনুমানিক অর্থমূল্য ইত্যাদি সেই অনলাইন আবেদনে আপলোড করতে হবে।
- বিপর্যয়-আক্রান্ত মানুষদের জন্য পোর্টালটি লঞ্চ করার আগে জেলার নোডাল অফিসারদের জন্য সাইটটি লঞ্চ করতে হবে।
- নোডাল অফিসাররা প্রথমে সাইটে ঢুকে তাঁদের প্রত্যেকের অধীনে ইন্সপেক্টিং অফিসারদের প্যানেলটি নিজেদের ইউজার আই ডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে আপলোড করে দিতে পারবেন।
- ইন্সপেক্টিং অফিসারদের প্যানেল সাইটে আপলোডেড হয়ে যাওয়ার পর ভারত সরকার প্রত্যেক ইন্সপেক্টিং অফিসারকে ইউজার আই ডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে দিতে পারবে।
- নোডাল অফিসার ও ইন্সপেক্টিং অফিসারদের তালিকা প্রস্তুত হওয়ার পর প্রত্যেক নোডাল অফিসার ও ইন্সপেক্টিং অফিসারদের নাম ও মোবাইল নম্বরের তালিকা অনলাইন সাইটটিতে দেওয়া হবে। এরপর সাইটটি লঞ্চ করা যাবে সাধারণের ব্যবহারার্থে।
- ব্যবস্থা এমন থাকা বাঞ্ছনীয় যে মানুষ চাইলে নিজেরা সরাসরি আবেদন করতে পারবেন আবার সরকারি অফিস বা ভারত সরকারের পূর্ব অনুমোদিত ফেসিলিটেশন সেন্টারের মাধ্যমেও আবেদন করতে পারবেন।
- প্রাথমিক আবেদনের রেকর্ড নিজেদের কাছে রেখে ভারত সরকার সে আবেদন নির্দিষ্ট জেলার নোডাল অফিসারের কাছে রিডাইরেক্ট করে দেবে।
- অতঃপর নোডাল অফিসার সে আবেদন নিজের ইউজার আই ডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে রিডাইরেক্ট করবেন নির্দিষ্ট ইন্সপেক্টিং অফিসারের কাছে।
- সাইটে তাঁর আবেদনের স্টেটাস প্রতি ধাপে স্পষ্ট দেখতে পাওয়া উচিত আবেদনকারীর। অর্থাৎ তাঁর আবেদন কোন্ নোডাল অফিসার ও কোন্ ইন্সপেক্টিং অফিসারের কাছে গিয়েছে, সেটি প্রসেসের কোন্ ধাপে আছে ইত্যাদি।
- ইন্সপেক্টিং অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া যাবে তাঁর কাছে পাঠানো প্রতিটি আবেদনের জন্য তাঁর কাজ তাঁকে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে, ধরা যাক ১৫দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। ইন্সপেক্টিং অফিসারের দায়িত্ব হবে আবেদনে উল্লেখিত বিপর্যয়-আক্রান্ত স্থানে উপস্থিত হয়ে, ক্ষতির দৃশ্য ইত্যাদি পরিদর্শন করে তার যথোচিত রিপোর্ট ভারত সরকারকে দেওয়া।
- ইন্সপেক্টিং অফিসার তাঁর রিপোর্ট সাইটে আপলোড করবেন নিজস্ব ইউজার আই ডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে।
- ইন্সপেক্টিং অফিসারের দেওয়া রিপোর্ট সাইটে দেখতে ও অ্যাকসেস করতে পারবেন ভারত সরকার, নোডাল অফিসার এবং আবেদনকারী নিজে।
- ইন্সপেক্টিং অফিসারের রিপোর্ট অনুযায়ী ভারত সরকার রিলিফের টাকা DBT করতে পারবে আবেদনকারীর আবেদনপত্রে উল্লিখিত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।
পোর্টালে ঢুকে আবেদনের প্রতি ধাপে আবেদনকারী যাতে জানতে পারেন তাঁর আবেদন যাঁর কাছে গিয়েছে, সেই সংশ্লিষ্ট অফিসারের নাম ও ফোননম্বর ইত্যাদি কি, জনস্বার্থে সেই প্রশাসনিক স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন। তার ফলে দরকারে আবেদনকারী সেই অফিসারকে ফোন করে ফলো আপ করতেও পারবেন।
সাধারণ মানুষকে অনলাইনে আবেদন জমা করতে সাহায্য করতে পারেন পঞ্চায়েত, ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিস বা মিউনিসিপ্যালিটি ইত্যাদি সরকারি অফিসের কর্মচারীরা। এই মর্মে নির্দেশ পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে দিতে পারে ভারত সরকার। আবেদন জমা পড়ার পর ভারত সরকারকে অবশ্য ব্যাঙ্কগুলির কাছ থেকে ভেরিফাই করতে হবে যে প্রতি আবেদনপত্রে উল্লিখিত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর যথার্থই ঐ নির্দিষ্ট আবেদনকারীর অ্যাকাউন্ট কিনা এবং সেই মর্মে নির্দিষ্ট ব্যাঙ্কের একটি শংসাপত্রও সংগ্রহ করা প্রয়োজনীয় হবে। ভারত সরকারের নির্দেশে ব্যাঙ্কের এমত শংসাপত্র নিজেদের ইউজার আই ডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে আপলোড করতে পারবেন তালিকাভুক্ত নোডাল অফিসাররা এবং/অথবা ইন্সপেক্টিং অফিসাররা।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রশাসনের পূর্ববর্তী আচরণ ও চিরাচরিত গতিপ্রকৃতি থেকে আন্দাজ করা যায় যে এ রাজ্য হয়ত উপরোক্ত পদ্ধতিতে বিপর্যয় মোকাবিলা অনুদান বন্টনের কাজে ভারত সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করতে চাইবে না। কিন্তু অসহযোগিতা যদি পশ্চিমবঙ্গ করে তবে তা হবে রাজ্যের বিপর্যস্ত মানুষের ও সামগ্রিক স্বার্থের বিরোধী এবং সংবিধানের ২৫৬ ও ২৫৭ নম্বর ধারার অবমাননা।
“256. Obligation of States and the Union —
The executive power of every State shall be so exercised as to ensure compliance with the laws made by Parliament and any existing laws which apply in that State, and the executive power of the Union shall extend to the giving of such directions to a State as may, appear to the Government of India to be necessary for that purpose.
- Control of the Union over States in certain cases —
(1) The executive power of every State shall be so exercised as not to impede or prejudice the exercise of the executive power of the Union, and the executive power of the Union shall extend to the giving of such directions to a State as may appear to the Government of India to be necessary for that purpose.”
রাজ্যের পরিকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি, যেমন বিদ্যুতের লাইন, পোস্ট, ট্রান্সফর্মার, ব্রডব্যাণ্ড নেটওয়ার্ক, সরকারি যানবাহন, অফিস ইত্যাদির ক্ষতি পূরণের জন্যও সংশ্লিষ্ট সংস্থা অনলাইন সাইটে গিয়ে আবেদন পত্র জমা করতে পারবে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে এবং উপরোক্ত পদ্ধতিতে ভারত সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যৌথ সহযোগে সেই সংস্থার জন্য অনুমোদিত ক্ষতিপূরণের টাকা সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আসতে পারবে DBT’র মাধ্যমে। স্কুল বিল্ডিং, হাউসিং সোসাইটি এবং অন্যান্য নানা পাবলিক প্রপার্টির ক্ষতিপূরণের জন্যও সংশ্লিষ্ট স্কুল, আবাসন ইত্যাদির কর্তৃপক্ষবৃন্দ অনলাইন পোর্টালটির মাধ্যমে একইভাবে আবেদন জমা করতে পারবেন।
যে কোনো আর্থ-সামাজিক স্তরের ব্যক্তিই যেন বিপর্যয়জনিত ক্ষয়ক্ষতি পূরণের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করতে পারেন। ভারতবর্ষের এখন উচিত তার সমস্ত নাগরিকের প্রতি প্রকৃত সমদর্শী হওয়া। রিলিফ বিতরণের সময় কেবলমাত্র দরিদ্র মানুষের কথা ভাবলে সংবিধানে উল্লেখিত Right to Equality কি কেবল ‘কথার কথা’ হয়েই থেকে যাবে না?
আম্পানের ধাক্কায় সমূলে উপড়ে পড়েছে অসংখ্য গাছ। মৃতদেহের মতো ছড়িয়ে আছে তাদের যন্ত্রণাবিদ্ধ শরীর। এরকম বহু গাছকেই অধিক বিলম্ব না করে আবার রোপন করলে হয়ত প্রাণ ফিরে পেতে পারত তারা। উপড়ে পড়া গাছকে কেটে টুকরো করে বিক্রি করে দেওয়া বোধ করি সবক্ষেত্রে অপরিহার্য নয়। গাছের পুনঃ রোপনও এক অত্যন্ত জরুরী পরিকাঠামো পুনর্নির্মাণ হতে পারে। গাছেরা জীবন্ত, আমাদের ইকোসিস্টেমের আদত উৎপাদক শ্রেণী এবং এই ধরনের বিধ্বংসী সাইক্লোনের মত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে তারাই আমাদের প্রথম সুরক্ষা কবচ। ন্যাশনাল ডিসাস্টার রিলিফ ফোর্স বা NDRF কে দিয়ে বেশ কিছু গাছের পুনঃ রোপন সম্ভব কি না, ভারত সরকার তা ভেবে দেখতে পারে।
এমন একটি ডিসাস্টার রিলিফ অ্যাপ্লিকেশন সাইট একবার তৈরি হলে ভবিষ্যতেও তা সমস্ত প্রকারের বিপর্যয় মোকাবিলায় ব্যবহৃত হতে পারবে। এর মাধ্যমে ভারত সরকারের বিপর্যয় সংক্রান্ত তথ্যের ভাণ্ডারও ক্রমে সমৃদ্ধ হবে এবং তার দ্বারা বিপর্যয় মোকাবিলা খাতে সরকারি অর্থের সঠিক ও উপযুক্ত ব্যবহার ভবিষ্যতেও সুনিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বহু বিপর্যয় হয়ত এর ফলে এড়ানোও সম্ভব হবে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ত্রাণের অনুদান যেন রাজনৈতিক মধ্যসত্ত্বলোভীদের কাছে লোভনীয় প্রাপ্তিযোগ হয়ে না দাঁড়ায়।
Debjani Bhattacharyya দেবযানী ভট্টাচার্য্য
Natural Disaster: No Opportunity to Augment Ruling Party Cronyism
This article is suggestive of effective utilization of expected Disaster Relief Fund that Government of India may plan to disburse for the State of West Bengal after Cyclone Amphan. PM Modi would be here in West Bengal on May 22 to have a sight of devastation of the State. Just before that this is in order to humbly suggest a possible modus operandi of disbursement to maximize its benefits for the disaster-struck people, by avoiding the intermediaries.
Amphan has rampaged at least 3 districts of West Bengal namely Uttar & Dakshin 24 Parganas & Kolkata. Social Media has been flooded with innumerable pictorial & videographic documents of indiscriminate devastation caused by nature’s fury. GOI Relief to replenish financial loss incurred by people thereof must reach them in totality without getting lost in the hands of intermediaries who are reported mostly to be ruling party associates.
West Bengal administration, especially the Finance Department, is apparent to be integrally instrumental in Government Treasury defalcation of the State. Finance’s involvement appeared indirectly evident when, in October, 2018, the Department refuted to co-operate with Comptroller and Auditor General of India to conduct a Process Audit of Welfare Schemes of WB Govt. Refusal to co-operate with CAG Process Audit made West Bengal administration’s defiance against Constitution & Finance Department’s involvement in defalcation apparent. Hence, after Cyclone Amphan, GOI perhaps needs to work out a new methodology for sending relief to West Bengal so that the relief reaches the real target. At a time when Indian Economy is worst struck by Covid 19, every penny sent to people needs to reach the needy.
BJP MP Swapan Dasgupta tweeted that “Cyclone Amphan has been quite devastating in at least 3 districts of West Bengal. Reconstruction of people’s homes will be a priority. Make sure the government aid goes directly to those who lost their homes in the cyclone. The sharks must be kept out.” However, it’s learnt to be difficult, if not impossible, to keep out the ‘sharks’ if the Disaster Relief Fund is sent to the State Government under the existing format. In the recent announcement of Atmanirbhar Package, GOI attempted to institutionalize the disbursement of money to MSME sector through Banks & NBFCs perhaps to minimize the reach of intermediaries. May relief disbursement too be institutionalized by some means? Banks & NBFCs perhaps can’t be made directly instrumental in the disbursement of relief fund as these are profiteering Organizations. However, GOI may ask West Bengal Administration to send full list of victims along with itemized details of loss they incurred due to Cyclone Amphan & corresponding Rupee value thereof so that DBT can be made to compensate the victims directly.
This may be done by a step-by-step online process. Many Government offices are working in such formats these days & applications for various business licenses are being collected online in similar ways.
1. GOI may direct the State to select a Nodal Officer for each Cyclone-struck District. This may take maximum 3 days for 3 affected districts of West Bengal.
2. After fixing the Nodal Officers, each one of them may be given a USER ID & PASSWORD & GOI may direct each Nodal Officer to select a panel of Inspecting Officers under him/her. The Nodal Officer may have one or more Inspecting Officer(s) per Block depending on the extent of devastation. Selection of Inspecting Officers panel may take another three days. (approximately)
3. In the meantime, for this purpose, GOI may launch a Site where disaster victims may directly upload their data including names, address, districts, bank details, mobile numbers, details of loss & tentative Rupee value estimation thereof.
4. Before launching the site for victims, it may be launched for the Nodal Officers.
5. Nodal Officers would upload the panel of Inspecting Officers to the site using their own USER ID & PASSWORD.
6. After the panel is uploaded, each Inspecting Officer may get a USER ID & PASSWORD for his own usage.
7. After the List of Nodal Officers & Inspecting Officers are ready, GOI Site may have their names & contact numbers enlisted there. Thereafter, the site may be made available for public willing to file applications.
8. The application may either be filed personally by the applicant victim or through local Government Offices and/or Private fecilitation Centres pre-authorized by GOI.
9. Having records of such primary online applications, GOI may redirect it to the corresponding district’s Nodal Officer.
10. The Nodal Officer may redirect it further to the corresponding Inspecting Officer using his own USER ID & PASSWORD
11. The Site may transparently show the Status of each application, e.g whereto it had been redirected, wherein is it pending etc at every stage
12. Inspecting Officer may be directed to inspect within a stipulated time period, say, 15 days, the applicant victim’s venue & cross-verify his loss-details & endorse it back to GOI.
13. The Inspecting Officer may submit his report on the Site using his USER ID & PASSWORD.
14. GOI, the Nodal Officer as well as the applicant would be able to access the Inspecting Officer’s report.
15. After such endorsement of the Inspecting Officer, GOI may DBT the relief to the applicant’s bank account as available in his application.
The status of each application may be kept transparent & visible on Site. The original applicant would thus be able to see online at which end his application is pending along with the name & phone number of the concerned officer. The affected victim, if required, may follow up with the right person of the local administration & be able to get his case cleared.
Officers of Panchayat, Block Development Offices & Municipalities may be instructed to help people to file their applications. GOI may direct the State to order its employees for helping the common people. GOI would entrust & ask the banks to verify & certify that the bank details furnished in the applications actually belongs to the applicant himself/herself. Banks’ certifications may be uploaded by the respective Inspecting Officers and/or Nodal Officers using their own USER IDs & PASSWORDs.
From the antecedents of West Bengal, it may be anticipated that the State may disagree to co-operate with GOI in the above suggested process. However, if WB defy to co-operate, that would be in strict violation of the Constitution’s Article 256 & 257 that read as given below:
“256. Obligation of States and the Union —
The executive power of every State shall be so exercised as to ensure compliance with the laws made by Parliament and any existing laws which apply in that State, and the executive power of the Union shall extend to the giving of such directions to a State as may, appear to the Government of India to be necessary for that purpose.
257. Control of the Union over States in certain cases —
(1) The executive power of every State shall be so exercised as not to impede or prejudice the exercise of the executive power of the Union, and the executive power of the Union shall extend to the giving of such directions to a State as may appear to the Government of India to be necessary for that purpose.”
For infrastructural losses of the State like those of Electricity lines & posts, broadband networks, Government-owned Public Transport vehicles etc, concerned Organizations may receive relief by furnishing individual details & configuration thereof through the same Disaster Relief Application Portal.
School buildings, Housing Societies & other Public Properties’ losses may also be compensated by DBT to the corresponding bank accounts of individual Schools, Housing Societies etc after they file applications through the same portal.
Every person, be he of any socio-economic class must be eligible to file application through the standard modus operandi. It is time India owns everyone equally & does not consider only the poor when disbursement of Government Relief is concerned.
Trees have fallen like dead bodies all over. Many such uprooted trees may be re-rooted (wherever possible) instead of cutting them down into pieces of woods & liquifying them off. This is infrastructural mending that needs to be done as trees are lives, basic producers of our ecosystem & the first line of defence against such Cyclones. Is it feasible to use NDRF for re-rooting of trees? GOI may consider.
Disaster Relief Application Site, once formed would be able to function ever in future. It needs to be systematized for maximum fruitful utilization of public money for people’s benefit in general. A natural disaster must not appear as another great opportunity to augment Ruling Party Cronyism.
Debjani Bhattacharyya
(The Author is an Communication Strategist, Business Consultant & Columnist. Views expressed are personal.)