ছেলেটার কাছে কী ছিল না! তিন তিনটে মন্ত্রক ; একাধিক সরকারি এবং সাংগঠনিক পদ, দলের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখ ~ জননেতা। ছেলেটাকে দলে রাখতে কোন প্রচেষ্টা বাদ দেয়নি দলীয় নেতৃত্ব। সৌগত রায়ের প্রচেষ্টা, পিকে-র প্রচেষ্টা, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টা ; ৫ মাস আগে খবরের শিরোনামে দেখা যেত। ছেলেটা দাবি করলে সেদিন হয়ত ‘উপমুখ্যমন্ত্রী’-এর পদটাও পেয়ে যেত। কিন্তু সবকিছু ত্যাগ করে ছেলেটি আজ রাজনীতির ময়দানে, একটি কঠিন লড়াইয়ে, একটি ভীষণ কঠিন লড়াইয়ে।
গ্রাম বাংলার ছেলে ; মেদিনীপুরের মাটির ছেলে, বিদ্যাসাগর-মাতঙ্গিনী-ক্ষুদিরাম-বীরেন্দ্র শাসমল-সতীশ সামন্তের মাটির ছেলে। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম-ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে হাতেখড়ি, গণআন্দোলন মধ্যে দিয়ে বেড়ে ওঠা। রাজনৈতিক জীবনের সূচনা পর্ব কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না ; দলের দুঃসময়ে প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কঠিন থেকে কঠিনতম নির্বাচনী ময়দানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। রাজনৈতিক জীবনের প্রথম পর্যায়ের বেশ কয়েকটি নির্বাচনে হেরেছে, আর হেরেছে বলেই শিখেছে, জেনেছে, বুঝেছে। রাজনীতি অতটা সোজা নয়! টের পেয়েছে। তাই, যেদিন একবার সেই মাটিতে রাজনৈতিকভাবে দাঁড়াতে শিখেছে, দাঁড়িয়েছে ; সারা বাংলার রাজনীতি সেদিন তাকে স্বীকৃতি প্রদান করেছে।
এই ছেলেটি আজ লড়ছে, লড়ছে একটি শাসকের ঔদ্ধত্যের বিরুদ্ধে, নীতিহীনতার বিরুদ্ধে, শরীরি ভাষার বিরুদ্ধে, পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে, তোষণের রাজনীতির বিরুদ্ধে। অক্লান্ত পরিশ্রম করে একটা অপশক্তিকে হারাতে চাইছে। ছেলেটা নেমেছে একটা ধর্মযুদ্ধে, লড়াই করছে ধর্ম বাঁচাতে, মাটি বাঁচাতে, অস্তিত্ব বাঁচাতে। রাম নাম, দুর্গা নাম, কৃষ্ণ নাম কে পুঁজি করে, স্বামী বিবেকানন্দের বাণীকে আত্মবিশ্বাসের হাতিয়ার করে ছেলেটা লড়াই করছে। কলকাতা কেন্দ্রিকতায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক বাবুদের ভিত টলিয়ে দিয়েছে, নীতি-আদর্শ ভুলে, ইতিহাস ভুলে কিছু রাজনৈতিক দোকানদার নিজেদের ব্যবসা বাঁচাতে পাগল হয়ে গেছে। কারণ শুধুমাত্র এই ছেলেটি।
গ্রাম বাংলার ছেলে, জেলার ছেলে ~ নাছোড়বান্দা স্পর্ধা। হারাতে চাইছে কলকাতা কেন্দ্রিক একটি রাজনৈতিক বাবু কালচার কে। ছেলেটার পাশে দাঁড়ান, মফঃস্বলের স্বার্থে, গ্রামবাংলার স্বার্থে, জেলার স্বার্থে, পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থে। আপনারা পাশে থাকুন। একটা বার সুযোগ দিন। আবেদন রাখছে সময়, আবেদন রাখছে বাংলার ঐতিহ্য-কৃষ্টি-ইতিহাস।
অঙ্কন দত্ত