সম্প্রতি, দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জিতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আপের নেতা কেজরিওয়াল। বিজেপি ও কংগ্রেসকে হারিয়ে কেজরি দিল্লির গদিতে বসেন। জেতার পর পটকা বাজি আবির নাকাড়া বাজিয়ে ক্ষমতা জাহির করে বলেন, দিল্লিবাসীর জয়। আপের মুখপাত্রের বড়ো বড়ো ভাষণ শুনে মনে হচ্ছিল যেন বিশ্বজয় করে এসেছেন। যেন ধরাকে সরা জ্ঞান না করা। দিল্লির দাঙ্গায় মূল জঙ্গি, আপের কাউন্সিলর এবং হত্যালীলার নায়ক হাজি তাহির হুসেনের নির্দেশে বেশ কয়েকজন দিল্লিবাসীর মৃত্যু হলো, কিন্তু দিল্লি পুলিশের ক্ষমতা হলো না দাঙ্গা রোধ করা। মিডিয়ার ছানবিনে যে তথ্য উঠে এসেছে তাহলো এই দাঙ্গা প্রিপ্ল্যান। দাঙ্গার রসদ একদিনে জোগাড় করা সম্ভব নয়। আপের কাউন্সিলর তাহির হুসেনের উদ্দেশ্য একঢিলে দুই পাখি মারা (১) সন্ত্রাস করে বিধানসভা জেতার জন্য রসদ জোগাড়। (২) আপের জেতার পর দিল্লিকে কাশ্মীর বানানোর চক্রান্ত। বিজেপি জিতলে এই দাঙ্গা সম্ভব নয় জেনে সংখ্যালঘু মুসলমানদের সমস্ত ভোট আপের পক্ষে যায়। উল্টোদিকে ভণ্ড কংগ্রেস, সিপিএমের নেতারা অমিত শাহের পদত্যাগ চাইছেন। এদের বুদ্ধি নাশ হয়েছে, বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি। দিল্লি থেকে হিন্দুদের উচ্ছেদ করার চক্রান্ত। রাজনীতি এখন হিংস্রদের আখড়া বা ঘাঁটি। দিল্লির দাঙ্গা করোনা ভাইরাসের চেয়ে ভয়ংকর ছিল। নির্ভয়া দোষীদের ফাঁসি হোক চেয়েছিল সমস্ত দেশবাসী, ঠিক তেমনি হাজি তাহির হুসেনের ফাঁসি হোক। ডিসিপি অঙ্কিত শর্মাকে ও রতনলালকে নৃশংসভাবে হত্যা করা, বহু সম্পত্তি পুড়িয়ে নষ্ট করা, ধর্ষণ করে মহিলাকে পুড়িয়ে দেওয়া— সবকিছুর মূল নায়ক তাহির হুসেন। এর ফঁসি চেয়ে দলমত নির্বিশেষে সকলের রাস্তায় নামা উচিত। কোথায় বুদ্ধিজীবীর দল? কোথায় অবিজেপি দল?
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনে তিনশোর বেশি আসন জিতে মসনদে বসে একের পর এক জনদরদি কাজ করছেন মোদী। কংগ্রেস ও বামপন্থীরা কল্পনা করতে পারেননি এত শর্ট টাইমে দেশের গরিবদের জন্য একের পর এক হাজারো প্রকল্পের ঘোষণা করতে পারবেন। যেমন— কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলুপ্তি, তিন তালাক রদ, নোট বন্দি, এয়ার স্ট্রাইক, আয়ুষ্মন ভারত, এক দেশ এক আইন, উজ্জ্বলা যোজনা, গরিবদের বিনামূল্যে শৌচালয়, গরিবদের আবাস যোজনা, এক দেশ এক রেশনকার্ড, সাধারণ জাতির দশ শতাংশ সংরক্ষণ, কৃষকদের জন্য কৃষিক্ষেত্রে বিমা ইত্যাদি হাজারো প্রকল্প।
উল্লেখ্য, বিশিষ্ট ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহর মতে, মোদী নিজেকে যেভাবে তৈরি করেছে, যা রাহুল পারেনি। সেই কারণে মোদীকে পরাস্ত করা কংগ্রেসের পক্ষে সম্ভব নয়। এতদ্সত্ত্বেও, নিরলস মোদীজী, এসমস্ত জনকল্যাণমুখী কাজ করে আমজনতার মনে স্থান করে নিয়েছেন যা দেখে সমালোচক ও নিন্দুক নেতাদের মধ্যে আসাদুদ্দিন ওয়েসি, মণিশঙ্কর আইয়ার, ফারুক ও ওমর আবদুল্লা, মায়াবতী, অখিলেশ যাদব, রহুল ও সোনিয়া, অধীর চৌধুরী, মহম্মদ সেলিম, মমতা ব্যনার্জি, সীতারাম ইয়েচুরিরা জ্বলছেন। বাঙ্গলার লাল ও ডানের কবি সাহিত্যিক, কলাকুশলী আর বুদ্ধিজীবীদের একাংশ পথে নেমেছেন কেন্দ্রের এনআরসি ও সিএএ-এর বিরোধিতায়। এরা রোহিঙ্গা আর অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশীদের শরণার্থীর তকমা দিতেই আন্দোলন করছেন। এরা ডান ও বাম ছাত্র সংগঠনের ছাত্র নেতাদের লেলিয়ে দিয়ে মোদীর বিরোধিতায় কলকাতায় পথ অবরোধ করাচ্ছেন। প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা আন্দোলনের যুব মহান নেতাদের নাম মুখে আনেন না। এঁদের প্রতিকৃতিতে মালা চড়ান না। এইভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে লাটে তুলে, পড়াশুনাকে লাটে উঠিয়ে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মগজ ধোলাই করে, তাদের পথে নামিয়ে রাজ্যপাল, মোদী, অমিতজীর বিরোধিতা করাচ্ছেন। আহা কী আদর্শ চিন্তাধারা! মরে যাই। বামপন্থীরা ভাবেন, ভারতকে মার্কস ও লেনিনের চিন্তাধারায় বিকশিত করবেন। বামপন্থীরাই দেশ চালাবেন। চীন, ভিয়েতনাম, কাম্পুচিয়ার ভাবধারা প্রতিষ্ঠা করবেন। রবীন্দ্রনাথ ও নেতাজীর আদর্শে কোনো কালেই বিশ্বাসী ছিলেন না। ঐশী ঘোষ আর কানহাইয়া কুমারকে মাঠে নামিয়ে দেশ বিরোধী স্লোগানে উজ্জীবিত করছেন। এই ডান-বামদের একটাই স্লোগান ‘মোদী হটাও দেশ বাঁচাও, পরোক্ষে চীনের ভাবধারাকে ভারতে প্রতিষ্ঠা কর। এসব নিয়ে রাজনীতি ডান বামের শিশুসুলভ চপলতা মাত্র।
সুতরাং, (১) মোদী দেশকে সুরক্ষা দিতে যা যা আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন তা একদম সঠিক। (২) তিনটি দেশ থেকে অত্যাচারিত হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈনদের ভারতেশরণার্থী চিহ্নিত করে নাগরিকত্ব দেওয়া। এই কাজগুলি করছে বলেই মোদী ও বিজেপি কি দেশদ্রোহী দল? বিরোধীরা মোদীর কাজগুলিকে দেশভাগের চক্রান্ত বলে মনে করছেন। সবশেষে বলব, অবিজেপি দলগুলি একটু চুপ থাকুন এবং মোদীজীর ওপর ভরসা রাখুন।
রাজু সরখেল
2020-03-13