ডিক্স ভেপোরাবের রয়েছে নানা গুণ

ভিক্স ভেপােরারের কৌটো আমাদের সবার চেনা। তার ব্যবহারও জানা। ঋতু পরিবর্তনের সময় ঠাণ্ডা লাগা সামলাতে ভিক্সের জুড়ি নেই। নাক বন্ধ, চোখ-নাক দিয়ে জল পড়া, কাশি ইত্যাদি ঠিক করতে অনেকেই ভিক্স ভেপােরাব ব্যবহার করেন। আর তাতে উপকারও হয় যথেষ্ট। কাজেই অন্য কারও বাড়িতে কিছু থাক বা না থাক ভিক্সের কৌটো থাকবে। ভিক্সের প্রধান উপাদান হলাে ক্যাম্ফর বা কপূর, মেন্থল ও ইউক্যালিপটাস। কিন্তু ভিক্স ভেপােরাব শুধুমাত্র ঠাণ্ডা লেগে সর্দি হলে তবেই কাজে আসে নাকি! মােটেও না, ভিক্সের আরও অনেকগুলাে কাজ আছে যা সবাই জানে না।

আর কী কী কাজে ব্যবহার করা হয় ? ভিক্সের ব্যবহার করা যায় মশা তাড়াতে। কিংবা কোনও পােকা তাড়াতে। ধরুন, মশা মারার কয়েল বা অলআউট শেষ হয়ে গেছে। অথচ মশার জ্বালায় বাড়িতে টিকতে পারছেন না। কোনও চিন্তা নেই। গায়ের খােলা অংশে একটু ভিক্স ভেপােরাব লাগিয়ে নিন। কিংবা যেখানে বসে আছেন তার কাছাকাছি ভিক্সের কৌটো খুলে রেখে দিন। মশা তাে ঘেঁষবেইনা, কাছে অন্য পােকামাকড়ও ঘেঁষবে না। ঠাণ্ডা চলে গেলে মাথাব্যথা ছাড়াও অনেক সময় গ্যাসে কিংবা মানসিক উদ্বিগ্নতায় মাথাব্যথা থেকে ব্লাডপ্রেসার কমাতে সাহায্য কবে ভিক্স। শীতকাল মানেই পা ফাটবে। এই পা-ফাটা আটকাতেও কাজে আসতে পারে ভিক্স। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভিক্স লাগিয়ে নিন গােড়ালিতে। ফাটা অংশে একটু বেশি করে লাগান। সকালে স্নান করতে গিয়ে পিউমিস স্টোন বা ঝামাপাথর দিয়ে ভালাে করে ঘষে নেবেন। এবার ঠাণ্ডা জল দিয়ে গােড়ালি ভালাে করে ধুয়ে নিন। কয়েকদিন পরেই দেখবেন, পায়ের ফাটা উধাও। পেটের চর্বিও কমিয়ে দিতে পারে ভিক্স ভােপােরাব। এক টেবিল চামচ অ্যালকোহল, এক টেবিল চামচ কপূর, এক টেবিল চামচ বেকিং সােডা আধ জার ভিক্স ভেপারাব ভালাে করে মিশিয়ে একটা পেস্ট বানান। জিমে যাওয়ার আগে পেটের চর্বির ওপর বা শরীরের যে অংশে ফ্যাট জমেছে, সেখানে ভালাে করে লাগিয়ে নিন। এবার ওই অংশটা ঢেকে রাখুন। ওয়ার্কআউট হয়ে গেলে জল আর সাবান দিয়ে ওই অংশটা ভালাে করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এটা বার তিনেক করুন। দেখবেন অনেক তাড়াতাড়ি রােগা হচ্ছেন। বাজারে স্লিমিং ক্রিমের থেকে এই হােমমেড পেস্ট অনেক বেশি উপকারী। | বাড়িতে পােষা বিড়াল বা কুকুর থাকলে ভিক্স ভেপােরাব অবশ্যই সঙ্গে রাখুন। বাড়িতে পােষ্য থাকা মানেই তারা ঘরের ভেতর মাঝে মধ্যে মল-মূত্র ত্যাগ করে ফেলতে পারে। এটা বন্ধ করতে বাড়ির সব জায়গায় ভিক্স রাখুন, যেখানে আপনার পােষ্য সাধারণত এইসব কাজ করতে পছন্দ করে। পশুবিদরা বলেন, কুকুর ও বিড়াল ভিক্সের গন্ধ একদম সহ্য করতে পারে না। তারা ওখানে আর যাবে না। বিশেষ করে বিড়াল অনেক সময় সােফার কাপড়ে আঁচড়াতে খুব পছন্দ করে। এতে সােফার দফারফা হয়ে যায়। সােফার কাছে একটা খােলা কৌটো রেখে দিতে পারেন। বিড়াল ওদিকে ঘেঁষবেই না। গর্ভাবস্থায় কিংবা শরীরে মেদ জমার ফলে শরীরে স্ট্রেচ মার্ক দেখা দেয়। দিনে দুবার করে সেই অংশে ভিক্স লাগালে দু সপ্তাহের পর দেখবেন, আর সেই মার্ক নেই। পায়ের নখে ফাঙ্গাস হলে ভিক্স ভেপােরাবতা সারিয়ে দিতে পারে। ওই নখে ভিক্স লাগিয়ে মােজা পরে শুয়ে পড়ুন। পরদিন সকালে ভালাে করে নখটা ধুয়ে যতটা পারবেন কেটে ফেলুন। যতদিন না সারে, ভিক্স লাগাতেই থাকুন। নখ বাড়লেই কেটে ফেলবেন। এভাবে নখটা ঠিক হয়ে যাবে।

কালশিটেমিটে যায় ভিক্স লাগিয়ে। কালশিটে পড়ে যাওয়া জায়গায় নিয়ম করে ভিক্স লাগান। কয়েকদিন পর ঠিক হয়ে যাবে দেখবেন। মুখের যে অংশে ব্রণ হয় সেখানে ভিক্স লাগিয়ে রাতে শুয়ে পড়ুন। পরদিন ভালাে করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। কয়েকদিন পরপর করুন। ব্রণ সেরে যাবে। যে কোনও পেশীর ব্যথায় ভিক্স লাগিয়ে দেখুন। ব্যথার থেকে আরাম পাবেন। তবে দেখবেন, ভিক্স ব্যবহার করার পর শরীরে কোনওরকম অ্যালার্জি বা ইনফেকন হচ্ছে কিনা, যদি কোনও অবাঞ্ছিত দাগ বা চুলকানি কিংবা লাল হয়ে যাওয়া দেখেন,

একদম ব্যবহার করবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। তিন বছরের কম শিশুদের শরীরে ভিক্স লাগাবেন না।

ডাঃ পার্থসারথি মল্লিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.