অযোধ্যায় শ্রীরামমন্দির নির্মাণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় আজ সবার জানা। যেখানে রামলালা বিরাজমান সেখানে রামমন্দির নির্মাণে রায় দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আরও একবার প্রমাণ করল—সনাতন ঐতিহ্যই ভারতের আসল ধর্মাচরণ বা জীবনধারা (way of life)। উল্লেখ্য, ২০১০-এর ৩০ সেপ্টেম্বর এলাহবাদ হাইকোর্টের লক্ষে বেঞ্চ রামজন্মভূমির প্রতি ভারতীয় জনমানসের সনাতন আস্থার প্রতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। প্রধান বিচারপতিরঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে দুটি বিষয়ের উপর সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। এক, ধর্মবিশ্বাস ও দুই, ইতিহাস তথা আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এ.এস.আই)-র রিপোর্ট। কোর্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে ১৮৫৭ সালের আগে থেকেই হিন্দুরা নিজেদের বিশ্বাস অনুযায়ী ওই জমিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে উপাসনা করতেন। তাদের বিশ্বাস ওই জমিতেই রাম জন্মেছেন। তাই ওই জমির উপর হিন্দুদের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে বলে মনে করে কোর্ট। এই রায় প্রকাশের কয়েক মাস আগে এক নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বাঙ্গলার সমাজজীবনে শ্রীরামের এত গুরুত্ব আছে বলে মনে করেন না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি পছন্দ করেন না। এই প্রসঙ্গে জীবনের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে রবীন্দ্রনাথের ‘ছেলেবেলা’-র রামায়ণ পড়ার স্মৃতিচারণার কথা মনে পড়ছে— “ব্রজেশ্বরের কাছে সন্ধ্যেবেলায় দিনে দিনে শুনেছি কৃত্তিবাসের সাত কাণ্ড রামায়ণটা। সেই পড়ার মাঝে মাঝে এসে পড়ত কিশোর চাটুয্যে। সমস্ত রামায়ণের পাঁচালি ছিল সুরসমেত তার মুখস্থ। সে হঠাৎ আসন দখল করে কৃত্তিবাসকে ছাপিয়ে দিয়ে হু হু করে আউড়িয়ে যেত তার পাঁচালির পালা—ওরে লক্ষ্মণ এ কী অলক্ষণ, বিপদ ঘটেছে বিলক্ষণ।” হাস্যরসমিশ্রিত স্মৃতিচারণ হলেও বাঙ্গলার জনমানসে শ্রীরামের প্রভাব নিয়ে এরপর বোধ হয় আর কিছু না বলাই ভালো।
ঘটনা হলো, এদেশে যারা নিজেদেরকে ‘লেফট-লিবারাল ও সেকুলার’ বলে জাহির করেন তারা এবং অহিন্দু ভারতবাসীদের অধিকাংশ শ্রীরামচন্দ্রকে আদি ও আদর্শ রাষ্ট্রপুরুষ বলে মনে করেন না। রামমন্দির নির্মাণ এই দেশের পরিচিতি (Identity), ঐতিহ্য, স্বাধীনতা ও বিজয় গৌরবের প্রতীক। উপাসনা পদ্ধতি বা রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তনে যে জাতির সংস্কৃতিক বা জাতীয়তার পরিবর্তন হয় না—এই সত্যটি তাঁরা স্বীকার করতে রাজি নন। এই প্রসঙ্গে পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার দুই রাষ্ট্রদূতের মধ্যে এক আলাপচারিতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করা যেতে পারে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ইন্দোনেশিয়া কী করে মুসলিম দেশ হয় ? কেননা ইন্দোনেশিয়ার এয়ারওয়েজের নাম গরুড় এয়ারওয়েজ, টাকায় গণেশের মূর্তি, এখানকার সংসদ ভবনের সামনে মনুর স্ট্যাচু যার নীচে লেখা ‘ফার্স্ট ল’ গিভার অব দ্য ওয়ার্ল্ড’, এমনকী সেদেশে রামায়ণ উৎসব হয়। প্রত্যুত্তরে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেছিলেন, ‘সাম সারকামটেন্সেস উই চেঞ্জড আওয়ার রিলিজিয়ন, বাট নট আওয়ার ফোরফাদার্স। একই উদাহরণ গ্রিকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করলেও তারা তাদের পূর্বপুরুষ সক্রেটিস, অ্যারিস্টটল, প্লেটো প্রমুখ মনীষীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। আমাদের দেশে তা হয়নি। ধর্মান্তরণের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রীয়তারও পরিবর্তন ঘটে গেছে। তাই শ্রীরাম তাদের কাছে রাষ্ট্রপুরুষ নয়। রামজন্মভূমিতে রামমন্দির নির্মাণের তাই তারা বিরোধী। আজ থেকে একশো বছর আগে দীনেশচন্দ্র সেন ‘রামায়ণী কথা’ নামে একটি গ্রন্থ লিখেছেন। সেই গ্রন্থের ভূমিকা (৫ পৌষ, ১৩১০) লিখতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, “রামায়ণ-মহাভারত ভারতবর্ষের চিরকালের ইতিহাস। অন্য ইতিহাস কালে কালে কতই পরিবর্তিত হইল, কিন্তু এ ইতিহাসের পরিবর্তন হয় নাই। ভারতবর্ষের যাহা সাধনা, যাহা আরাধনা, যাহা সংকল্প, তাহারই ইতিহাস এই দুই বিপুল কাব্যহর্মের মধ্যে চিরকালের সিংহাসনে বিরাজমান।”আর সেই দুই কাব্যহর্মের অন্যতম রামায়ণের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিটি হলেন শ্রীরামচন্দ্র। তাকে কেন্দ্র করেই ঘটনা পরম্পরা আবর্তিত হয়েছে। পুত্র, পতি, ভ্রাতা, বন্ধু, রাজা হিসেবে তার ভূমিকা ও ভাব-ভাবনার কথা ব্যক্ত হয়েছে। এককথায়, ভারতবর্ষ যা চায়, তার মধ্য দিয়েই তা প্রকাশিত হয়েছে। আমাদের জাতি তথা রাষ্ট্রের আশাআকাঙ্ক্ষা, চিন্তা-চেতনার প্রতীক। হয়ে উঠেছেন। এই সূত্রেই তিনি রাষ্ট্রপুরুষ।
স্মরণ রাখতে হবে, মহর্ষি বাল্মীকির কাছে শ্রীরামচন্দ্র মানুষ, দেবতা নন। মহর্ষি একজন সর্বগুণান্বিত মানুষের সন্ধান করছিলেন এবং দেবর্ষি নারদকে সেই মানুষের কথা জিজ্ঞাসা করেছিলেন।উত্তরে নারদ বলেছিলেন একসঙ্গে এত গুণের সমাবেশ ঘটেছে এমন কাউকে তো মনে পড়ছে না। তবে যে নরশ্রেষ্ঠের মধ্যে সদ্গুণের সমাবেশ ঘটেছে, তিনি অযোধ্যার রঘুপতি রাম।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘ভাষা ও ছন্দ কবিতায় বিষয়টি অতি সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন—
কহ মোরে বীর্য কার ক্ষমারে করে না অতিক্রম,
কাহার চরিত্র ঘেরি সুকঠিন ধর্মের নিয়ম…
নারদ কহিলা ধীরে ‘অযোধ্যার রঘুপতি রাম।’ (রবীন্দ্র রচনাবলী ৩য় খণ্ড কবিতা)
ব্যাধের বাণে নিহত ক্রৌঞ্চকে ঘিরে ক্রৌঞ্চীর কাতর বিলাপ দেখে বাল্মীকির হৃদয়ে যে শোকের উদ্রেক ও নিজের অজান্তেই তার মুখ। থেকে শ্লোকাকারে প্রকাশ, তা থেকেই যেন বাল্মীকি রামায়ণের সুত্রপাত। নিষাদের (ব্যাধের) ক্রৌঞ্চবধ যেন রামের জীবনে বারবার ছায়া ফেলেছে। অভিষেকের চরম আনন্দ মুহূর্তে বিনা মেঘে বজ্রাঘাতের মতো বনবাস যাত্রার নির্দেশ, বনবাস শেষে অযোধ্যায় ফেরার প্রস্তুতিপর্বে সীতাহরণ এবং রাজ্যজয়ে সুখের মুখ একটু যখন। দেখছেন, তখন লোকনিন্দার ভয়ে গর্ভবতী সীতাকে বনবাসে প্রেরণ। এই দীর্ঘ জীবনবৃত্তে এত বিপরীত পরিস্থিতিতেও তিনি কখনও মর্যাদার রেখা অতিক্রম করেননি।
ভারতবর্ষের মানুষের কাছে তাই শ্রীরাম ‘মর্যাদাপুরুষোত্তম। মানুষের মধ্যে উত্তম অর্থাৎ মানব জীবনের মহান আদর্শ। তার জীবনের অনেক বেদনাদায়ক ও জটিল পরিস্থিতির মধ্যেও মর্যাদার লক্ষ্মণরেখা কোনওদিন অতিক্রম করেননি। যার মর্যাদা প্রাপ্যতাকে তা দান করেছেন। আদর্শ পুত্র, আদর্শ ভ্রাতা, আদর্শ স্বামী, আদর্শ প্রজানুরঞ্জক রাজা, এমনকী শত্রু হিসেবেও নিজের আচরণ সম্বন্ধে সাবধান থাকতেন, যথাযথ মর্যাদাপূর্ণ আচরণ করতেন।
মন্ত্রবিদ অস্ত্রবিদ ঋষি বিশ্বামিত্র যজ্ঞস্থল রক্ষার জন্য রাজা দশরথের কাছ থেকে রাম ও লক্ষ্মণকে চেয়ে নিয়ে গেছিলেন। বিশ্বামিত্র রামকে দীক্ষা দিয়ে বলা ও অতিবলা’ নামে দুটি মন্ত্র দান করলেন। তখন রাম আর রাজপুত্র নন, একান্ত অনুগত শিষ্য। বিশ্বামিত্রের আদেশ মান্য করে স্ত্রীজাতি অবধ্য হলেও বধ করলেন অত্যাচারিণী তাড়কা রাক্ষসীকে। পরে মারীচ, সুবাহু ও অন্যান্য রাক্ষস যজ্ঞস্থল অপবিত্র করতে এলে রামের শরাঘাতে নিহত হলো।বিশ্বামিত্র রামকে আশীর্বাদ করে বললেন, তুমি গুরুবাক্য রক্ষা করেছ, এই সিদ্ধাশ্রমের নাম সার্থক হলো। নিজের জীবনকে বিপন্ন করেও শ্রীরাম কর্তব্যপরায়ণ এবং গুরুদেবের প্রতি মর্যাদারক্ষাকারী। বন্ধুদের প্রতিও শ্রীরাম তার জীবনে অপূর্ব মর্যাদা স্থাপন করেছেন। বশিষ্ঠপুত্র সুযজ্ঞ, নিষাদরাজ গুহক, জনজাতি বানররাজ সুগ্রীব—সকলের সঙ্গে রামচন্দ্র বন্ধুত্বের মর্যাদা দেখিয়েছেন।
মহর্ষি বাল্মীকির আশ্রমে সীতার অবস্থানকালে রামচন্দ্র অশ্বমেধ যজ্ঞ করেছিলেন। শাস্ত্রবিধি অনুসারে গৃহস্থ যজমান সস্ত্রীক যজ্ঞে ব্রতী হবেন। কিন্তু রাম আবার বিবাহ না করে সীতার স্বর্ণময়ী মূর্তি পাশে বসিয়ে যজ্ঞে ব্রতী হয়েছিলেন। স্ত্রীর প্রতি মর্যাদা স্থাপনের এমন দৃষ্টান্ত বিরল। আজীবন সীতার প্রতি রামের প্রেম ও মর্যাদাবোধ ছিল অটুট। সমাজে স্ত্রীর প্রতি মর্যাদা স্থাপনের জন্য বরণ করেছিলেন একপত্নীব্রত। রামচন্দ্রের স্মরণে ছিল যে তার পিতা দশরথ বৃদ্ধ বয়সে কৈকেয়ীর পাণিগ্রহণ করে যে সমস্যার বীজ বপন করেছিলেন, সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি তিনি করবেন না। কেননা, তার কাছে নিজের সুখ, পরিবার প্রীতির চেয়ে অনেক বড়ো ছিল আদর্শ রাজ্যশাসন। তার রাজ্য প্রতিষ্ঠিত ছিল সত্যের ভিত্তিতে। শ্রীরামচন্দ্রের সেই সত্যনিষ্ঠার মর্যাদা আজও আমাদের মধ্য দিয়ে চলেছে। ভারতবর্ষের প্রতীক অশোক স্তম্ভের নীচে ‘সত্যমেব জয়তে তার প্রমাণ।
শিষ্য হিসেবে যেমন, পুত্র হিসেবেও তাঁর আচরণ লক্ষ্য করার মতো।রামের রাজ্যাভিষেকের সকল আয়োজন যখন সম্পূর্ণ, তখনই কৈকেয়ীর কাছে চৌদ্দ বছর বনবাসে যাওয়ার রাজাজ্ঞা শুনলেন। এই নিষ্ঠুর আদেশ শুনেও রামের শোক বা বেদনা হলো না—‘ইতীব তস্যাঃ পুরুষং বদন্ত্যাং ন চৈব রামং প্রবিবেশ শোকম্। (বাল্মীকি রামায়ণ, অযোধ্যা)। মুহূর্তকাল নিশ্চল থেকে অবিকৃতচিত্তে বললেন—
—তাইই হোক, জটাচীর ধারণ করে রাজাজ্ঞা পালনের জন্য বনবাসী হবো ‘—এবমস্তু গমিষ্যামিবনং।
পুত্র হিসেবে রাম পিতার প্রতিজ্ঞা পালনের ভার নিয়েছেন। বলেছেন—“অতীয়াৎ সাগরো বেলাং ন প্রতিজ্ঞামহং পিতুঃ।” —(অযোধ্যাকাণ্ড, ১১২-১৮) সমুদ্র যদি বেলাভূমি অতিক্রমও করে, তবুও পিতার আজ্ঞা লঙ্ঘন করতে পারব না।
অযোধ্যাকাণ্ডে বনবাস যাত্রার সময় সবাই যখন অধৈর্য—শোকাকুল, ক্রেধোন্মত্ত, তখন রামচন্দ্র অপূর্বরূপে সংযমী, ত্যাগপরায়ণ। তার কর্তব্যনিষ্ঠা অপরকে ত্যাগ স্বীকারে প্রণোদিত করেছে।
শ্রীরাম ছিলেন প্রজাবৎসল। বনবাসে যাওয়ার আগে তার নিজস্ব। যা কিছু ধনসম্পত্তি ছিল সেগুলি লক্ষ্মণের মাধ্যমে বিবিধজনকে দান। করেছেন। বনবাস যাত্রাকালে অযোধ্যার সীমা পর্যন্ত আবালবৃদ্ধ প্রজারা রামের পশ্চাতে চলেছিল—“রামমেবাভিদুদ্রার ঘর্মাতঃ সলিলং যথা।’ (বা. রা)
শ্রীলঙ্কা বিজয়ের পর অপহৃতা সীতাকে উদ্ধার করে বনবাস শেষে। শ্রীরামচন্দ্র অযোধ্যায় ফিরলেন এবং রাজ্য লাভ করে পরম আনন্দে প্রজাপালন করতে লাগলেন। রামের রাজত্বকালে প্রজাদের মধ্যে শুধু রাম, শুধুমাত্র রামের কথাই কীর্তিত হতো—‘রামো রামো রাম ইতি প্রজানামভব কথাঃ (যুদ্ধকাণ্ড ১২৮)
রামরাজ্যে গণতন্ত্র একজন মানুষ, একটি ভোট— এরকম। অধিকার ছিল কিনা সেটা বড়ো কথা নয়, মানুষ সুখে ছিল কিনা সেটাই বড়ো কথা। রাজা মনে করতেন প্রজারা অসুখী হলে সেই অপরাধের দায় রাজার উপরে এসে পড়ে। আমরা যাকে এখন সুস্থ জীবন বলি, তার যুগের মানদণ্ডে রামরাজ্যে তা ছিল। রামরাজ্য রাষ্ট্র ব্যবস্থার আদর্শ একথা গান্ধীজী বারবার বলেছেন। যে রাজার রাজত্বে এই আদর্শ স্থাপিত হয়, তিনিই তো প্রকৃত রাষ্ট্রপুরুষ। সেই দিক থেকে রামচন্দ্র প্রতিযুগেই শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রপুরুষের আদর্শ।
শ্রীরামচন্দ্র প্রতাপশালী রাজা ছিলেন, কিন্তু কখনও পররাজ্য দখলের ইচ্ছা তার ছিল না। শ্রীলঙ্কা জয় করার পর তিনি লঙ্কার সিংহাসনে বিভীষণকে বসিয়েছেন। তিনি নিজের মাতৃভূমি ভারতবর্ষকেই জননী ও স্বর্গাদপি গরীয়সী বলে মনে করতেন।তথাগত বুদ্ধ তার মুক্তির জন্য স্ত্রীকে ত্যাগ করেছিলেন। আর শ্রীরাম প্রজাদের কল্যাণের জন্য স্ত্রীকে ত্যাগ করেছিলেন। রাক্ষস, বানর, চণ্ডাল, শবর প্রভৃতি রাজ্য নিজের শাসনাধীনে না এনে মিত্রতাসূত্রে আবদ্ধ করেছিলেন। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের এক অনন্য নজির গড়ে তোলেন।
যারা শ্রীরামকে যিশু বা বুদ্ধের মতো ‘রিয়াল’ নন বলে মনে। করেন, তাদের আর একবার রবীন্দ্রনাথের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া যেতে পারে। “রামায়ণ সেই নরচন্দ্রমারই কথা, দেবতার কথা নহে। রামায়ণে দেবতা নিজেকে খর্ব করিয়া মানুষ করেন নাই, মানুষই নিজগুণে দেবতা হইয়া উঠিয়াছেন।” তাই শ্রীরাম ভারতীয় রাষ্ট্রজীবনের আদি ও আদর্শ রাষ্ট্রপুরুষ। শ্রীরামচন্দ্রের জীবনাদর্শ সকল ভারতীয়রই অনুকরণযোগ্য। সুপ্রিম কোর্ট এই ভাবাদর্শকেই স্বীকৃতি জানিয়েছে।
বিজয় আঢ্য
2019-11-22