পশ্চিমবঙ্গ কেন চাই

হ্যাঁ, পশ্চিমবঙ্গ কেন চাই? পশ্চিমবঙ্গ তো আমাদের আছেই। তাহলে? অথবা প্রশ্নটাকে ঘুরিয়ে এভাবেও করা যায়— পশ্চিমবঙ্গ গঠন করতে হয়েছিল কেন?ইদানীং পশ্চিমবঙ্গে এই প্রশ্ন জলের মতো ঘুরে ঘুরে একই কথা কেন বলে যায় ? হা, সত্যিই কেন আমরা পশ্চিমবঙ্গ চাই অথবা এই পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই একথা পুনরুচ্চারণ করা বিশেষ দরকার হয়ে পড়েছে। কেন বঙ্গপ্রদেশ ভাগ করতে হয়েছিল তা বিশ্লেষণ করলেই কেন পশ্চিমবঙ্গ চাই সে কথার উত্তর পেয়ে যাব আমরা। কিন্তু তার আগে খুব সংক্ষেপে একটু বলে নিতে চাই আমরা ‘বাঙ্গালি’কাকে বলব। এখানে আমরা বাঙ্গালির নৃতাত্বিক সংজ্ঞা অনুসন্ধান না করে সাধারণভাবে ‘বাঙ্গালি’বলতে আমরা কী বুঝি সেটাই বলছি।

ভাষাচার্য ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, “বেদের সময় থেকেই যখন ঋষিতার এই ঋকমন্ত্র রচনা করেছিলেন— “একম সদ বিঃ বহুধা বদন্তি’ (যা আছে তা এক, ধীমান লোকেরা তাকে বহু বলে), তখন থেকেই এই সমন্বয়ের একটা সচেতন প্রয়াস আমরা দেখতে পাই।” বাস্তবে, আর্য-অনার্য সম্মিলনেই হিন্দুত্বের, হিন্দু জীবনবোধের সৃষ্টি হয়েছে। বাঙ্গালির এই জীবনবোধ আধুনিককালে শুরু হয়েছে রামমোহন রায়ের উপনিষদের ব্রহ্মবাদকে নতুনভাবে আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে। ক্রমান্বয়ে এই ধারায় মিশেছে রাজনারায়ণ বসুর ‘হিন্দুধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব বক্তৃতা, শ্রীরামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দের সাধনা ও তাদের বাণী ও রচনা, বঙ্কিমচন্দ্রের চিন্তা ও রচনা এবং স্বদেশপ্রেম। বাঙ্গালির আশা ও আকাঙ্ক্ষা, আত্মবোধ, স্বদেশপ্রেম বঙ্কিমচন্দ্রের রচনায় আত্মপ্রকাশ করলো। কিন্তু ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের ভাষায়, “বাঙালি হিন্দুর যে আদর্শ, যে আশা-আকাঙ্ক্ষা এতদিন ধরিয়া তাহার জীবনের সব চেষ্টায় ও তাহার সাহিত্যে আত্মপ্রকাশ করিয়াছে। বাঙ্গলার বহু মুসলমান এখন আত্মাভিমান হইয়া সেই আদর্শ ও সে সকল আশা ও আকাঙ্ক্ষাকে তাহার ধর্মের অনুমোদিত আধ্যাত্মিক আদর্শের এবং তাহার অর্থনৈতিক উন্নতির বিরোধী বলিয়া মনে করিতেছে। অল্পসংখ্যক বিদেশি তুর্কি মুসলমানের বাঙ্গলায় আগমনে ও তাহাদের রাজশক্তির প্রতাবে এবং কচিৎ বিদেশি মুসলমান প্রচারক ও সাধকের প্রভাবে, বাঙ্গলায় হিন্দু ও বৌদ্ধ অনেকে মুসলমান ধর্মকে স্বীকার করায় বাঙ্গালি মুসলমানের উদ্ভব হইল। সাতশত বৎসর ধরিয়া বাঙালি মুসলমান বাড়িয়া চলিয়া অবশেষে বাঙ্গলায় সংখ্যা-ভূয়ীষ্ঠ সম্প্রদায় হইয়া দাঁড়াইয়াছে।” এটা দেখা গেছে যে, পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তেই মুসলমানরা একবার সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেই বিচ্ছিন্নতাবোধ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। যে দেশ তাঁরা দখল করে সেই দেশে হজরত মহম্মদের মজহব যথেচ্ছ প্রচারের সুযোগ যতদিন থাকে ততদিন তারা সেটাই করে। যেমন ভারতবর্ষে যতদিন সুলতানি ও মোগল শাসন চালু ছিল ততদিন তারা সেই শাসনের সুযোগ ও সাহায্য নিয়ে আগ্রাসীভাবে ইসলামের প্রচার করেছে। হিন্দু ও বৌদ্ধদের অবাধে ধর্মান্তরকরণ করেছে। বাঙ্গলায় সুলতানি ও নবাবিশাসনের সুযোগে অবাধে এই ধর্মান্তর চালিয়ে গেছে তারা। ত্রয়োদশ শতকের শুরু থেকেই এ প্রক্রিয়া চলছে। রাজশক্তির সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে মুসলমান পির, ফকির ও দরবেশদের দিয়ে তারা এ কাজ করেছে। বাঙ্গলায় দীর্ঘ মুসলমান শাসনে তারা ভূমিপুত্র হিন্দুদের উপরে অকথ্য অত্যাচার, ধর্মান্তরকরণ চালিয়ে গেছে। হিন্দুদের তারা ভৃত্য করে রাখাতেই সচেষ্ট ছিল। বহিরাগত ধর্ম, ভাষা (ফারসি ও আরবি) হিন্দুদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় কোনো হিন্দু জমিদার অথবা শক্তিশালী শাসকের আবির্ভাব হলেই তাকে দাবিয়ে রাখা হতো। রাজা গণেশের অভ্যুত্থান এই সাক্ষ্যই দেয়। তাকে দমন করবার জন্য দলবেশ নুর কুতব আলম জৌনপুরের সুলতান ইব্রাহিম শারকিকে চিঠি লিখে বাঙ্গলা আক্রমণ করে রাজা গণেশকে দমন করবার আহ্বান জানান। এ ব্যাপারে জৌনপুরের দরবেশ আশরাফ সিমনানিও তাদের সাহায্য করে। আবার নবাবি আমলের শুরুতে ভূষণার রাজা সীতারাম রায় শক্তিশালী হয়ে উঠলে তাকেও মেনে নিতেও সহ্য করতে পারেনিমুসলমানরা। বাঙ্গলার তৎকালীন দেওয়ান মুর্শিদকুলি খাঁ অন্যান্য হিন্দু জমিদারদের বাধ্যকৃত সাহায্য নিয়ে তার পতন ঘটান। অর্থাৎ বহিরাগত মুসলমান সুলতান ও নবারো কোনো অবস্থায়ই বিন্দুমাত্র হিন্দু প্রাধান্য মেনে নিতে রাজিছিল না। বাঙ্গলায় আরেক বিদেশি ইংরাজদের প্রাধান্য স্থাপিত হবার ফলে হিন্দুরা মুক্তির শ্বাস নেয়। ইংরাজ প্রাধান্যের সময়ে হিন্দুরা শিক্ষাদীক্ষা, চাকরিবাকরিতে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করে। অন্যদিকে দীর্ঘ মুসলমান সুলতানি ও নবাবি শাসন এবং ইংরাজ আমলে মুসলমানরা ‘সুয়োরানি’ সুলভ ব্যবহার পেলেও তারা শিক্ষাদীক্ষা ও আর্থিক উন্নয়নে পিছিয়ে পড়ে নিজেদের গাফিলতি ও অলসতার কারণে। দীর্ঘ ইসলামি শাসনও তাদের উন্নতির সহায়ক হয়নি। এজন্য অবশ্যই তারা নিজেরাই দোষী, দোষী তাদের স্বধর্মীয় সুলতান ও নবাবেরা।।

সাধারণ্যে একটা কথা প্রচলিত আছে, Divide et Empera বা ভাগ করে শাসন করার নীতি ইংরাজরা চালু করেছিল। এ কথাটা আংশিক সত্য হলেও সম্পূর্ণ সত্য নয়। এ দেশে বিভেদনীতি চালু করেছিল মুসলমান শাসকরা। তারা এদেশে এসে শাসন করেই ক্ষান্ত হয়নি; এদেশের ধর্ম, সংস্কৃতি, ভাষা ইত্যাদি সবকিছুর উ পরে তাদের আগ্রাসন চালিয়েছে। কালাপাহাড়ীয় নির্মমতায়। কিছুই তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। যতদিন তারা আশ্বস্ত ছিল যে তাঁরা এই দার-উল-হরব-কে নিজেরাই দার-উল-ইসলামে পরিণত করতে পারবে ততদিন তারা এই দেশ খণ্ডিত করার কথা ভাবেনি। কিন্তু ইংরেজ শাসনের শেষপ্রান্তে এসে। যখন তারা বুঝতে পারল, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই দেশের শাসনব্যবস্থা হিন্দুদের হাতে যাবে তারা প্রমাদ গুনল। আর এই ভাবনা ১৮৫৭-র মহাবিদ্রোহের ব্যর্থতার পরেই তাদের চিন্তায় এসেছিল। দেওবন্দপন্থী উলেমারা দেশভাগ করার কথা না ভেবে তখনো সারা ভারতকেইইসলাম অধ্যুষিত করার চিন্তায় মশগুল থাকলেও আলিগড় অ্যাংলোওরিয়েন্টাল অ্যাকাডেমি যা পরবর্তীকালে আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটিতে পরিণত তার প্রতিষ্ঠাতা স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁ কিন্তু বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এবং মুসলমান স্বাধিকারের পক্ষে আন্দোলন শুরু করলেন। যাইহোক, মুসলমান বিচ্ছিন্নতাবাদের বিষবৃক্ষ বপন এখানেই হয়।।

এই আলিগড় আন্দোলনেরই ফসল মহম্মদ আলি জিন্না ও তার দোসরেরা। দীর্ঘ মুসলমান শাসন যে এদেশে বিভেদের বীজ বপন করেছিল তা অনেক মুসলমান নেতাই প্রকাশ্যেই স্বীকার করেছে। স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁ কংগ্রেসের স্বাধীনতার দাবির সঙ্গে একমত হতে পারেননি। তার তো মনে হয়েছিল স্বাধীন, গণতান্ত্রিক ভারতবর্ষ গঠিত হবার চেয়ে ইংরেজ শাসনই ভালো। আবার মুসলিম নেতা ভিকর-উল-মুলুক বলেছিনে,“ আল্লাহ না করুন ভারতে যদি ইংরেজ শাসনের অবসান হয় তাহলে হিন্দুরা প্রভুত্ব করবে আর আমরা আমাদের জীবন, সম্পদ ও সম্মানের জন্য সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকব। এই বিপদ থেকে বাঁচবার একমাত্র উপায় হলো ব্রিটিশ শাসনকে বজায় রাখতে সাহায্য করা” (India’s Struggle for Independence, 18571947– Bipan Chandra & Others) আবার গোলটেবিল বৈঠকে যোগদানকারী মুসলমান নেতা মৌলানা মহম্মদ আলি তো পরিষ্কার স্বীকার করে নিয়েছেন যে, এদেশে ভাগ করে শাসন করার হোতা তারাই। ওই বৈঠকে আসীন ইংরেজ শাসকদের উদ্দেশ্যে তাঁর মন্তব্য, ‘We divide and you rule.’ আবার তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের আইনি ও সংবিধান উপদেষ্টা এইচ ভি হডসন তার The Great Divide’গ্রন্থে লিখেছেন, “It is not possible to divide and rule unless the ruled are ready to be divide.” Francia রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও এক জায়গায় বলেছেন, “হিন্দু-মুসলমান সম্বন্ধ লইয়া আমাদের দেশের একটা পাপ আছে, এ পাপ অনেকদিন হইতে চলিয়া আসিতেছে।ইহার যা ফল তাহানা ভোগ করিয়া আমাদের কোনো মতেই নিষ্কৃতি নাই।” আবার অন্যত্র তিনি বলেছেন, “আর মিথ্যা কথা বলিবার কোনো প্রয়োজন নাই। এবার আমাদিগকে স্বীকার করিতেই হইবে হিন্দু-মুসলমানের মাঝখানে একটা বিরোধ আছে। আমরা যে কেবল স্বতন্ত্র তাহা নয়। আমরা বিরুদ্ধ।”

অর্থাৎ বিভেদটা ছিলই, স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রাক্কালে মুসলিম লিগ সেই বিভেদটাকে আরও বাড়িয়ে দেয়, বিষময় করে তোলে। গান্ধীজী অসহযোগ আন্দোলনকে খিলাফতের সঙ্গে যুক্ত করে তাতে ঘৃতাহুতি দেন। বিশের দশকের শুরুতে অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে খিলাফত আন্দোলনকে জুড়ে গান্ধীজী মুসলমানদের হৃদয় স্পর্শ করতে চেয়েছিলেন। যদিও ধর্মের সঙ্গে রাজনীতির এই সংমিশ্রণ সেই সময়ে অনেকেই খুশি মনে মেনে নিতে পারেনি। প্রচুর সমালোচনা হয়েছিল সেই সময়। কিন্তু ইতিহাসের প্রতিকূল স্রোতে হার মানতে হয়েছিল গান্ধীজীকে। কিন্তু ধর্মের সঙ্গে রাজনীতির এই অশুভ মিলন মুসলমান সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে এক দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলল। যেই না খিলাফত আন্দোলন প্রত্যাহৃত হলো এবং তুরস্কে খিলাফত পদটাই উঠে গেলো, গান্ধীর হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের সেই ভিত তখনই ভেঙে পড়লো। সেই ভাঙা সেতুকে জোড়া লাগানো আর গান্ধী মহারাজের পক্ষেও সম্ভব হয়নি। এর পরে আর মুসলমানরা কংগ্রেসের দিকে ফিরেও তাকায়নি।

এই ঘটনা এবং কংগ্রেসের বিশেষ করে গান্ধী ও জওহরলাল নেহরুর নানা ভুল সিদ্ধান্ত মুসলিম লিগকে শক্তিশালী হতে সাহায্য করে। মহম্মদ আলি জিন্নার নেতৃত্বে মুসলিম লিগ ধারাবাহিকভাবে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ না দিয়ে দেশভাগ অবশ্যম্ভাবী করে তুলতে নানা বিভেদমূলক কর্মপন্থা ও দাঙ্গাহাঙ্গামার পথ গ্রহণ করে।।

ভারতব্যাপী মুসলিম লিগের এই বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ধ্বংসাত্মক কার্যাবলীর অংশ হিসেবে বাঙ্গলায়ও নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে লিগ ও তার নেতারা। চল্লিশের দশকের শেষ দিকে অন্যান্য কর্মসূচি ছাড়াও মুসলিম লিগ বাঙ্গালি মুসলমানদের কাছে প্রচার শুরু করে যে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি মুসলমান ধর্মবিরোধী। সুতরাং প্রকৃত মুসলমানদের কাজ হবে উর্দু ভাষা ব্যবহার করা এবং ইসলাম তথা আরবি সংস্কৃতি গ্রহণ করা। এছাড়া বাংলার মধ্যে প্রচুর উর্দু ও আরবি শব্দের অনুপ্রবেশ করানো হলো। বাঙ্গলার নানা প্রান্তে ‘উর্দু অ্যাকাডেমি’গড়ে তুলে বাংলা ভাষা বিরোধী প্রচার শুরু হলো। সেই সময়ে ড. শ্যামাপ্রসাদ জিন্নাও তার লিগপন্থী সাগরেদদের এই প্রচার মেনে নিতে পারলেন না। তিনি হিন্দু-মুসলমান ঐক্যপন্থী এবং বাঙ্গলা ও বাঙ্গালির উন্নতিতে আস্থাশীল (যদিও দোদুল্যমান) নেতা এ কে ফজলুল হকের সঙ্গে যৌথভাবে এই উর্দু আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়ালেন। তাদের দুজনের উদ্যোগে ও অনুপ্রেরণায় গড়ে উঠল ‘বেঙ্গলি প্রোটেকশন লিগ’ নামে এক সংস্থা। এটির প্রতিষ্ঠাকাল, সেপ্টেম্বর ১৯৩৬ সাল। তারা প্রচার করলেন, বাঙ্গালি মুসলমানেরা যেন উর্দুভাষীদের প্রচারে বিভ্রান্ত না হন। তাঁদের এই উদ্যোগ সফল হয়েছিল। এখানে উল্লেখ্য যে, পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রশ্রয়ে ও সমর্থনে তাঁরই দলের কাউন্সিলারদের উদ্যোগে কলকাতার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বাঙ্গলাকে বাদ দিয়ে বিভিন্ন রাস্তার নামফলকে কেবলমাত্র উর্দু ও ইংরেজি ব্যবহার করা হচ্ছে। বিভিন্ন বিদ্যালয়ে উর্দুভাষী ছাত্র না থাকলেও উর্দু শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে।

বাঙ্গলার মুসলিম লিগ নেতৃবৃন্দ যথা এইচ এস সোহরাওয়ার্দি, আবুল মনসুর আহমেদ ও অন্যান্যরা তাদের ইঙ্গিত পাকিস্তান প্রাপ্তির লক্ষ্যে নানাস্থানে দাঙ্গাহাঙ্গামা শুরু করে হিন্দুদের ভীত-সন্ত্রস্ত করে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করল। এই ধরনের একটা বড়ো পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রথমে কলকাতায় ও পরে নোয়াখালিতে হিন্দু হত্যায় মেতে উঠে। ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট ভোরবেলা থেকেই তারা হিন্দুদের ওপর আক্রমণ শুরু করে দেয়। খুব ভোরেই হাওড়ার ঘুসুড়ি থেকে সশস্ত্র মুসলমান গুন্ডাবাহিনী গঙ্গা। পেরিয়ে কলকাতায় প্রবেশ করে আক্রমণ শুরু করে। এই হিন্দুহত্যা একনাগাড়ে তিনদিন চলে। অমানবিক বীভৎসতায় মানুষের রক্তে কলকাতার রাস্তাঘাট লাল হয়ে যায়। তৎকালীন বাঙ্গলার প্রধানমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দি পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স লালবাজারে বসে হিন্দুদের ওপর এই হামলা পরিচালনা করেন। এটা যে লিগের পরিকল্পিত আক্রমণ ছিল তার অনেক তথ্য প্রমাণ বিদ্যমান। এরপরে, ওই একই সালের ১০ অক্টোবর, লক্ষ্মীপূজার দিনে মুসলিম লিগ গুন্ডা গোলাম সারোয়ারের নেতৃত্বে নোয়াখালিতে এক বীভৎস, একতরফা হিন্দু নরসংহার শুরু হয়। পরিকল্পিতভাবে।

আসলে এসবেরই লক্ষ্য বাঙ্গলার হিন্দুদের সন্ত্রস্ত করে মুসলিম লিগের যে কোনো দাবি মেনে নিতে বাধ্য করার প্রয়াস। স্বাধীনতার সময়ে সাধারণ বাঙ্গালি হিন্দুরা কোনো অখণ্ড, স্বাধীন, সার্বভৌম বাঙ্গলার স্বপ্ন দেখেনি। তারা ভারতবিচ্ছিন্ন কোনো বাঙ্গলার কথা ভাবেওনি, তারা অখণ্ড ভারতের উত্তরাধিকারই চেয়েছিলেন। কিন্তু দেশভাগ ও স্বাধীনতার প্রাক্কালে হঠাৎই তঁারা শুনল, কয়েকজন নেতা স্বাধীন, সার্বভৌম, অখণ্ড বাঙ্গলার স্বপ্ন ফেরি করতে শুরু করেছে। বাঙ্গলাকে অখণ্ড রেখে ভারত ও পাকিস্তানের বাইরে একটা স্বতন্ত্র দেশ হিসেবে বাঙ্গলাকে গণ্য করতে চাইছে। এই প্রস্তাবের পেছনে ছিলেন বাঙ্গলার তিন প্রভাবশালী নেতা। এঁরা হলেন, হাসান সাইদ সোহরাওয়ার্দি, লিগ নেতা আবুল হাশিম ও শরৎচন্দ্র বসু। পরে এঁদের সঙ্গে যুক্ত হন। কিরণশঙ্কর রায় ও যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল। যদিও শেষোক্ত দুজন পরে এই পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছিলেন। এঁদের মধ্যে কলকাতা নরসংহারের কুখ্যাত নায়ক সোহরাওয়ার্দি সম্পর্কে অনেকেই সন্দেহ পোষণ করতেন। তার কিছুমাত্র বিশ্বাসযোগ্যতা ছিল না—না তার দল মুসলিম লিগের কাছে না হিন্দুদের কাছে। গভর্নর জেনারেল মাউন্টব্যাটেন এবং বাঙ্গলার গভর্নর বারোজ দুজনেই তাকে সন্দেহ করতেন। প্রায় সাড়ে সাতশো বছর নিজেদের অর্থাৎ মুসলমান শাসন এবং দুশো বছরের ইংরেজ শাসনে শাসকদের তাদের প্রতি বিশেষ পক্ষপাতিত্ব সত্ত্বেও মুসলমানেরা বিশেষ উন্নতি করতে পারেনি, কিন্তু দেশের শাসনের ওপর কর্তৃত্ব করবার ইচ্ছে তাদের ষোলোআনা ছিল। আর ইচ্ছে ছিল হিন্দুদের ওপর কর্তৃত্ব করা ও তাদের ওপর দমন পীড়ন চালানো। ১৯৪৬ এর ১৬ আগস্টের দাঙ্গাও এই পরিকল্পনারই অঙ্গ। তারা এই দিনটিকে ‘Direct Action Day af Day of Delivereance at forebrofnary হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। এক্ষেত্রে প্রশ্ন আসে, কাদের কাছ থেকে নিষ্কৃতি চাইছিল মুসলিম লিগ? মৌলানা আজাদের মতে, তাঁরা হিন্দুদের কাছ থেকে নিষ্কৃতি চাইছিল এটা পরিষ্কার। বস্তুত এটা ছিল লিগ ও লিগের গুন্ডাদের একটা পরীক্ষামূলক অভিযান। কিন্তু এই নরসংহার হিন্দুদের মধ্যে মুসলমানদের সম্পর্কে এক দূরপনেয় সন্দেহ ও অবিশ্বাস তৈরি করে দেয়। বাস্তব অভিজ্ঞতায় হিন্দুদের এই বোধ হয় যে, মুসলমানদের সঙ্গে আর একসঙ্গে বসবাস করা সম্ভব নয়। এই ঐতিহাসিক সত্য তারা ভুলতে পারেনি। মুসলিম লিগ ও জিন্না চেয়েছিল সমগ্র বঙ্গপ্রদেশকেই তার প্রস্তাবিত পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করতে। এ ব্যাপারে তার দোসর ও সহায়ক ছিল সোহরাওয়ার্দি । সুতরাং জিন্না যখন পাকিস্তান আদায়ের ব্যবস্থা পাকা করে ফেললেন তখন তার দোসর সোহরাওয়ার্দি মুসলিম লিগের প্রক্সি প্ল্যান United, Independent, Sovereign Bengal বা অখণ্ড, স্বাধীন, সার্বভৌম বাঙ্গলার প্রস্তাব সামনে নিয়ে এলেন। যদিও এই প্রস্তাবটি বাঙ্গলার কোনো অংশেরই সমর্থন পায়নি।

এমতাবস্থায় তৎপর হয়ে উঠলেন বাঙ্গলার হিন্দু নেতারা। ড.শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় তো ছিলেনই, সঙ্গে পেলেন হিন্দু মহাসভার নেতা নির্মল চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সনকুমার রায়চৌধুরী, সূর্যকুমার বসু প্রমুখ ব্যক্তিকে। বাস্তবে ১৯৪৬-এর ব্যাপক নরসংহারের সময়েই মুসলমানদের হাত থেকে হিন্দুদের রক্ষা করবার জন্যই হিন্দু মহাসভা এই দাবি করে। আর সোহরাওয়ার্দির নেতৃত্বে লিগ মন্ত্রীসভা নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়াতেই হিন্দুদের মধ্যে এই দাবির প্রতি সমর্থন ক্রমান্বয়ে বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে ১৯৪৭ সালের ৪ এপ্রিল তারকেশ্বরে হিন্দু মহাসভারতিনদিনের সম্মেলন শুরু হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, হিন্দু মহাসভা ভারতের মধ্যেই দুটি রাজ্য—হিন্দুপ্রধান পশ্চিমবঙ্গ এবং মুসলমানপ্রধান পূর্ববঙ্গ চেয়েছিল। মহাসভার ওই সম্মেলনে ৫ এপ্রিল শ্যামাপ্রসাদ তাঁর ভাষণে বললেন, “I can conceive of no other solution of the communal problem in Bengal than to divide the province and let the two Major communities residing herein live in peace and freedom.” Î69315 যে, শ্যামাপ্রসাদের এই বক্তব্যে কোনো সাম্প্রদায়িক সুর ছিল না। বরং কলকাতা ও নোয়াখালি দাঙ্গার মাধ্যমে মুসলিম লিগ প্রস্তাবিত পাকিস্তান হিন্দুদের কাছে কেমন হতে পারে তার একটা আস্বাদ দেবার যে চেষ্টা করেছিল তা থেকে হিন্দুদের মুক্তি দেবার চেষ্টা ছিল এই প্রস্তাবে। প্রায় একই সময়ে ৪ এপ্রিল বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির সভায় ‘বঙ্গবিভাগের’প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সেই সভায় বিশেষ আমন্ত্রিত হয়ে উপস্থিত ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ক্ষিতীশচন্দ্র নিয়োগী, ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়, নলিনীরঞ্জন সরকার, ড. পি এন বন্দ্যোপাধ্যায়, কুমার দেবেন্দ্রলাল খাঁ, মাখনলাল সেন ও অতুলচন্দ্র গুপ্ত। শ্যামাপ্রসাদ বলেন, “This separation must not be dependent on Pakistan. Even if Pakistan is not conceded and some form of a weak and loose centre encisaged in the Cabinet Mission Scheme is accepted by the Muslim League, We shall demand the creation of a new province composed of the Hindu Majority areas in Bengal.” এছাড়াও সেই সময়ে ‘পশ্চিমবঙ্গ’ গঠনের জন্য বাঙ্গলার ঐতিহাসিক, বৈজ্ঞানিক, ভাষাবিদ, আইনজ্ঞ-সহ সর্বস্তরের বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষ এগিয়ে আসেন। সেই সময়কার সেক্রেটারি অব স্টেট ফর ইন্ডিয়া লর্ড লিস্টওয়েলের কাছে পশ্চিমবঙ্গ’ গঠনের জন্য ৭ মে, ১৯৪৭-এ তারবার্তা প্রেরণ করেন বাঙ্গলার পাঁচজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ-বুদ্ধিজীবী — ঐতিহাসিক স্যার যদুনাথ সরকার ও ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার, বৈজ্ঞানিকদ্বয় ড. মেঘনাদ সাহা ও ড. শিশিরকুমার মিত্র এবং ভাষাবিদ ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়। ওই তারবার্তায় তার 66963177, “Education, trade and Industry in Bengal have almost collapsed owing to recurrent riots, causing insecurity of life and property. The present communal Ministry (of H.S. Surawardy) is totally incapable of maintaining law and order. We strongly support the immediate formation of a separate West Bengal province guaranteeing under a noncommunal Ministry, safety of life and unhindered progress in education, industry and commerce, with continuance and development of Calcutta-a vital part of West Bengal, as a moral, intellectual, social and economic centry.” এই একই তারবার্তা তারা Sir Stafford Cripps এবং Sir John Anderson-কেও পাঠান। তাদের এই প্রস্তাবগুলোতে একটা বিষয় পরিষ্কার, তাঁরা ভারতের মধ্যেই বাঙ্গালি হিন্দুদের জন্য একটি আলাদা হিন্দু রাজ্য চেয়েছিলেন, ভারত বহির্ভূত কোনো আলাদা দেশ চাননি। পূর্বোক্ত পাঁচজন বুদ্ধিজীবী ছাড়াও আরও অনেক বিখ্যাত বাঙ্গালি এ ব্যাপারে ড. শ্যামাপ্রসাদকে সাহায্য ও সমর্থন করেন। এঁরা হলেন ঐতিহাসিক ড. সুরেন্দ্রনাথ সেন, কবি ড. অমিয় চক্রবর্তী (এক সময়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের সচিব ছিলেন), বেঙ্গল প্রভিন্সিয়াল ডিগ্রেসড ক্লাস লিগের সম্পাদক আর দাস, আইনবিদ নীহারে দত্তমজুমদার, ক্ষিতীশচন্দ্র নিয়োগী, বিমলচন্দ্র সিংহ, হিন্দু মহাসভার নেতা নির্মল চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (মার্কসবাদী নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের পিতা), মেজর জেনারেল এ সি চট্টোপাধ্যায়, কংগ্রেস নেতা সুরেন্দ্রমোহন ঘোষ, ঋষি অরবিন্দ, কলকাতার তৎকালীন মেয়র এস সি রায়চৌধুরী প্রমুখ বাঙ্গলার বিশিষ্ট ব্যক্তি।।

পূর্ব ও উত্তরবঙ্গের হিন্দুপ্রধান অঞ্চলগুলো পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত করার ব্যাপারে বিশেষভাবে চেষ্টা করেন ঐতিহাসিকদ্বয় স্যার যদুনাথ সরকার ও ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার। তৎকালীন বাঙ্গলার কিছু বৃহৎ জমিদারও ‘পশ্চিমবঙ্গ’ সৃষ্টিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। বর্ধমানের মহারাজা উ দয়াদ মহতাব, কাশিমবাজারের মহারাজা শ্ৰীশ চন্দ্র নন্দী, মহারাজা প্রবেন্দ্রমোহন ঠাকুর, মহারাজকুমার শীতাংশুকান্ত আচার্যচৌধুরী (সিপিএম নেতা স্বর্গত স্নেহাংশু আচার্যের পিতৃদেব) প্রমুখ অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন। জিন্না যে যুক্তিতে ভারত ভাগ করতে চেয়েছিলেন সেই যুক্তিতেইশ্যামাপ্রসাদ বাঙ্গলা ভাগ করতে চেয়েছিলেন। ফলে কেন্দ্রীয় কংগ্রেস ও লিগ এর বিরোধিতা করার যুক্তি খুঁজে পায়নি। কিন্তু জিন্না ও সোহরাওয়ার্দি এঁদের হতাশা গোপন করতে পারেনি। অবস্থা বৈগুণ্যে জিন্নাও শেষ অবধি অখণ্ড বাঙ্গলা প্রস্তাবে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন, কারণ তার অভিসন্ধি ছিল, …an independent Bengal would be a sort of Subsidiary Pakistan…”কিন্তু শ্যামাপ্রসাদের চেষ্টায় তার সে স্বপ্নও অপূর্ণ থেকে গেছে।

এছাড়াও সেই সময়ে ইংরেজি সংবাদপত্র অমৃতবাজার পত্রিকা এক জনমত সমীক্ষার আয়োজন করে যাতে ৯৮ শতাংশ মানুষ হিন্দুদের জন্য বঙ্গবিভাজনের পক্ষে রায় দেন। শেষে ড. শ্যামাপ্রসাদ গভর্নর জেনারেল মাউন্টব্যাটেনকে ১৯৪৭ সালের ২ মে ৯ দফা যুক্তি দেখিয়ে আবেদন করে বঙ্গ বিভাজন’-এর প্রস্তাব কার্যকর করার আহ্বান জানান। তিনি 6160,“Both the provinces should remain within the union of India. If however India is to be divided on communal consideration, partition of Bengal becomes an immediate necessary.” এর এক মাস পরে ১৯৪৭-এর ২ জুন বঙ্গবিভাজন ও দেশভাগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই ২ জুনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী। বাঙ্গলার ব্যবস্থাপক সভার সদস্যরা হিন্দুপ্রধান এলাকা ও মুসলমান প্রধান এলাকা অনুযায়ী আলাদা হয়ে দুটি আলাদা অধিবেশনে সমবেত সদস্য বাদে বাকি সব হিন্দু সদস্য বঙ্গবিভাগের পক্ষে তাদের ভোট দেন। হিন্দু বিধায়কেরা চেয়েছিলেন বাঙ্গলাকে ভাগ করে স্বতন্ত্র ‘পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ গঠন করে বিভক্ত ভারতে হিন্দু বাঙ্গালির জন্য আলাদা বাসভূমি গঠন করতে। সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছিল, আইনসভার অনুমোদনে তার স্বীকৃতি মিলল। সৃষ্টিহলো হিন্দু বাঙ্গালির বাসস্থান পশ্চিমবঙ্গ। ড. শ্যামাপ্রসাদ ভারতের সংসদে নেহরুর সমক্ষে ঘোষণা 7860701, You have divided India, I have divided Pakistan.

বড়ো অশান্ত সময় চলছে শ্যামাপ্রসাদের এই পশ্চিমবঙ্গে। এখানকার রাজ্য সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে এই রাজ্যে এখন একদিকে সোহরাওয়ার্দির আদর্শকে সামনে রেখে এক বৃহত্তর ইসলামিক বাঙ্গলা গঠনের প্রয়াস চলছে। অন্যদিকে এখানকার ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর চলছে উর্দুভাষীদের আগ্রাসন। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন অংশ, মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও উত্তর দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন অংশে সশস্ত্র মুসলমান গুন্ডাদের তাণ্ডব চলেছে। আবার মধ্যবঙ্গে সিরাজ-উদ-দৌলাকে সামনে রেখে এক নবাবিবাঙ্গলার খোয়াব দেখছে কেউ কেউ। পশ্চিমবঙ্গের অহিন্দু জনসংখ্যা ক্রমবর্ধমান। তাই এই খোয়াব প্রতিহত করবার সময় হয়েছে। উচৈঃস্বরে বলার সময় এসেছে, আমরা পশ্চিমবঙ্গকে নষ্ট হতে দেবনা। আমরা ড. শ্যামাপ্রসাদের সৃষ্ট হিন্দু বাঙ্গালির বাসস্থান পশ্চিমবঙ্গকে চাই, তাকে বুক দিয়ে আগলে রাখবই।

বিনয়ভূষণ দাশ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.