বেঙ্গালুরুর দাঙ্গা কী পূর্ব পরিকল্পিত?


জন্মাষ্টমীর প্রাক্কালে বেঙ্গালুরুতে দাঙ্গা করল মুসলমানরা। ঘটনার সূত্রপাত হয়। স্থানীয় দলিত কংগ্রেস নেতা তথা এমএলএ অখণ্ড শ্রীনিবাস মুর্তিজীর নিকট আত্মীয়ের একটি ফেসবুক পােস্টকে কেন্দ্র করে। ফেসবুক পােস্টে ওই ব্যক্তি মুসলমানদের নবির (মহম্মদের বয়স তখন বাহান্ন) ৬ বছর বয়সী আয়েশাকে বিয়ে করার ঘটনাকে মানবতাবিরােধী বলে উল্লেখ করে। তার। আগে এক মুসলমান শ্রীকৃষ্ণকে লম্পট হিসেবে বর্ণিত করে চূড়ান্ত ভুল ও অশ্লীল ছবি পােস্ট করে। তার উত্তরে এই পােস্ট। মত প্রকাশের স্বাধীনতার অপপ্রয়ােগ ঘটনানাের অপরাধে মুসলমানদের অভিযােগের ভিত্তিতে তৎক্ষণাৎ ওই পােস্টকারী তথাকথিত দলিত হিন্দুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু গ্রেপ্তারের পরেও মুসলমানরা বিক্ষোভের নামে কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট করে। দলিত-মুসলমান ঐক্য যে কতবড়াে প্রবঞ্চনা তা এই ঘটনা থেকে আরা একবার প্রমাণিত হলাে। সেই পােস্টের অজুহাতেমুসলমানরা দলিত বিধায়কের বাড়িতে আক্রমণ করে এবং পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়। ফায়ার বিগ্রেড এলে, মুসলমানরা সেই ফায়ার ব্রিগেডের গাড়িও জ্বালিয়ে দেয়। মুসলমানরা নিকটস্থ থানায় প্রবেশ করে এবং পুলিশের যানবাহনে অগ্নিসংযােগ করে, পুলিশ কর্মকর্তাদের উপর পাথর নিক্ষেপ করে এবং থানায় লুটপাট চালায় যথেচ্ছ। প্রতিটি মুসলমান পাথর, ছুরি, পেট্রোল, কেরােসিন ইত্যাদি দিয়ে সুসজ্জিত ছিল। এক ঘণ্টার মধ্যে এইসব জোগাড় হলাে কী করে? মুসলমানরা একের পর এক পথচারীদের থামিয়ে, নাম জিজ্ঞেস করে, বেছে বেঝে মেরেছে, অভিযােগ এমনটাই। পরিস্থিতি ১৪ আগস্ট পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে ছিল না। উগ্রপন্থী মুসলমানরা প্রতিবাদের নামে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযােগ ও লুঠতরাজ ঘটিয়েছে। কয়েক হাজার গাড়ি, হিন্দুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-সহ ব্যাঙ্ক, এটিএম বুথ এমনকী হাসপাতালে পর্যন্ত হামলা চালিয়েছে মুসলমানরা। থানা ঘেরাও করে পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে, কয়েকশাে পুলিশ আহতও হয়েছে। এলাকায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। মুসলমানরা সংবাদ প্রচারের সময় মিডিয়াকেও প্রভাবিত করেছে। অবশ্য মিডিয়া এও বলছে যে, মুসলমানরা পুলিশ কোয়ার্টারে প্রবেশ করেছে এবং তাদের উপর আক্রমণও করেছে। মুসলমানরা ডিসিপির গাড়িতে আক্রমণ চালিয়ে চালককে গুরুতর আহত করছে। দেখামাত্র গুলি’র নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিন জন মুসলমান দাঙ্গাকারীকে গুলি করে মারা করা হয়েছে। আহত আরও বেশ কয়েকজন। গ্রেপ্তার ১৫০-এরও বেশি। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বাণিজ্যিক শহর বেঙ্গালুরু আজ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। ১৪ তারিখ পর্যন্ত থেমে থেমে হিংসা চলেছে।
রামমন্দিরকে নিয়ে মুসলমান-বামপন্থী মিলে হিন্দুধর্ম নিয়ে প্রচুর আপত্তিকর মন্তব্য করেছে, ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করেছে, ফোটোশপে অশালীন ছবি বানিয়েছে। খুব সামান্য কিছু ক্ষেত্রে যারা এই অপকর্মগুলাে করেছে তাদের বাড়ি গিয়ে কিছু মানুষ নিন্দা জানিয়ে এসেছে, তাদের মা বাবাকে জানিয়ে আসা হয়েছে যেন ভবিষ্যতে এমন কাজ তাদের সন্তান দ্বিতীয়বার না করে। কারাে গায়ে হাত তােলা হয়নি, ভাঙচুর, অগ্নিসংযােগ বহু দূরের কথা। কিছুক্ষেত্রে পুলিশে জানানাে হলেও পুলিশ কোনাে একশন নেয়নি। অথচ হিন্দু ধর্ম নিয়ে নােংরামি করা ওই ছেলে-মেয়ে গুলি দুদিন পরেই আবার সােশ্যাল মিডিয়ায় তাদের হিন্দুবিদ্বেষী নােংরামি শুরু করে। কারণ ওদের শেলটার দেওয়ার প্রচুর লােক জুটে যায়। উলটে যারা হিন্দুধর্ম অবমাননার অভিযােগে ওদেরকে সহবত শেখায়, তাদেরকেই মত প্রকাশে হস্তক্ষেপকারী হিসেবে থানায় মামলা দেওয়া হয় ! এটা হিন্দুদের বিরুদ্ধে গ্লোবাল কন্সপিরেসির অংশ। অরাজকতা সৃষ্টি করাে যেভাবে পারাে মুসলমানরা সর্বাধিক অসহিষ্ণুতা করবে ও সহিংসতা চালাবে আর বাজারি দেশি সংবাদপত্র ও মুসলমান খ্রিস্টান-কবলিত পশ্চিমি প্রচারমাধ্যম তারস্বরে প্রচার চালাবে যে হিন্দুরা অসহিষ্ণু, তাতে করে ভারত ভাঙার কাজ ত্বরান্বিত হবে। নাইজেরিয়াতে একজন গায়ক ইমামকে নিয়ে বন্দনা করে গান বেঁধেছিলেন। কেন তিনি মহম্মদের প্রশংসা করে গান লেখেননি তার জন্য তার মৃত্যুদণ্ড হলাে তাও আবার পাথর ছুঁড়ে।।
বামপন্থীরা হিন্দুদের নিয়েই তাদের বিদ্বেষ প্রকাশ করে, মুসলমানদের দালালি করে। কারণ তারা জানে হিন্দুধর্ম নিয়ে নােংরা চুটকি লিখলে কিছু হবে না, বরং মুসলমানদের চোখে হিরাে হওয়া যাবে। কিন্তু মুসলমানদের নবিকে একটু সম্মান দিয়ে ডাকার অপরাধেই গর্দান হারানাের সম্ভাবনা আছে। তাই বেঙ্গালুরুর ঘটনায় । বামপন্থীরা একটা শব্দও ব্যয় করেনি। হিন্দুরা জড়বস্তু তুল্য, তাই কোনাে মিডিয়াও হিন্দুদের পাশে থাকে না। মুসলমানরা সংখ্যালঘু হয়েও হিন্দুদের নিরন্তর মাড়িয়ে। যেতে পারে। হিন্দুদের ক্লীবত্ব এতটাই যে এই মাড়িয়ে যাওয়ার ব্যথা উপলব্ধি করার মতাে শক্তিও তাদের নেই। অথচ সামান্য কৌতুক অভিনেতাও হিন্দু দেবদেবীদের নিয়ে সরেস মন্তব্য করে নির্দ্বিধায়, হিন্দু সাধুদের কলুষিত অশ্লীলতায়-আসক্ত বলে অভিহিত করেন। ফেসবুকে এক বামপন্থী নারীবাদী যুবতী বলেছেন যে, তারা রামমন্দিরে ‘পেচ্ছাব’ করতে ইচ্ছুক। এই ফেসবুকেই বামপন্থী বিকৃতমস্তিষ্করা বলেছেন, রামের চিতা জ্বালানাে উচিত। ওয়েসি, আজম খান প্রমুখ। মুসলমান রাজনীতিবিদরা সীতা, ভারতমাতা, গণেশ প্রভৃতি সম্পর্কে নিয়মিত অশ্লীল মন্তব্য চালিয়ে যান। জেএনইউতে ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত মা দুর্গাকে বেশ্যা বলা হয়। এসব তথাকথিত সেকুলার ও বামমার্গীদের ন্যারেটিভ। গণেশের গলায় জুতাে পরানাে হয়েছে। সেক্সি দুর্গা ছবির প্রযােজককে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন হিন্দু ধর্ম কী এতই ঠুনকো যে এতেই তা নষ্ট হয়ে। যাবে। মকবুল ফিদা হুসেন এবং আকরাম খানের মতাে মুসলমান চিত্রশিল্পীরা অবলীলায় মা সরস্বতী, শ্রীকৃষ্ণের নগ্ন, আপত্তিকর চিত্র আঁকেন। কিন্তু তাতে হিন্দুরা কখনও এজন্য দাঙ্গা করেনি।
২০১৯-এর লােকসভা নির্বাচনের আগে কপিল সিব্বাল বলেছিলেন, রামমন্দির মামলার শুনানি হােক নির্বাচনের পরে। ওদের আশা ছিল যে, কংগ্রেস ক্ষমতায় আসবে আর রামমন্দির মামলার শুনানি ঠাণ্ডা ঘরে চলে যাবে। কিন্তু তা হয়নি, বরং ৩৭০ ও ৩৫-এ ধারা বিলােপ, ট্রিপল তালাক নিষেধ আইন সবই লােকসভায় গণতান্ত্রিক উ পায়ে পাশ হয়েছে। রামমন্দির ইস্যু ন্যায্যমতাে হিন্দুদের পক্ষে গেছে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে কথা চলছে। মাদ্রাসায় জিহাদের পরিবর্তে প্রগতিশীল শিক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সবশেষে এসেছে। সিএএ, এনসিআর, এনপিআর আর সহ্য করা যাচ্ছে না, এবার তাণ্ডব করাে। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি পাথর ছুড়ে, আগুন জ্বালিয়ে মুসলমানরা নষ্ট করেছে। ইসলামি দেশ ও চীনের আর্থিক সহায়তায় ও কংগ্রেস-কমিউনিস্ট- আর্বান নকল-লিবারেল দুর্বুদ্ধিজীবী সবাইকার প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষ মদতে এটা হয়েছে। আগে থেকে সব মজুত ছিল। একটা সামান্য ছুঁতােয়। তাণ্ডব চালাতে হবে। ওরা আমাদের টেস্ট করছে। শাহিনবাগ তাে ট্রেলর ছিল, করােনা হলে প্রতি শহরে শাহিনবাগ হতাে। বেআইনিভাবে ‘সেকুলার’ শব্দটি কালাতিক্রান্ত লােকসভায় পাশ না করিয়ে ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থায় সংবিধানে ঢুকিয়ে দেন। সেই ঝুটা সেকুলাররিজমের বিষময় ফল ভুগতে হচ্ছে আমাদের। সংবিধান প্রণেতাগণ কখনােই সেকুলারিজম চাননি।
ভারতবর্ষে এটা নতুন নয়। পশ্চিবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় আসলেও সব সমস্যার সমাধান হবে না। ব্যাঙ্গালােরে বিজেপি ক্ষমতায় ছিল। কংগ্রেসিরা চিরকাল মুসলমানদের স্বার্থে রাজনীতি করেও তাদের বিধায়ক রক্ষা পায়নি। হিন্দুরা কোনাে শিক্ষা নেয়নি, নিলে তবে বাজারি পত্রিকা এমন নিউজ করত না যে হিন্দুর একমাত্র দেশ ভারতে মুসলমানদের হাত থেকে হিন্দুর মন্দির রক্ষার জন্য মুসলমানরা মানব ঢাল তৈরি করেছে। এর চেয়ে লজ্জাকর আর কী হতে পারে? এই নাটক পুরােটাই তাদের ধ্বংসযজ্ঞকে লঘু করার চেষ্টা। আক্রমণ কারা করেছিল, পাহারার দরকার হলাে কেন? অথচ প্রত্যেকটি মিডিয়া এই নিউজটি বারবার প্রচার করছে।মুসলমানদের তাণ্ডবে ধ্বংসপ্রাপ্ত বেঙ্গালুরু শহরের চিত্র সেভাবে দেখাচ্ছে না। তবু নাকি ভারতে ‘ভীত সম্প্রদায়’মুসলমান। তাই হিন্দুদের প্রাত্যহিক দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ভয়ংকর দাঙ্গাবাজ হিসেবে চিত্রিত করা হয়। এই নরকের থেকে কবে মুক্তি মিলবে?
সুদীপনারায়ণ ঘােষ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.