১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট মধ্যরাতে দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করতে গিয়ে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু বলেছিলেন, “At the stroke of the midnight hour, when the World sleeps, India will awake to LIFE and FREEDOM.” gotet আনন্দে উচ্ছ্বসিত ভারতবাসী… এ উচ্ছ্বাস বিদেশি ইংরেজ শাসকের গোলামির শৃঙ্খল থেকে মুক্তির উচ্ছ্বাস। ভারতের ভাগ্যদেবতা হয় তো সেদিন সবার অলক্ষ্যে মুচকি হেসেছিলেন। ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন অর্থাৎ ২৭ বছর ১০ মাস এগারো দিনের মধ্যরাতে এক নারীকণ্ঠ হিংস্র শ্বাপদের চাপা কণ্ঠস্বরে আকাশবাণীর মাধ্যমে দেশবাসীকে জানিয়ে দিল, “রাষ্ট্রপতি মহোদয় নে আপৎকাল ঘোষণা কিয়া”। এর চেয়ে বড়ো পরিহাস দেশবাসীর ভাগ্যে আর কী হতে পারে ! জওহরলাল দেশবাসীকে লাইফ অ্যান্ড ফ্রিডম দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন, আর তার কন্যা ইন্দিরা গান্ধী সংবিধানের ৩৫২ ধারার মধ্য দিয়ে জনগণের লাইফ ও ফ্রিডম একলহমায় কেড়ে নিলেন। দেশে জরুরি অবস্থা ২১ মাস ব্যাপী জারি ছিল।
কী ঘটেছিল এই জরুরি অবস্থার সময়ে ?
এককথায়, জীবন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। সংসদকে এড়িয়ে শ্রীমতী গান্ধী স্রেফ ‘Decree জারি করে দেশ চালাতে লাগলেন। তামিলনাড়ু ও গুজরাটের সরকার অসাংবিধানিক ভাবে ভেঙে দেওয়া হলো। জাতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোকে নির্লজ্জভাবে সরকারি মাহাত্ম প্রচারে ব্যবহার করা হলো। সংবাদমাধ্যমকে টুটি চেপে স্তব্ধ করা হলো। এমনকী, জয়প্রকাশ নারায়ণের জন্মদিনের শুভেচ্ছা না ছাপতে একটি জাতীয় স্তরের পত্রিকাকে বাধ্য করা হলো।
ইন্দিরা-পুত্র সঞ্জয় গান্ধীর নেতৃত্বে নির্বিচারে গরিব গুর্বোদের ধরে নিয়ে নির্বীজকরণ চললো। ভাবটা এমন যেন গরিবরা দেশের শত্রু, আবার অন্যদিকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য স্লোগান দেওয়া শুরু হলো ‘গরিবি হটাও’। ৪২তম সংবিধান সংশোধনের মধ্য দিয়ে সংবিধানের গৌরবকে ধূলিসাৎ করে দেওয়া হলো। জনসাধারণ সঙ্গত ভাবেই কন্সটিটিউশন অব ইন্ডিয়াকে বিদ্রুপ করে বলতে লাগলো কন্সটিটিউশন অব ইন্দিরা। সবচেয়ে বড়ো কথা, দেশের মানুষকে সংবিধান যে মৌলিক অধিকার দিয়েছিল, তা কেড়ে নেওয়া হলো। Maintenance of Internal Security Act (MISA) চালু করা হলো। আমি দেখেছি, জমির আল নিয়ে বিরোধে কংগ্রেস নেতার বিরাগভাজন হওয়ায়। তার উপর মিসা প্রয়োগ করা হয়েছে। গোটা দেশ, সমাজ আতঙ্কিত হয়ে পড়লো। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ সমেত অনেক সামাজিক সংগঠনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো। 072/6, The RSS was noted as being “the only non-left revolutinary force in the World by “THE ECONOMIST” due to their organisation of peaceful “SATYAGRAHA” movements. আরএসএস-এর কার্যকর্তা থেকে সাধারণ স্বয়ংসেবকদের নির্বিচারে আটক করা হলো। নিপীড়ন ও অত্যাচারের সীমা সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেল। যদিও কাগজে কলমে ১৯৭৭ সালের ২১ মার্চ জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হলো, বাস্তবে তার প্রয়োগ হলো ২৩ মার্চ, ১৯৭৭ সাল।
ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা জারি করলেন কেন?
এ নিয়ে রাজনৈতিক ভাষ্যকাররা বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে জরুরি অবস্থার বিশ্লেষণ করেছেন। দৃষ্টিকোণের বিভিন্নতা থাকলেও মূল বক্তব্য একই থেকে গেছে। সেগুলো এরকম :
এক, গুজরাটের নবনির্মাণআন্দোলন’স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি বাড়ানোর বিরুদ্ধে শুরু হয়। এই আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী চিমনভাই প্যাটেল এবং তার সরকার। এই সরকার এতো দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল যে গুজরাটের লোকজন তাদের মুখ্যমন্ত্রীকে ‘চিমনচোর’ বলতো। রাজ্য যেন দুর্নীতি, স্বজনপোষণ ও মানবিকতা বিবর্জিত শাসন ব্যবস্থার এক জীবন্ত নাট্যশালা। মার্কসবাদী ঐতিহাসিক বিপানচন্দ্র 015 ‘India Since Independence’ 2167 লিখেছেন, “The last act of the Gujrat drama was played in March 1975 when, faced with continuing agitation and fast unto death by Morarji… Indira
দুই, গুজরাটের পথেই শুরু হলো বিহারে আন্দোলন। ৭১ বছর বয়সি জয়প্রকাশ নারায়ণ ছিলেন এই আন্দোলনের পুরোধাপুরুষ। এটাও প্রথমে ছিল ছাত্র আন্দোলন এবং পরে তার ব্যাপ্তি জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের ব্যাপ্তি ও তীব্রতা এতো বেশি ছিল যে সরকার নিষ্ঠুর দমন পীড়নের আশ্রয় নেয়। ফলে, জয়প্রকাশ নারায়ণ দেশের পুলিশ ও সামরিক বাহিনীকে দেশের সংবিধান অনুসারে তাদের কর্তব্য নির্ধারণ করার আহ্বান জানান। স্বৈরাচারিণীর মনে আতঙ্ক, কারণ তিনি ধরে নিলেন যে জয়প্রকাশ নারায়ণ তাঁর বিরুদ্ধে দেশের পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে উস্কিয়ে দিয়েছেন।
তিন, বিহার যখন জ্বলছে, সেই সময় সোশালিস্ট নেতা জর্জ ফার্নান্ডেজের নেতৃত্বে ১৯৭৪ সালে শুরু হলো রেল ধর্মঘট। এই আন্দোলনের ব্যাপকতা এতো বেশি ছিল যে সরকারকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গিয়ে অনেক স্থানে সৈন্যবাহিনী মোতায়েন করতে হয়েছিল।
চার, পরিশেষে এলো ইন্দিরার বিরুদ্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্টে রাজনারায়ণের দাখিল করা মামলার রায়। রায়বেরিলি লোকসভা কেন্দ্রে ইন্দিরা গান্ধী রাজনারায়ণের বিরুদ্ধে প্রার্থীরূপে বিজয়ী হয়েছিলেন। রাজনারায়ণের অভিযোগ ছিল যে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী নির্বাচনে আইনস্বীকৃত অর্থের চেয়ে বেশি অর্থ বেআইনিভাবে খরচ করেছেন এবং সরকারি প্রশাসন যন্ত্রকে নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করেছেন। ১২ জুন ১৯৭৫, এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি জগমোহন সিনহা শ্ৰীমতী গান্ধীর নির্বাচনকে ‘Null and void’ বলে রায় দিলেন। অবশ্য, কোর্টইন্দিরা গান্ধীকে ২০ দিনের সময় মঞ্জুর করলেন যাতে তিনি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে পারেন। ২৪ জুন, ১৯৭৫, সুপ্রিম কোর্ট তাকে পুরোপুরি স্বস্তি দিতে পারলো না। অস্বস্তি বাড়লো দলের অন্দরমহলে। প্রবীণ ও অভিজ্ঞ নেতারা দলের স্বার্থে তাঁকে পদত্যাগের পরমার্শ দিলেন। শ্রীমতী গান্ধী ক্ষমতার লিপ্সায় বেপরোয়া হয়ে রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করলেন।
এই গুলিই নিঃসন্দেহে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করার অন্যতম কারণ ছিল। তবে মুখ্য কারণ হলো, নেহরু পরিবারের ক্ষমতায় থাকার দুর্নিবার বাসনা এবং যে কোনো ভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার অনৈতিক প্রয়াস। এটা আমরা জানি যে দেশের প্রধানমন্ত্রিত্ব লাভের বাসনায় কীভাবে নেহরু কংগ্রেসের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের পরিবেশ ধ্বংস করেছিলেন এবং গান্ধীজীকে বাধ্য করেছিলেন যাতে তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। নেহরুর আকস্মিক প্রয়াণের পর লালবাহাদর শাস্ত্রী প্রধানমন্ত্রী হন। তাঁর মৃত্যু আজও রহস্যে ঘেরা। যাইহোক, ১৯৬৬ সালে শাস্ত্রীজীর মৃত্যুর পর নেহরু তনয়ার রাজ্যাভিষেকের মধ্য দিয়ে নেহরু বংশের শাসনকাল পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।
যে কোনো Typical স্বৈরশাসকের মতো ইন্দিরা নিরঙ্কুশ ক্ষমতা লাভকে জীবনের একমাত্র পরমার্থ বলে মনে করতেন। এই নিরঙ্কুশ ক্ষমতা অর্জন করতে হলে রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগ, অর্থাৎ সংসদ, প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থার উপর চূড়ান্ত কর্তৃত্ব অর্জন আবশ্যক। সংসদ ও প্রশাসনের ওপর ইন্দিরার চূড়ান্ত কর্তৃত্ব থাকলেও বিচার ব্যবস্থার উপর তাঁর কর্তৃত্ব ছিল না। বরং কেশবানন্দ ভারতী বনাম কেরালা সরকার মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে দেশের সংবিধানের অ্যামেন্ডমেন্ট (সংশোধন) করা গেলেও সংবিধানের ফান্ডামেন্টাল প্রিন্সিপ্যালকে পরিবর্তন করার অধিকার দেশের সংসদের নেই। এই রায় ছিল এক স্বৈরাচারিণীর চূড়ান্ত ক্ষমতা লাভের অশুভ প্রচেষ্টার প্রতি বড়ো বাধা। তাই বিচার বিভাগের ওপর কর্তৃত্ব কায়েমের উদ্দেশ্যে শ্রীমতী গান্ধী তিনজন সিনিয়ার বিচারপতিকে টপকে এএন রায়-কে প্রধান বিচারপতি হিসাবে বেছে নেন। কারণ কেশবানন্দ ভারতী বনাম কেরালা সরকারের মামলায় যে ১৩ জন বিচারপতিকে নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ গঠিত হয়েছিল সেই বেঞ্চের যে ৬ জন বিচারপতি এই রায়ের বিরুদ্ধে ছিলেন। বিচারপতি এএন রায় ছিলেন তাঁদের মধ্যে একজন।
আমরা অতীতের বেদনার্ত স্মৃতিচারণা করি যাতে আমরা ভবিষ্যতে ভুল না করি। প্রশ্ন হলো, ভবিষ্যতে ভুলের সম্ভাবনা আছে কি?
বৈদিক যুগে শাসনতন্ত্র মূলত দুভাগে বিভক্ত ছিল— রাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র। তবে উভয় প্রকার শাসনব্যবস্থার মধ্যে গণতন্ত্রই ছিল উত্তম। কিন্তু তাই বলে রাজতন্ত্র কখনোই রাজাকে স্বৈরাচারী হওয়ার সুযোগ দেয়নি। খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে কৌটিল্য তার অর্থশাস্ত্র গ্রন্থে লিখেছেন :
“প্ৰজাসুখে সুখং রাজ্ঞ প্রজানাং চ হিতে হিতম্।
নাত্মংপ্রিয়ং হিতং রাজ্ঞ প্রজানাং তু প্রিয়ং হিতম্।”
অর্থাৎ প্রজার সুখেরাজার সুখ, প্রজার হিতে রাজার হিত। প্রজার পক্ষে হিতকর এবং প্রিয়কর কার্যকেই রাজা হিত মনে করবেন। এটাই প্রাচীন ভারতের শাসন ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এই শাসন ব্যবস্থায় অধিকাংশের মতানুসারে রাজাকে চলতে হতো। একটি ছোটো উদাহরণ ঃ সম্রাট অশোকের আদেশ সত্ত্বেও মন্ত্রী রাধাগুপ্ত বৌদ্ধসঙ্ঘের অনুদান বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ভাবুন, অশোক রাজা ছিলেন, তিনি ইন্দিরার মতো গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ছিলেন না। অথচ রাজাকে মেনে নিতে হয়েছিল মন্ত্রী রাধাগুপ্তের নিষেধ। কারণ মন্ত্রীর নিষেধে প্রতিফলিত হয়েছিল প্রজাদের ইচ্ছা।
তাহলে ভারতের এই উন্নত শাসনতান্ত্রিক পরম্পরা থাকা সত্ত্বেও ইন্দিরা কেন জনসাধারণের আশা আকাঙ্ক্ষাকে পদদলিত করে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করলেন ? ভাবা হয়েছিল যে গণতন্ত্র এবং আধুনিক শাসন ব্যবস্থায় ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি স্বৈরাচারী শাসকের উত্থান হতে দেবে না। হলো কই? হিটলার, মুসোলিনি বা ইন্দিরাকে কী ঠেকানো গেল?
না, গেল না। কারণ ক্ষমতাবান বা ক্ষমতাবতী যদিশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে ধর্মীয় অনুশাসন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন, তাহলে তিনি অবশ্যই স্বৈরাচারী হবেন। এ বিষয়ে ঐতিহাসিক হ্যাভেল বলেছেন যে, ইউরোপীয়দের মতো ব্যক্তিগত চিন্তার
স্বাধীনতা বা ব্যক্তিগত রাজনৈতিক অধিকারের জন্য অতীত ভারতে জনসাধারণকে কোনো সংগ্রাম করতে হয়নি।” হ্যা, এ দেশে Monarchy ছিল এবং তা ছিল Constitutional Monarchy। এসব ইউরোপীয়দের কাছে। অকল্পনীয় ছিল। আমাদের দেশ যারা চালান তাদের বড়ো অংশই তো ইউরোপীয় শিক্ষায় শিক্ষিত। হাজার বছরের বৈদেশিক শাসনে আমরা আজ আমাদের গৌরবময় ঐতিহ্য সম্পর্কে আত্মবিস্মৃত। আমাদের শেখানো হয়েছে ইউরোপীয় জীবনধারা উন্নত। অন্যদিকে, ভারতীয়রা অজ্ঞ, কুসংস্কারাচ্ছন্ন এক যাযাবর গোষ্ঠী। আমরা সেটা পড়ি, সন্তানদের পড়াই, নিজেরা পবিত্র মনে অনুসরণ করি। ফলে আমরা দেশেরশাসন ব্যবস্থা থেকে ধর্ম’কে বিচ্ছিন্ন করে শাসনব্যবস্থাকে উন্নত করার এক ব্যর্থ অপপ্রয়াস করি। এই অমোঘ সত্য ভুলে যাই যে, এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তার জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া ধর্ম দ্বারা পরিচালিত। একে বাদ দেওয়ার চিন্তা বাতুলতা মাত্র। দেশের সংবিধানের প্রস্তাবনায় ৪২তম সংবিধান সংশোধনের মধ্য দিয়ে সেকুলার শব্দকে ঢুকানো হয়েছে। অথচ আমাদের সংবিধান প্রণেতারা, বিশেষ করে বি আর আম্বেদকার এই সেকুলার শব্দের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন এই যুক্তিতে যে, ভারতীয়দের জীবনপদ্ধতির অনুপম বৈশিষ্ট্যই হলো সর্বধর্ম সমভাব। নতুন করে এইসব কথা কেন? এইসব সেকুলার জাতীয় শব্দ ভারতের সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করা মতলববাজি ছাড়া কিছু নয়। আমরা ইচ্ছা করেই বুঝি না বা বুঝতে চাই না যে ধর্ম হলো সেই সব নিয়ম যা ধারণ করে মানুষ এবং সমাজ পার্থিব ও পারলৌকিক জগতে সুখ শান্তির পরমনিশ্চিন্ত খুঁজে পায়। ভারতীয় সমাজ জীবনের প্রেক্ষিতে ধর্ম কখনোইইউরোপীয় রিলিজিয়নের প্রতিশব্দ নয়। ইউরোপীয় চিন্তায় রিলিজিয়ন একটি উপাসনা পদ্ধতির নাম। অন্যদিকে, ভারতীয় ভাবনায় ধর্ম হলো সমাজজীবন পদ্ধতি পরিচালনার সুসংবদ্ধ নিয়মাবলী। সমাজের গর্ভেইরাষ্ট্রের উৎপত্তি। তাই দেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা ধর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে না। আমাদের আজ আত্মমন্থনের দিন। আমরা চাইবো, আর যেন “THE DARKEST PHASE IN THE HISTORY OF INDIA’কখনো ফিরে না আসে। অতীত ভারতের গৌরবময় রাষ্ট্রীয় জীবনকে গভীরভাবে অনুধাবন এবং তা প্রয়োগের মধ্য দিয়ে আমরা জরুরি অবস্থার পুনরাবৃত্তি রুখতে পারি।
অজয় সরকার