বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা (WHO) ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণকে মহামারি ঘোষণা করেছে। সারা বিশ্বে বাড়ছে সংক্রামিতের সংখ্যা। মৃত্যুর সংখ্যার গ্রাফটাও উধ্বগামী। ফলে চিন্তা হবারই কথা। করোনা ভাইরাস এখন সবচেয়ে আলোচ্য বিষয়। আন্টারটিকা ছাড়া সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। করোনা। করোনা মানে লাতিন ভাষায় মুকুট। বহু দশক ধরে করোনা ভাইরাস উপস্থিত। ভাইরাসের নানান স্ট্রেইন হয়। সাতটি স্ট্রেন এখন অবধি পাওয়া গেছে। ২০০৩ সালের আশেপাশে সার্স বলে একটি রোগের সৃষ্টি হয়। নানান দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং বহু মানুষ আক্রান্ত হয়। বেশ কিছু মানুষের মৃত্যুও হয়। এরপরে সারা বিশ্ব আরেকটি জীবাণু সংক্রমণের কবলে পড়ে, এটাকে চিহ্নিত করা হয় মিডল ইষ্ট রেস্পিরেটরি সিন্ড্রোম নামে। সালটা ২০১৪ থেকে ২০১৫। আরব দেশে সূচনা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।
করোনা ভাইরাস মানে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তা নয়। কিছু ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস বিপজ্জনক রূপ আকার নেয়। সার্স ও মর্স সংক্রমণে যেমন হয়েছিল।
উপসর্গ কী? সাধারণ ভাইরাসের যা উপসর্গ তাই। কাশি, সর্দি, জ্বর, শ্বাস নিতে কষ্ট। আলাদা করা সম্ভব নয়।
কীভাবে চিহ্নিত করতে হবে? গলার সোয়াব পরীক্ষা করে। পরীক্ষার পদ্ধতি RT-PCR, রক্ত পরীক্ষা মারফৎ অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করে পাওয়া যায়। নতুন করোনা ভাইরাস পরিচিত Covid 19 নামে। ভাইরাস কখন বেশি আক্রমণাত্মক হয় ? যাদের প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কমে যায়।
(১) যাদের বয়স ৬৫-এর বেশি, তাঁদের ঝুঁকিও বেশি। (২) কর্কট রোগ হবার কারণে কোমোথেরাপি নিচ্ছেন, এমন রোগীদের ওপরও করোনা মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। (৩) বহুদিন স্টেরোয়েড নিচ্ছেন যারা, তারাও আক্রান্ত হচ্ছেন। (৪) ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্তদের করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা প্রবল। (৫) বাইপাস সার্জারি হওয়া রোগীদের আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি।
করোনা ভাইরাস এইবার কিন্তু ব্যতিক্রমী। ৫০ থেকে ৫৫ বছরের মানুষের মধ্যে মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে চীনে। করোনা ভাইরাসের কোনো চিকিৎসা আছে কি?
না আছে চিকিৎসা আর না আছে এর প্রতিষেধক। এই কারণেই সার বিশ্বের মানুষ আতঙ্কিত।
কীভাবে আটকানো যাবে?
এই ভাইরাস মূলত হাতের মাধ্যমেই শরীরে প্রবেশ করে তাই ভালো করে হাত ধুতে হবে। সাবান বা অ্যালকোহল ভিত্তিক স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। আর মনে রাখবেন কারোর যদি কাশি হয়, অবশ্যই মুখে রুমাল বা টিসু পেপার রেখে কাশুন, আর যদি কিছুই কাছে না থাকে, তাহলে মুখে হাত চাপা দিয়ে কাশুন। অন্যরা, যিনি কাশছেন, তাদের থেকে অন্তত ১ মিটার দূরে রাখুন নিজেকে। সবসময় বিশেষ করে বাইরে বেরোলে মুখ ঢাকুন মাস্কে।
ডাঃ অরিন্দম বিশ্বাস (লেখক আর. এন. টেগোর হাসপাতালের ঔষধ বিশেষজ্ঞ)