পশ্চিমবঙ্গের ৫টি জেলা— দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, কলকাতা ও পশ্চিম বর্ধমানের ৩৬টি বিধানসভায় সপ্তম দফার নির্বাচন আগামী ২৬শে এপ্রিল।
দক্ষিণ দিনাজপুরের ৬’টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে কুশমণ্ডি ও হরিরামপুরে টিএমসি-বিজেপি লড়াই হবে জবরদস্ত, কিন্তু দু’টি আসনেই এগিয়ে আছে তৃণমূল। তবে তপশীলি জাতিভুক্ত মানুষের জন্য নির্ধারিত বিধানসভা হিসেবে কুশমণ্ডির মানুষ যদি SC সম্প্রদায়ের উন্নয়নকল্পে বিজেপির বিশেষ প্রকল্পগুলির সুবিধাকে হৃদয়ঙ্গম করতে পারে, তবে কুশমণ্ডিতেও উঠতে পারে গেরুয়া ঝড়। কুমারগঞ্জেও জিততে চলেছে তৃণমূল আর বালুরঘাট, তপন (ST বিধানসভা) ও গঙ্গারামপুরে (SC বিধানসভা) জিতবে বিজেপি। দক্ষিণ দিনাজপুরের সবক’টি বিধানসভা সীমান্তবর্তী। সীমান্ত অঞ্চলের সমস্যা ও বিপদ এ জেলার মানুষের নিত্যসঙ্গী।
মালদহের ৬টি বিধানসভার মধ্যে সীমান্তবর্তী হাবিবপুর (ST বিধানসভা) ও সীমান্ত-নিকটবর্তী গাজোল (SC বিধানসভা) হয়ত নির্বাচন করতে চলেছে বিজেপিকে। এই দুই বিধানসভা দখল করতে বিজেপি কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়েছে ২০১৯এর লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকে। উক্ত অঞ্চলের দক্ষ সিপিএম নেতা খগেন মূর্মুকে দলে নিয়ে এবং মালদহ উত্তর লোকসভা আসন থেকে তাঁকে দাঁড় করিয়ে ২০১৯ এর লোকসভায় মালদহ উত্তর আসনটি জিতে নেয় বিজেপি। ২০১৬’র বিধানসভায় গাজোলের বিধায়ক দীপালি বিশ্বাসও বর্তমানে বিজেপিতে। খগেন মূর্মু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর ২০১৯’র লোকসভায় হাবিবপুর ও গাজোল বিধানসভা ক্ষেত্রদুইটি মালদহ উত্তর লোকসভায় বিপুল ভোটে এগিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টিকে। বাকি চারটি আসনের মধ্যে রতুয়া ও হরিশচন্দ্রপুরে তৃণমূলের জয়ের সম্ভাবনা থাকলেও মালতীপুর ও চাঁচল হয়ত জিতবে কংগ্রেস। মালতীপুর পশ্চিমবঙ্গের সেই ৬’টি বিধানসভা কেন্দ্রগুলির একটি যে ৬’টিতে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে AIMIM. ওয়েইসির দল যদি মালতীপুরের মুসলিম ভোটের কিছু অংশ টেনে নেয়, তবে বদলে যেতে পারে মালতীপুরের নির্বাচনী ফলাফল। সে ফলাফল তৃণমূলের পক্ষেও যেতে পারে, আবার বিপক্ষেও। মালদা ও মুর্শিদাবাদের নির্বাচনী পরিস্থিতি এ বছর যতখানি চিত্তাকর্ষক, ততটাই অনিশ্চিত বলেই হয়ত সাম্প্রতিক অতীতে মালতীপুরের সভায় মুসলিম-অধ্যুষিত মালদা, মুর্শিদাবাদ ও উত্তর দিনাজপুরের মানুষের কাছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ রেখেছেন উক্ত জেলাগুলিতে তাঁর দলকে জেতাতে। বলেছেন, এই জেলাগুলি জিতলেই তিনি এবারের নির্বাচনে জিতবেন। বাস্তবে কংগ্রেসের মালদহের আসনগুলি কংগ্রেস তৃণমূলকে ছেড়ে দেবে এমন কোনো গোপন রফা যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কংগ্রেসের না হয়ে থাকে, তবে সপ্তম দফায় মালদহে দুইটি’র বেশি আসন জিততে পারা তৃণমূলের পক্ষে অসম্ভব বলা যায়।
মুর্শিদাবাদের ১১টি আসনের মধ্যে সামসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরে প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় উক্ত দুই কেন্দ্রে নির্বাচন পিছিয়ে গিয়ে পুনর্নির্ধারিত হয়েছে আগামী ১৬ই মে। অর্থাৎ ২রা মে পশ্চিমবঙ্গের বাকি ২৯২টি আসনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর। সে ফলাফল যে সামসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরের ফলাফলকে প্রভাবিত করবে না, সেকথা বলা যায় না, বরং প্রভাবিত করা স্বাভাবিক। বাকি ৯’টি আসনের মধ্যে বিজেপির জয়ের সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে কেবলমাত্র নবগ্রামে (তপশীলি আসন)। নবগ্রামের মানুষ এতদযাবৎ কংগ্রেস ও তৃণমূলকে ভোট দিয়ে অভ্যস্ত। কিন্তু তপশীলি জাতিভুক্ত মানুষের উন্নয়নকল্পে বিজেপির প্রকল্পগুলির সুবিধা হৃদয়ঙ্গম করতে পারলে নবগ্রামের মানুষ এবার ভারতীয় জনতা পার্টিকে জেতাতেও পারেন ।
মুর্শিদাবাদের সাগরদীঘি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের জয় একপ্রকার নিশ্চিত ছিল। কিন্তু AIMIM লড়ছে এই আসনেও, ফলে তৃণমূলের সহজ লড়াই হয়ে গিয়েছে অপেক্ষাকৃত কঠিন। “বিজেপির থেকে টাকা নিয়ে হায়দরাবাদ থেকে একজন এসেছে” ইত্যাদি বলে প্রেসার কুকারের উত্তপ্ত বাষ্পের মত উষ্মাপ্রকাশ করতে ইতিপূর্বে বহুবার শোনা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে। উষ্মার আদত কারণ এইটি।
ফরাক্কা, সুতি, রঘুনাথগঞ্জ, লালগোলা, রানিনগর, মুর্শিদাবাদ আসনগুলি কংগ্রেসের এক একটি গড় এবং ২০১৬’র বিধানসভায় প্রতিটি আসনের বিধায়কই কংগ্রেসের। ভগবানগোলা আসনটি অবশ্য রয়েছে সিপিএমের দখলে।
মুর্শিদাবাদের প্রাক-নির্বাচনী চিত্র ঘটনাবহুল ও উত্তেজনাকর।
ঘটনা ১— রাহুল গান্ধী পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে আসার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মারা গেলেন সামসেরগঞ্জের এক নির্দল প্রার্থী। সামসেরগঞ্জে CPM-CONGRESS-ISF জোটের প্রার্থী মোদাস্সর হোসেন। তৎসত্ত্বেও এই আসনে কংগ্রেস দাঁড় করিয়েছিল নিজেদের পৃথক প্রার্থী রেজাউল হককে, নির্দল হিসেবে। ৪৫ বছর বয়সী রেজাউল হক করোনা সংক্রমণ হয়ে মারা গেলেন রাহুল গান্ধী রাজ্যে পা রাখার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে। শুরু হল জল্পনা। রেজাউল হকের মৃত্যু কি সত্যিই কোভিডের কারণে? এমন জল্পনা অহেতুক নয়। কিছু ওপিনিয়ন পোলের হিসাবে সামসেরগঞ্জে যদিও কংগ্রেস ও কম্যুনিস্টদের সম্মিলিত ভোটের পরিমাণ সর্বাধিক হওয়ার সম্ভাবনা, কিন্তু কংগ্রেস আর সিপিএমের আলাদা আলাদা প্রার্থীর মধ্যে ভোট কাটাকাটি হলে সেই অঙ্কে তৃণমূল লাভবান হতে পারত। মোদাস্সর হোসেন জোট সমর্থিত সিপিএমের প্রার্থী হওয়ার কারণে জোটের স্বার্থে তাকে টিকিট না দেওয়া সম্ভব ছিল না। ওদিকে রেজাউল হক অধীর চৌধুরীর কাছের লোক না হয়েও এলাকায় ছিলেন জনপ্রিয়। তাঁকে টিকিট না দিলে হয়ত এলাকায় কংগ্রেস দলের জনপ্রিয়তাতেই টান পড়তে পারতো। রেজাউল হকের মৃত্যু কি এমত দ্বিমুখী টানাপোড়েন থেকে কংগ্রেসকে কিঞ্চিৎ মুক্তি দিল? জল্পনা।
ঘটনা ২— এর ঠিক পরেই রাজ্যে প্রচার-পরিকল্পনা বাতিল করে দিল্লি ফিরে গেলেন রাহুল। কারণ হিসেবে দেখালেন কোভিড সেকণ্ড ওয়েভকে। সেকণ্ড ওয়েভ যেখানে আগেই শুরু হয়েছিল, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে এসেছিলেন কেন রাহুল গান্ধী? জল্পনা।
ঘটনা ৩— রাহুল গান্ধী দিল্লি ফিরে যাওয়ার অব্যবহিত পরেই কোভিড আক্রান্ত হয়ে পড়লেন।
ঘটনা ৪— রাহুল গান্ধী দিল্লিতে কোভিড আক্রান্ত হওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এ রাজ্যে কংগ্রেসের তথা মুর্শিদাবাদের আদত মুখ অধীর চৌধুরীরও কোভিড-সংক্রমণ হল।
ঘটনা ৫ — অধীর চৌধুরীর কোভিড সংক্রমণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর দ্রুত সুস্থতা কামনা করলেন। এতে অস্বাভাবিকতা কিছু ছিল না। প্রধানমন্ত্রী রাহুল গান্ধীরও দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।
ঘটনা ৬— উত্তেজনা ও জল্পনার কারণ ঘটল যখন পিএম মোদী তাঁর টুইট বার্তায় অধীর চৌধুরীকে সম্বোধন করলেন ‘অধীর’দা’ বলে।
বস্তুতঃ, মুর্শিদাবাদের প্রাক-নির্বাচনী ঘটনাবহুলতায় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের জন্য এত তীব্র দমবন্ধকরা উত্তেজনার রসদ আছে যে তীক্ষ্ণ নজরদারি বজায় রেখেও এই জেলার নির্বাচনী ফলাফল সম্পর্কে কোনো প্রকার অনুমান বা প্রজেকশন করা থেকে স্বেচ্ছায় বিরত থাকা শ্রেয় ও বুদ্ধিমানের কাজ।
কলকাতার ৪ টি বিধানসভার মধ্যে শুধু ভবানীপুর যেতে চলেছে বিজেপির কাছে আর বাকি তিনটি আসনই হয়ত থাকবে তৃণমূলের দখলে যদি না রাসবিহারী বিধানসভার মানুষ হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেন দুর্দান্ত ভালো প্রার্থী ইণ্ডিয়ান আর্মির প্রাক্তন ডেপুটি চীফ অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুব্রত সাহাকে নির্বাচন করার। রাসবিহারী যদি শ্রী সুব্রত সাহার নির্বাচনার্থে বিজেপিকে জেতায়, তবে কলকাতার ‘এলিট’ শ্রেণীর ওপর সাধারণ মানুষের ভরসা কিছু হলেও ফিরতে পারে, কিন্তু সে আশা কম। অনুরূপভাবে বালিগঞ্জেও জিতবে তৃণমূল।
কলকাতা পোর্টের তৃণমূল প্রার্থী কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (যদিও মেয়রের চেয়ারের প্রতি সুবিচার করতে পারার যোগ্যতা বা ক্ষমতা কোনোটিই তাঁর ছিল না) নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে বিরোধী দল বিজেপি ও CISFকে এক নিঃশ্বাসে অসংসদীয় ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। বলেছেন, নির্বাচন মিটে গেলেই বিজেপি ও CISF কে উনি ‘দেখে নেবেন’। কোনো এক অডিটোরিয়ামের বক্তৃতায় বলেছেন—”হিন্দু ধর্ম ডিরেইলড্ হয়ে গিয়েছে”। এই সকল বক্তব্য নিজের কেন্দ্রের জনগণকে উস্কানি দেওয়ার উদ্দেশ্যে রেখেছেন বলে সন্দেহ করা অমূলক নয়। এ বছরের গোড়া থেকেই তৃণমূল এ রাজ্যে দাঙ্গা বাঁধিয়ে দিতে চেয়েছে। সম্ভাব্য উদ্দেশ্য— সাধারণ মানুষকে সন্ত্রস্ত ও বিজেপিকে বদনাম করা। ইতিপূর্বে যে প্রয়াস মৃদু ছিল, সাম্প্রতিক কালে তা উগ্র রূপ ধারণ করেছে। ফিরহাদ হাকিমের এমত বক্তব্য সেই উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ। কলকাতা পোর্ট বিধানসভার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখার প্রয়োজন নির্বাচন কমিশনের হবে বলে মনে হয়। গণতন্ত্রকে ধ্বস্ত করার সবরকম পরিকল্পনা ভেস্তে দেওয়ার সুবন্দোবস্ত রাখা জরুরী।
পশ্চিম বর্ধমানের ৯টি আসনেই এগিয়ে আছে বিজেপি এবং হারতে চলেছে তৃণমূল। আসানসোল, দুর্গাপুর এককালে ভারতের বিশিষ্ট শিল্পশহর। খনিজ সম্পদে, বিশেষতঃ কয়লায় সমৃদ্ধ এই অঞ্চলকে একসময় ‘ভারতের রূঢ়’ বলা হত। আয়রন ও স্টীল ইণ্ডাস্ট্রি, অন্যান্য ভারী উৎপাদন শিল্প ও এঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের সমৃদ্ধির কারণে দুর্গাপুরকে ‘ভারতের রূঢ়’ আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। ১৯৬৭ থেকে শুরু করে ৪৪ বছরের বাম শাসন এবং গত দশ বছরের তৃণমূল শাসন এই শিল্পাঞ্চলের সমস্ত শিল্পকে পাততাড়ি গোটাতে বাধ্য করেছে। ফলতঃ পশ্চিমবঙ্গের এই কয়লা-উৎপাদক-অঞ্চলটি অর্থনৈতিকভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে পড়ে গিয়েছে মাফিয়াদের খপ্পরে। নিয়ত হিংসা এবং বেআইনি কয়লাপাচার ও বালিপাচারের মত অপরাধে বর্তমানে লিপ্ত এই অঞ্চল এবং কয়লা-স্ক্যামটি বর্তমানে তদন্তাধীন সিবিআই, ইডি, এনআইএ’র মত সংস্থার দ্বারা। সিবিআই সূত্রের মতে পুলিশ, ব্যুরোক্র্যাট থেকে রাজনীতিবিদ—সকলেই যুক্ত কয়লা সংক্রান্ত অপরাধের সঙ্গে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই অঞ্চলের আদত ইস্যুগুলিকে ধরেছেন তাঁর নির্বাচনী বক্তৃতায়। বিশাল এই শিল্পশহরের অতীত গরিমার কথা বলেছেন এবং স্মরণ করেছেন স্যর রাজেন মুখার্জী ও তাঁর পুত্র স্যর বীরেন মুখার্জীর মত বাঙালী বিজনেস টাইকুনদের। বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ কি ভুলে গিয়েছে বার্ণপুর শহর ও ইণ্ডিয়ান আয়রণ অ্যাণ্ড স্টীল কম্প্যানি/IISCO’র প্রতিষ্ঠাতা স্যর রাজেনকে? ভুলে গিয়েছে কিভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বৈষম্যমূলক সরকারি নীতি প্রণয়ন করে IISCO কে ধ্বংস করেছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর ক্যাবিনেট? আধুনিক ভারত গঠনে তাঁদের অবদান ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যে ভোলেন নি, তা তাঁর নির্বাচনী প্রচার থেকে বোঝা গিয়েছে।
২০১৯ এর লোকসভায় পশ্চিম বর্ধমানের এই সবক’টি বিধানসভা ক্ষেত্রই বিপুল ভোটে এগিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টিকে। এই বছরও ৯টি বিধানসভাই যেতে পারে বিজেপির দখলে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা, আসানসোলের মেয়র তথা ২০১৬’র বিধানসভায় পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারিও বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন গত ২রা মার্চ। তিওয়ারি নিজেও কয়লা-মাফিয়াদের অন্যতম মাথা বলে অভিযোগ এবং এলাকার গুণ্ডা ও অপরাধচক্রের ওপর তাঁর প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ অপরিসীম। এ হেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় এতদ অঞ্চলের অপরাধচক্রকে বাগে আনতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে বিজেপির যেমন সুবিধা হবে, তেমনই তিওয়ারির নিজস্ব নেতিবাচক ভাবমূর্তি গেরুয়া পার্টির জন্য কিঞ্চিৎ ক্ষতিকারকও হবে কি? জিতেন্দ্র তিওয়ারি বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় বিজেপির সামগ্রিক লাভ কি তিওয়ারির ভাবমূর্তিজনিত কারণে বিজেপির ক্ষতির তুলনায় বেশি হবে? এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে ২রা মে। কিন্তু পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূলের পরাজয় কেবল সময়ের অপেক্ষা।
২০২০ সালের ৫ই ডিসেম্বর বরাবানিতে কয়লা মাফিয়াদের বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক দলের মিছিলে গুণ্ডাদের গুলি ও বোমাবর্ষণের ঘটনাটি ভুলতে পারেননি বরাবানির মানুষ। গুণ্ডাদের আক্রমণে গুরুতর আহত হয়েছিলেন সাতজন স্থানীয় মানুষ এবং সে বিষয়ক তদন্তে সিবিআই ও এনআইএ’র কাজে পর্যাপ্ত বাধা সৃষ্টি করেছিল রাজ্য পুলিশ। সে ক্ষোভের আঁচও বরাবানির মানুষ নিশ্চিত উগরে দেবেন ভোটের বাক্সে। তবে ২০১৮ সালে রামনবমী উপলক্ষে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেখেছিল রাণীগঞ্জ, সে তুলনায় বরাবানির ঘটনাটি সামান্য। রামনবমীর শোভাযাত্রা একটি বিশেষ এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে চরম অবনতি উক্ত এলাকায় ঘটে তাতে রাণীগঞ্জের হিন্দু মহিলা ও শিশুদের রাত কাটাতে বাধ্য হতে হয়েছিল খোলা আকাশের নীচে, শুধু দুটো শুকনো মুড়ি খেয়ে। এই সব কিছুর জবাব পশ্চিম বর্ধমানের মানুষ দেবেন আগামী ২৬শে এপ্রিল EVM’র বোতাম টিপে।
মুর্শিদাবাদকে উহ্য রেখেও বাকি চার জেলার ২৭ আসনে এই দফায় বিজেপি পেতে পারে ১৪ থেকে ১৮ টি আসন। তবে সব হিসাব উল্টে দিয়ে মুর্শিদাবাদে অপ্রত্যাশিত ভালো ফল করার সম্ভাবনাও গেরুয়া পার্টির আছে যা হতে পারে বিজেপির জন্য উপরি পাওনা।
Election Date | Constituency No. | Constituency Name | District |
26.04.2021 36 Assemblies | 37 | Kushmandi | Dakshin Dinajpur 6 Assemblies TotalElection over |
38 | Kumargram | ||
39 | Balurghat | ||
40 | Tapan | ||
41 | Gangarampur | ||
42 | Harirampur | ||
43 | Habibpur | Maldah 6 Assemblies out of 12 Total | |
44 | Gazole | ||
45 | Chanchal | ||
46 | Harischandrapur | ||
47 | Malatipur | ||
48 | Ratua | ||
55 | Farakka | Murshidabad 11 Assemblies out of 22 Total | |
56 | Samserganj | ||
57 | Suti | ||
58 | Jangipur | ||
59 | Raghunathganj | ||
60 | Sagardighi | ||
61 | Lalgola | ||
62 | Bhagabangola | ||
63 | Raninagar | ||
64 | Murshidabad | ||
65 | Nabagram | ||
158 | Kolkata Port | Kolkata 4 Assemblies out of 11 Total | |
159 | Bhawanipore | ||
160 | Rashbehari | ||
161 | Ballygunge | ||
275 | Pandabeswar | Pashchim Bardhaman 9 Assemblies out of 9 Total Election over | |
276 | Durgapur Purba | ||
277 | Durgapur Pashchim | ||
278 | Raniganj | ||
279 | Jamuria | ||
280 | Asansol Dakshin | ||
281 | Asansol Uttar | ||
282 | Kulti | ||
283 | Barabani |
দেবযানী ভট্টাচার্য্য
Debjani Bhattacharyya