মহিষাদলে রূপনারায়নে নৌকাডুবির ঘটনায় দায় নিতে নারাজ রাজ্য জলপথ পরিবহণ দফতর। অবৈধ ঘাট থেকে দেশি নৌকায় ফেরি পারাপার করতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা বলে দাবি করেছেন বিভাগীয় মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
সোমবার সকালের এই দুর্ঘটনার খবরে উদ্ধার কাজের খোঁজ নিতে মহিষাদল যান মন্ত্রী। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নৌকাডুবি প্রসঙ্গে একথা বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “রাজ্য জলপথ বিভাগের জায়গা থেকেই অনুমতি ছাড়া ঘাট চলছিল। আমরা অনেক আগেই ঘাটটা বন্ধ করার জন্য বলেছিলাম। লক্ষ্মণ পাল বলে একজন বেসরকারিভাবে এবং দেশী নৌকো নিয়ে করছিল ফেরি পারাপার। খুব বিপজ্জনক। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত চলছিল৷ এটা আপনারা জানেন না, আমরা জানি।”
মন্ত্রীর এ কথাতেই স্পষ্ট সরকারি গাফিলতির ছবি। স্থানীয়দের প্রশ্ন, মন্ত্রীর নজরে বিষয়টি থাকা সত্ত্বেও কেন বন্ধ হয়নি ফেরি পারাপার?
বাসিন্দারা বলছেন, যাত্রীর তুলনায় ফেরি ঘাটের অভাব রয়েছে। তাই তাঁদের এই ঝুঁকির পথে চলতে হয়। এ অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্য সরকার বৈধ ঘাটগুলি চিহ্নিত করে দিয়েছে। সাতশোর বেশি বৈধ ঘাট রয়েছে গোটা রাজ্যে। সেখানে জেটিঘাট সহ আধুনিক জলযানের মাধ্যমে ফেরি পারাপারের সঠিক পরিকাঠামো রয়েছে। কিন্তু এখানে একদম দেশি নৌকো নিয়ে পারাপার চলছিল৷ ইতিমধ্য়েই ইনল্যান্ড ওয়াটার দফতরের জেলা আধিকারিককে লক্ষণ পালের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে বলেছি। পুলিশকে বলেছি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।”
সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ঘটা এই দুর্ঘটনার খবরেই উদ্ধারকাজে ব্যাপক তৎপরতা দেখিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। এ কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন স্থানীয় মাঝিরা-মৎস্যজীবীরা। যার প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনার পরই ৩৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিছুজন অল্পবিস্তর আহত হয়েছেন। গুরুতর দুজনকে উলুবেড়িয়া পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনই উদ্ধার করেছে। স্থানীয় মানুষ এবং প্রশাসন দ্রুত উদ্ধারে না নামলে আরও বড় বিপদ হয়ে যেতে পারত। একদুজন মিসিং থাকতে পারেন। স্থানীয়দের সচেতন হতে হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ প্রায় ৫০ জন যাত্রী নিয়ে মায়াচরের ঘাট থেকে ছেড়েছিল নৌকোটি। এই নৌকোয় প্রায় জনা দশেক মহিলা সহ বেশ কয়েকটি শিশুও ছিল। সপ্তাহের প্রথম অফিস টাইমে নৌকোয় ব্যাপক ভীড় ছিল। নৌকোটি মাঝ নদীতে যাওয়ার পরেই জলের তোড়ে আচমকা উল্টে গিয়েছে। ঘটনার খবর পেয়েই ছুটে যায় মহিষাদল থানার পুলিশ।