গত সাত বছর ধরে বাঙ্গলার উন্নয়নের পালে হাওয়া লেগেছে। সে হাওয়া কেমন? গর্ব করার মতোই। গ্রাম বাঙ্গলার ৪০ লক্ষ মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বসবাসের মতো ঘর। খরচ হয়েছে ১৮,৩৬১ কোটি টাকা। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে সৃষ্টি হয়েছে। ৩১.৫৬ কোটি কর্মদিবস। নব্বই লক্ষ গ্রামীণ গৃহস্থের জন্য ১৮৯ কোটি কর্মদিবস সৃষ্টি হয়েছে অন্য প্রকল্পে। ছ’ হাজার কোটি টাকা ঋণদানের মাধ্যমে ৬৭ লক্ষ গ্রামীণ মহিলার উপার্জনের ব্যবস্থা হয়েছে। গ্রামগঞ্জে রাস্তা হয়েছে ৭১ হাজার কিলোমিটার। ৯৯.৫ শতাংশ গ্রামীণ পরিবারে স্যানিটারি শৌচালয় গড়ে দেওয়া হয়েছে। ১.৭১ লক্ষ হেক্টর জমিতে জলসেচের ব্যবস্থা হয়েছে। জাতীয় স্তরে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ছ’ ভাগের এক ভাগ গড়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গে আর সেই সব শিল্পে মহিলা কর্মী নিয়োগ। হয়েছে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক। রাজ্যের কর আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে গত সাত বছরে ৪৪ শতাংশ। জাতীয় স্তরের পুরস্কার মিলেছে কৃষি সম্মান যোজনায়। আন্তর্জাতিক পুরস্কার মিলেছে কন্যাশ্রী প্রকল্পে। রাজ্যের মোট উৎপাদন (জিএসডিপি) ছুঁয়েছে ১৫ শতাংশের স্তর। জাতীয় স্তরে তা এই মুহূর্তে ৮.৫ শতাংশ। খাদ্যসাথী প্রকল্পে ৮.৫৯ কোটি মানুষকে যুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। প্রত্যেকের ঘরে পৌঁছেছে। দু’ টাকা কেজি দরের চাল। সংখ্যালঘু ছাত্র-ছাত্রীদের স্কলারশিপ দেওয়া হয়েছে। ২৯৪ কোটি টাকা খরচে আই টি পরিকাঠামো বৃদ্ধি পেয়েছে ১৬ গুণ। এক হাজারটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়া হয়েছে। নতুন ১০টি মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে। ১৬টি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। ৪৭টি নতুন কলেজ হয়েছে। অণ্ডালে দেশের প্রথম বেসরকারি স্তরে গ্রিনফিল্ড বিমানবন্দর গড়ে তোলা হয়েছে। ১৮৬টি কৃষক বাজার গড়া হয়েছে। ১,১৭১ কোটি টাকায়। গড়ে উঠেছে দেশের প্রথম মাতৃদুগ্ধ ব্যাঙ্ক মধুরস্নেহ। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ছোটো ও মাঝারি শিল্প গড়ে ওঠেছে। গত ৭ বছরে। সংখ্যায় যা দেশের মোট শিল্পসংস্থার ১১.২৬ শতাংশ। ওইসব শিল্পে কাজ মিলেছে ১,০৯,১৫,৬২৬ জনের। ২০০ একর জমি ঘিরে গড়ে উঠছে বেঙ্গল সিলিকন ভ্যালি। ছোটো ও মাঝারি শিল্প এবং নতুন স্টার্টআপ প্রকল্পগুলিকে সাহায্য দানের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে ২০০ কোটি টাকার কার্পাস ফান্ড। আর সবচেয়ে বড়ো খবর রাজ্যের পুরুলিয়া জেলার দেওদা পাঁচামি হরিণসিংহ দেওয়ানগঞ্জে গড়ে উঠছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লাখনি।
না, রাজ্য সরকার স্বীকার করে না, এসব প্রকল্পের সিংহভাগই সম্ভব হয়েছে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায়। রাজ্যের মানুষও তা জানতে পারেন না, কারণ কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির নামবদল করেছে রাজ্য সরকার। যেমন প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা’হয়েছে ‘বাংলা গ্রাম সড়ক যোজনা। স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ প্রকল্পের নাম হয়েছে ‘মিশন নির্মল বাংলা। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্প’ (যে প্রকল্পে দু’টাকা কেজি চাল দেওয়া হয়—কেন্দ্র ভরতুকি দেয় প্রতি কেজি চালে ২৯ টাকা ৬৪ পয়সা, রাজ্য দেয় কেজি প্রতি ১ টাকা) হয়েছে ‘খাদ্যসাথী’ ইত্যাদি। তবু না হয় মেনে নেওয়া গেল— কাজ তো হয়েছে! আর আমরা এমন নিন্দুক নই যে, যেখানে রাজ্য সরকার কৃতিত্ব দেখিয়েছে, যেখানে রাজ্য সরকার দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে, সেই সব কৃতিত্বকেও জোর করে খাটো করে দেখাব। সত্যকে অস্বীকার করার চেয়ে বড়ো পাপ আর কিছু নেই।
ন্যাশানাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেই রিপোর্ট বলছে—মহিলা নির্যাতনে পশ্চিমবঙ্গ দেশের সেরা। শুধুমাত্র ২০১৬ সালেই মহিলাদের ওপর অ্যাসিড ছোঁড়ার ঘটনা ঘটেছে গোটা দেশে ২৮৩টি। আহত হয়েছেন ৩০৭ জন মহিলা। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেই ঘটেছে ৭৬টি ঘটনা। আহতের সংখ্যা ৮৯। উত্তরপ্রদেশ পশ্চিমবঙ্গের দ্বিগুণ বড়ো রাজ্য। মহিলা জনসংখ্যাও অনেক বেশি। সেখানে কিন্তু একই অপরাধ ঘটেছে ৫৭টি। আহতের সংখ্যা ৬১। অথচ এই পশ্চিমবঙ্গ সরকারই গোটা দেশে রটিয়ে বেড়াচ্ছে, আদিত্যনাথ যোগীর মুখ্যমন্ত্রিত্বে উত্তরপ্রদেশ নাকি অপরাধের নিরিখে দেশের সেরা।
স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে বধূ নির্যাতনের ঘটনা গোটা দেশে যখন ঘটেছে। ১,১০,৪৩৪টি, পশ্চিমবঙ্গে ঘটেছে ১৯, ৩০৫টি। অর্থাৎ মোট ঘটনার ১৭ শতাংশ ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গেই। রিপোর্টে বলা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ হলো দেশের মধ্যে সব বড়ো নারী পাচার কেন্দ্র। ২০১৬ সালে গোটা দেশে ৮১৩২টিনারী পাচারের ঘটনা ঘটে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেই ঘটেছে সবচেয়ে বেশি ৩৫৭৯টি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খবর হলো গোটা দেশে নারীসংক্রান্ত অপরাধের মোট ৪৩,৫১৩টি ঘটনার ৯.৬ শতাংশই ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গে। একটুর জন্যে ফার্স্ট হতে পারেনি। তবে দ্বিতীয় স্থানটি আর কেউ কাড়তে পারেনি। উত্তরপ্রদেশ হয়েছে প্রথম। অপরাধীদের ধরা এবং শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রেও প্রথম উত্তরপ্রদেশ। শতাংশের হিসেবে ১৮.৯ শতাংশ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত অপরাধীরাই শাস্তি পেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গপিছিয়ে অনেকটাই। মাত্র ৩.৩ শতাংশ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত অপরাধীরা শাস্তি পেয়েছে এ রাজ্যে।
না, না, এখনই হতাশ হবে না। আরও অনেক বিষয় আছে যেখানে পশ্চিমবঙ্গকে ধাক্কা দিতে পারে, এমন রাজ্য আর দুটি খুঁজে পাওয়া যাবে না। যেমন ধরুন স্কুলছুটের সংখ্যা। কন্যাশ্রী আর সবুজ সাথী প্রকল্প নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতই ঢাক পেটান না কেন, জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে— এ রাজ্যে সাইকেল, ইউনিফর্ম, বই, জুতো, মিড ডে মিল বিনা পয়সায় পাবার পরেও আপার প্রাইমারি বিভাগে স্কুলছুট ছাত্রীর সংখ্যা ২.৯ শতাংশ। আর স্কুলছুট ছাত্রের সংখ্যা ৫.৮ শতাংশ। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৮.৭ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে যাচ্ছে না। কারণ দারিদ্র্য। ছাত্রীরা বাড়িতে বাড়িতে বাসন মাজছে, ঘরদোর পরিষ্কার করছে। ছেলেরা যাচ্ছে কেরলে কিংবা ওমানে দিনমজুর ঘাটতে।
শিশুস্বাস্থ্য? খাদ্যপুষ্টি। আজ্ঞে হ্যাঁ। সেখানেও পশ্চিমবঙ্গ প্রথম। গোটা দেশে অপুষ্টির শিকার যখন ৪৫.৯ শতাংশ শিশু, এ রাজ্যে তখনই অপুষ্টিতে ভুগছে ৪৩.৫ শতাংশ শিশু। এ হিসাব জার্নাল অব হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্স ইনোভেশনের।
উচ্চশিক্ষা? না সেখানেও পিছনের তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ সবার ওপরে। ২০১৬-র সি আই আই এবং ডিলয়েটের যৌথ রিপোর্টে বলা হয়েছে—রাজ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়লেও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভর্তির সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদিন প্রতিবছর কমছে। ২০১৫ সালে মোট ভর্তির অনুপাত (Gross Enrollment Ratio) ছিল ১৫ শতাংশ। ২০১৬-তে সেটা পৌঁছয় ১৭.৪ শতাংশে। ২০১৮-য় তা পৌঁছেছে ১৯ শতাংশে। এ ব্যাপারে সবার ওপরে থাকা চণ্ডীগড়কে ছুঁতে এ রাজ্যের এখনও ঢের বাকি। চণ্ডীগড়ে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সংখ্যার গড় ৫৬ শতাংশ। এর কারণ পশ্চিমবঙ্গকে উচ্চশিক্ষার জন্য অন্যতম পছন্দের রাজ্য বা Prezered choice হিসেবে দেশ বিদেশের ছাত্র-ছাত্রী বা শিক্ষকরা একেবারেই গুরুত্ব দেন না। ফলে বিহার যখন উচ্চশিক্ষায় ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির গড় সংখ্যা ২০৮১, ঝাড়খণ্ডে ২০২৫, ছত্তিগড়ে ১৭৪১, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে ওই সংখ্যাটাই প্রতি বর্গকিমিতে ৮২৮ জন।
তার চেয়েও বড়ো আশঙ্কার খবর শুনিয়েছেন সমীক্ষকরা— তা হলো, এরাজ্যে বিদেশি জনসংখ্যার পরিমাণ বেড়েছে গোটা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। মূলত বাংলাদেশ থেকে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীর দৌলতে গত পাঁচ বছরে জনসংখ্যা ৯৩ মিলিয়ন থেকে বেড়ে হয়ে গেছে প্রায় ৯৬ মিলিয়ন। এই জনসংখ্যার ৩২ শতাংশই মুসলমান যা ২০১১-তে ছিল ২৭.১ শতাংশ। সমীক্ষকরা জানাচ্ছেন, সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো, পশ্চিমবঙ্গের বুকেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় অপরাধ ঘটাচ্ছে বিদেশিরা, মূলত বাংলাদেশি মুসলমান জনগোষ্ঠী যারা বেআইনিভাবে পশ্চিমবঙ্গের মাটিকে ব্যবহার করছে জালনোট পাচার, নারী পাচার, গোরু পাচার, হাওলার টাকা পাচার, অস্ত্রশস্ত্র পাচার ইত্যাদি অপরাধের সেফ জোন হিসেবে। পশ্চিমবঙ্গের মাটি আর গণতন্ত্রের মাটি নয়, প্রতিবাদ প্রতিরোধের দূর্জয় ঘাঁটি নয়। সংখ্যালঘু ভোটের কাঙাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকার শুধুমাত্র রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আখের গোছাতে রাজ্যের সমস্ত স্বার্থ জলাঞ্জলি দিতে প্রস্তুত। তার জন্য যদি রাজ্যটাকে অপরাধমূলক কাজকর্মের স্বর্গরাজ্য বানাতে হয়, তাতেও তিনি দশ পা এগিয়ে। অতএব মাভৈঃ। ভোটবাজারে মুখ্যমন্ত্রীর গোয়েবলসীয় প্রচারে পশ্চিমবঙ্গ যতই ফার্স্টবয় হোক না কেন, বাস্তব ছবিটা হলো গত ৭ বছরে মুখ্যমন্ত্রীর আখের গোছানোর রাজনীতির জন্যইরাজ্য অনেকটা এগিয়েও আবার পিছিয়ে পড়েছে অনেকটাই। শেষ পর্যন্ত পিছন দিকে হেঁটে যাওয়ার প্রতিযোগিতাতেও যে পশ্চিমবঙ্গই ফার্স্ট হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তখনও মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমতার পতাকা তুলে ধরে বলবেন— আমরাই ফার্স্ট। গোটা ভারতবর্ষে গত আর্থিক বছরেও যেখানে উচ্চশিক্ষায় ভর্তি হয়েছিল ৩৪২.১ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী, উত্তরপ্রদেশে ভর্তি হয়েছিল ৬০.৬ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী, মহারাষ্ট্রে ৩৭.৪ লক্ষ, তামিলনাড়ুতে ৩৩.৫ লক্ষ।তখন পশ্চিমবঙ্গে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির সংখ্যা ছিল ১৯ লক্ষ। হ্যাঁ মাত্র ১৯ লক্ষ। তার মানে কি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পর ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা বন্ধ করে দিচ্ছে? একাংশ তো দিচ্ছেই। কারণ দারিদ্র্য। কিন্তু বড়ো অংশটাই পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর কোনো ভরসা রাখতে পারছেনা। কারণ এরাজ্যে মাধ্যমিকের প্রশ্ন ফাঁস হয় প্রতিদিন। কারণ এরাজ্যে কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ভর্তি হয় ছাত্র সংসদকে টাকা দিয়ে। কারণ এরাজ্যে প্রতিদিন উ পাচার্য, অধ্যক্ষ, অধ্যাপকরা তৃণমূল ছাত্রনেতাদের হাতে মার খান, লাঞ্ছিত হন। এ রাজ্যে অধিকাংশ কলেজে ক্লাস হয় না। কারণ প্রয়োজনীয় সংখ্যক অধ্যাপক বা শিক্ষকদের ৭০ শতাংশ নিয়োগই অসম্পূর্ণ হয়ে রয়েছে। কারণ রাজ্য সরকার মাইনে দিতে পারবে না। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ হয়েছে সারবন্দি। পরিকাঠামো নেই। লাইব্রেরি নেই। ল্যাবরেটরি নেই। খেলার মাঠ নেই। খেলার সামগ্রী নেই। অতএব উচ্চশিক্ষার জন্য এরাজ্যের অন্তত ৬০ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী বেছে নিচ্ছে ব্যাঙ্গালোর, পুনে, দিল্লি, চেন্নাই কিংবা অস্ট্রেলিয়া বা আমেরিকা বা ইংল্যান্ডকে।
জনসংখ্যায় ? না রাজ্য জনসংখ্যা বৃদ্ধির গড় পরিমাপে প্রথম নয়। চতুর্থ। ২০১১ সালে এরাজ্যের জনসংখ্যা ছিল ৯১,২৭৬,১১৫। ২০১৮-য় তা হয়েছে ৯৭,৬৯৪,৯৬০। অর্থাৎ বৃদ্ধির মাত্রা এক দশকে ৬,৪১৮,৮৪৫। শতাংশের হিসেবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৭.০৩ শতাংশ। কিন্তু সমস্যা অন্যত্র। প্রথমত জনবসতির ঘনত্বে এরাজ্যই সবার ওপরে ১০২৯ জন প্রতি বর্গকিমিতে। পশ্চিমবঙ্গ আরও অনেক কিছুতে ফাস্ট। ভুল ইতিহাস বলায় ফাস্ট। উৎসব শিল্পে ফাস্ট। চোলাই মদে ফাস্ট। স্বল্প সময়ে সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি বানানোয় ফাস্ট। ছবি এঁকে দল চালানোয় ফাস্ট। বই বেচে রাজ্য চালানোয় ফাস্ট। সবচেয়ে বেশি নিস্কর্মা সাংসদ নির্বাচন করায় ফাস্ট। মদ খেয়ে মরলে ২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ায় ফাস্ট। ইমাম ভাতা দেওয়ায় ফাস্ট। শিল্প ধরতে বিদেশ ঘোরায় ফার্স্ট। সবচেয়ে বেশি সেতু ভাঙায় ফাস্ট। সেনাবাহিনীকে উস্কানি দেওয়ায় ফাস্ট। সেজন্য একটা সেলাম হয়ে যাক মুখ্যমন্ত্রীকে। সে সেলাম কপালে আঙুল ছুইয়ে নয়। ভোটবাক্সে গেরুয়া শিবিরে আঙুল ছুইয়ে, সেটাই হবে সঠিক সেলাম।
অলোক সরকার
2019-05-17