উপনির্বাচনে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি। মাস খানেক আগেই যে দ্বিমুখী লড়াইয়ের ছবি দেখা গিয়েছিল, তা যেন এবার একেবারে উধাও। চারটি কেন্দ্রের তিনটিতেই জামানত জব্দ। কোনওরকমে মুখ রক্ষা হয়েছে শান্তিপুরে। আজ ভোটের ফলাফলের পর বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, “যেভাবে ভোট হয়েছে তাতে আগামী দিনে উপনির্বাচনে হলে তৃণমূল ১০০ শতাংশ ভোট পাবে।”
দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, দিনাহাটায় একটি গাড়িও দেওয়া হয়নি। গোসাবায় বলা হচ্ছে, বাড়ি থেকে বেরাবেন না। খড়দহে প্রার্থী নিজে ভোট দিতে পারেননি। তবে বিজেপির যে একেবারে কোমর ভেঙে পড়েছে বাংলায়, এমনটা মানতে নারাজ তিনি। আগামী দিনে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী তিনি। বললেন, “সাধারণ নির্বাচনে আবার জিতব। ”
এদিকে আজ দিলীপ ঘোষের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শমীক ভট্টাচার্যও। তৃণমূলকে উপনির্বাচনের চারটি আসনে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন শমীক। তবে একইসঙ্গে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। বলেন, “ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মীদের উপর যে হামলা হয়েছে, তা ভোলার নয়। হাইকোর্টের নির্দেশেই তা স্পষ্ট। প্রচুর বিজেপি কর্মী এখনও ঘরছাড়া। সন্ত্রাসের আবহে দলের মধ্যে একাংশের মত ছিল, আমরা নির্বাচনে যেন অংশ না নিই। যেখানে যেখানে উপনির্বাচন হয়েছে, সেখানেও দলের স্থানীয় নেতা ও কর্মীদের অনেকে এই মত দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও আমরা লড়াই করি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা পরাজিত। এই পরাজয়কে ভোটারদের রায় বা মানুষের রায়ে পরাজয় বলে আমরা গোটা ব্যবস্থাকে অপমানিত করতে চাই না। কিন্তু ১ লাখ ৬৩ হাজার ভোটে জেতা এবং বিরোধী ১১% শতাংশ ভোট পাওয়ার পরেও মানুষ পরাজিত প্রার্থীকে নিগৃহীত হতে দেখেছে। এই দৃশ্য কখনও কাম্য নয়। দিনহাটায় একটা সভা,কর্মসূচি করতে দেয় নি। আশা করব, আগামীদিন মানুষ গণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।”
এদিকে নির্বাচনে চারটি আসনেই পরাজয়ের পর বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, বিপুল জয় পেয়েছে তৃণমূল। আর এই জয়ের জন্য সন্ত্রাস, রিগিং-কেই দায়ী করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, বিজেপির যে সব কর্মী বুথে যাবেন বা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করবেন তাঁদের ভয় দেখিয়ে নিরস্ত করা হয়েছে। মানুষকেও ভয় দেখানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। তারই ফলে বিজেপির এই হার বলেই তাঁর মত। বিজেপি নেতা বলেন, এই ফলাফলে মানুষের স্বাভাবিক পছন্দ-অপছন্দ প্রকাশ পায়নি। স্বৈরাচারী শাসনেরই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।