রাজ্যে গরমের ছুটি বেড়ে যাওয়া বেনজির নয়। অতীতে কখনও ছুটি এগিয়ে এসেছে, কখনও স্কুল খোলার দিন পিছিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এমনটা হয়নি আগে। ফণী ঘুর্ণীঝড়ের আতঙ্কে ছুটি যেমন এগিয়ে এসেছে তেমন স্কুল খোলার দিনও পিছিয়ে গিয়েছে। নির্বাচনের মাঝে এমন আচমকা সিদ্ধান্ত জেনে যারপরনাই আনন্দে পড়ুয়া থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তবে সরকারি বিজ্ঞপ্তি দেখে শিক্ষাক-শিক্ষিকা এবং স্কুল কর্মীদের মধ্যে নানা জল্পনা। স্কুলের ক্লাস বন্ধ থাকবে জানানো হলেও তাঁদের স্কুলে আসতে হবে কি হবে না তা স্পষ্ট নয় বিজ্ঞপ্তিতে।
গত বছরেই স্কুলে স্কুলে গরমের ছুটি বেড়েছিল। ২০১৮ সালে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে সেবার জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেবার বলা হয়, পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের কথা এবং অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত। ২০ জুনের পরিবর্তে ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে গরমের ছুটি।
তার আগে ২০১৬ সালেও গরমের ছুটির সময় বেড়েছিল। তবে শুধুই এগিয়ে আসে ছুটি। সেবার ৯ এপ্রিল শনিবার সরকারি ও সরকার নিয়ন্ত্রিত স্কুলে ছুটি এগিয়ে আনার ঘোষণা করা হয়। জানানো হয়েছিল, ১১ এপ্রিল থেকেই ছুটি পরে যাবে। সেবারও দক্ষিণবঙ্গের অনেক জেলাতেই তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সরকারি ভাবে জানানো হয়, ছাত্র-ছাত্রীদের গরমের হাত থেকে রেহাই দিতে মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী রাজ্যের সব স্কুলে গরমের ছুটি এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত।
মাঝে ২০১৭ সালে সেটা আর হয়নি। সেবারও বিভিন্ন স্কুলের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়। সেই বছরে তাপপ্রবাহের কারণ দেখিয়ে কিছু স্কুলে পঠনপাঠনের সময় বদল করা হলেও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, ছুটি বাড়বে না।
এবার আর শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেননি। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা অনুসারে ছুটি বৃদ্ধি জানানো হয়নি। সরকারি বিজ্ঞপ্তি জানিয়েছে, ঘূর্ণীঝড় ফণীর আতঙ্ক থেকেই এই সিদ্ধান্ত। ৩ মে থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত রাজ্যের সব সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে গ্রীষ্মাবকাশ চলবে। ইতিমধ্যেই সর্বত্র সরকারি বিজ্ঞপ্তি চলে গিয়েছে। তবে এই ঘোষণা নিয়ে একটা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে– এমনিতেই নির্বাচনের জন্য দফায় দফায় সরকারি স্কুলে ছুটি চলছে। এর পরে ঘূর্ণীঝড়ের আশঙ্কায় ছুটি এগিয়ে আনা হলেও তা ৩০ জুন পর্যন্ত টানা হচ্ছে কেন?