ষষ্ঠ দফার ভোটে ব্যারাকপুরের দশ আসনেও ভোট হবে। এরমধ্যেই রয়েছে ভাটপাড়া, জগদ্দল এবং ব্যারাকপুর বিধানসভা কেন্দ্র। যা নিয়ে রীতিমতো মাথাব্যাথা নির্বাচন কমিশনের। গতকালই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল চন্দ্র ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের ভোট নির্বিঘ্নে করানোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছিলেন। এখানে রাখা হচ্ছে বাড়তি ৫টি QRT ভ্যান, এবং সবমিলিয়ে ১০৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। তবুও ষষ্ঠ দফার ভোটের আগে মঙ্গলবার রাত থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল। দফায় দফায় বোমাবাজি হল ব্যারাকপুর, জগদ্দল ও কাঁচড়াপাড়ায়। সবমিলিয়ে উত্তপ্ত হল বিশাল এলাকা।
এমনকি বোমাবাজির ঘটনা ঘটল সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বাড়ির সামনেই। অর্জুন সিংয়ের দাবি, মঙ্গলবার রাতে তাঁর বাড়ির অদূরেই মেঘনা মোড়ে পরপর দুটি বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। ঘটনার পর সাংসদের বাড়ির সামনে শুরু হয় পুলিসি তল্লাসি। ওই তল্লাসিকে ঘিরে পুলিসের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন অর্জুন সিং। বিজেপি সাংসদের দাবি, পুলিশ প্রকৃত দুষ্কৃতীদের না ধরে সাধারণ মানুষকে জেলে ভরেছে। এই বোমাবাজির ঘটনা তারই প্রমাণ। তাঁর আরও দাবি, তল্লাশির নামে বাড়ির মহিলাদেরও মারধোর করেছে পুলিশ।
অপরদিকে মঙ্গলবার রাতে কাঁচরাপাড়া এবংটিটাগড়েও বোমাবাজি হয়। টিটাগড়ে বোমা ফেটে এক জনের মৃত্যুও হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আরও একজন। দুই এলাকাতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে পাশাপাশি নামানো হয়েছে র্যাফও। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, টাগড় স্টেশন সংলগ্ন খাটাল এলাকায় একটি বাড়ির মধ্যে বোমা বাঁধতে গিয়ে বোমা বিস্ফোরণ হয়। ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে, মৃত যুবকের নাম রাজ কুমার যাদব (২৭)। বিস্ফোরণে ওই ঘরের চাল উড়ে যায়, বিভিন্ন জায়গায় বোমা তৈরির সরঞ্জাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনার পাশাপাশি ব্যাপক আতঙ্কের পরিবেশ হয়েছে। রাতেই ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী যায়।
এছাড়া বোমাবাজির ঘটনা সামনে এসেছে কাঁচড়াপাড়া এলাকাতেও। গতকাল গভীর রাতে কাঁচরাপাড়া পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মনসাপাড়া সংলগ্ন এলাকায় দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করে। স্থানীয়দের দাবি, অনেকগুলি বোমা ছুড়ে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বীজপুর থানার পুলিশ সহ কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এলাকায় নামে র্যাফ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। ভোটের আগেই ব্যারাকপুরের বিস্তৃর্ণ এলাকায় বোমাবাজি এবং মৃত্যুর ঘটনায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন সাধারণ মানুষ। গত লোকসভা নির্বচনের আগে থেকে এই এলাকার গোলমালের স্মৃতি এখনও টাটকা। এবার বিধানসভা ভোটের আগে ফের গোলমাল শুরু হল।