কোভিডের দৈনিক সংক্রমণ শীর্ষে উঠেছিল দু’মাস আগে। তারপর থেকে ক্রমশ কমতে থাকে সংক্রমণের হার। কিন্তু এখন সংক্রমণ কমছে আগের চেয়ে ধীর গতিতে। এই পরিস্থিতিতে সরকারকে সতর্ক করে নীতি আয়োগ বলল, আগামী ১০০ থেকে ১২৫ দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। নীতি আয়োগের সদস্য ভি কে পল বলেন, “সংক্রমণ এখন কমছে ধীর গতিতে। এটা খারাপ লক্ষণ। ভারতে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আগামী ১০০ থেকে ১২৫ দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিডের থার্ড ওয়েভ আসতে পারে দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে। এদিকে সংক্রমণের হার কমায় কড়াকড়ি শিথিল করছে একাধিক রাজ্য। ভি কে পল বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি যাতে জুলাইয়ের মধ্যে ৫০ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া যায়। সম্ভবত এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আমরা সফল হব। সরকার কোভিশিল্ড ও কোভ্যাকসিনের আরও ৬৬ কোটি ডোজের জন্য অর্ডার দিয়েছে। এছাড়া বেসরকারি ক্ষেত্রগুলি পাবে আরও ২২ কোটি ডোজ।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, তৃতীয় ঢেউকে ঠেকানোর একমাত্র উপায় হল টিকাকরণ। ভি কে পল বলেন, আইসিএমআরের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের কোভিডে মৃত্যুর আশঙ্কা নেই। তামিলনাড়ুতে পুলিশকর্মীদের ওপরে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। তাতে দেখা যায়, যে পুলিশকর্মীরা কোভিড মোকাবিলার কাজে নিযুক্ত ছিলেন, তাঁদের মৃত্যুর সম্ভাবনা ৯৫ শতাংশ কমেছে। যাঁরা ভ্যাকসিন নেননি, তাঁদের হাজার জনের মধ্যে কোভিডে মৃত্যুহার ১.১৭ শতাংশ। যাঁরা ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তাঁদের হাজার জনের মধ্যে মৃত্যুর হার ০.০৬ শতাংশ।
কিছুদিন আগে হু-র প্রধান তেদ্রোস আদহানম ঘেব্রেইসাস বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হল, আমরা এখন থার্ড ওয়েভের প্রাথমিক স্তরে রয়েছি।” হু প্রধানের মতে, নানা দেশে সামাজিক যোগাযোগ বেড়েছে। সর্বত্র কোভিড বিধি মেনে চলা হচ্ছে না। তাছাড়া অতি সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের জন্যও সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইউএন নিউজ অনুযায়ী, গত কয়েক মাস ধরে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় টিকাকরণ বৃদ্ধি পেয়েছে। একসময় ওই সব অঞ্চলে সংক্রমণ ও মৃত্যু, দুই-ই কমেছিল। কিন্তু সম্প্রতি সংক্রমণ ফের বাড়ছে। করোনাভাইরাসের অভিযোজন অব্যাহত রয়েছে। নতুন ভ্যারিয়ান্ট আরও ছোঁয়াচে হয়ে উঠছে।
তেদ্রোস জানিয়েছেন, “এখনও পর্যন্ত ১১১ টি দেশে ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের অস্তিত্ব লক্ষ করা গিয়েছে। মনে হয়, শীঘ্রই বিশ্ব জুড়ে এই ভ্যারিয়ান্টই প্রধান হয়ে দাঁড়াবে।” ১০ সপ্তাহ ধরে বিশ্ব জুড়ে কোভিডে মৃত্যু কমছিল। গত সপ্তাহে ফের বেড়েছে মৃত্যু।