রাম বনাম মমতা বিতর্ক নিয়ে হতাশ বিশ্ব হিন্দু পরিষদ৷ বাংলার হিন্দুর শ্রদ্ধার জায়গাতে আঘাতের জন্য বিরক্ত এই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব৷ সংগঠনের এক নেতার বক্তব্য, কখনও উনি ‘জয় শ্রী রাম’ শুনে তেড়ে যাচ্ছেন৷ আবার কখনও মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলে দিচ্ছেন ‘রাম কোন দেবতা নন’৷ রামের সঙ্গে যেন যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাই আমরা ওঁর সম্পর্কে আর কিছু বলতে চাই না৷ মানুষ যা বলার বলবেন৷
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান নিয়ে বিতর্কের পর একটি নির্বাচনী জনসভা থেকে মমতা বলেন, বিজেপি ভগবান তৈরি করছে৷ রাম কোনও দেবতা নন৷ আমি বিজেপির স্লোগান বলব না৷ মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের পর আরও একবার নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়৷ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিডিয়া কোঅর্ডিনেটর সৌরিশ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একটি বিশেষ শ্রেণীকে খুশি করতেই এসব বলছেন উনি৷ রাজ্যে লোকসভা ভোট চলছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর এই সব বক্তব্যের প্রভাব নিশ্চয় ইভিএমে পড়বে৷ বাংলার হিন্দুদের কাছে রাম শুধু দেবতাই নয়, আদর্শও৷’’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে৷ তাতে দেখা যাচ্ছে নির্বাচনী প্রচারে চন্দ্রকোনার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের সামনে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দেন কিছু সাধারণ গ্রামবাসী৷ আর তাতেই চটে গিয়ে গিয়ে কনভয় থামিয়ে রাস্তায় নেমে এসে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাকে গালাগাল দিচ্ছে! সাহস থাকলে সামনে আয়৷ পালাচ্ছিস কেন? সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর এরপর ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দেওয়ার ‘অপরাধে’ তিনজনকে আটক করে পুলিশ৷
পুরো ঘটনার কড়া সমালোচনা করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে৷ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পূর্বাঞ্চলের শীর্ষ নেতা সচিন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, ‘‘আমরা শুনেছিলাম ব্রিটিশদের রাজত্বে বাংলায় বন্দেমাতরম স্লোগান দেওয়া যেত না৷ কেউ সাহস করে ‘বন্দেমাতরম’ বললে তাকে জেলে পোরা হত৷ এখন পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের জন্য একই রকমের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ ‘জয় শ্রী রাম’ বললে জেলে যেতে হচ্ছে৷’’ সংবাদমাধ্যমের খবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ের সামনে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দেওয়ার ‘অপরাধে’ তিনজনকে আটক করছে পুলিশ৷
ধৃতদের নাম, সীতারাম মিদ্দা, সায়ন মিদ্দা ও বুদ্ধদেব দোলুই৷ এই তিনজনকে আটক করেছে চন্দ্রকোণা টাউন থানার পুলিশ৷ভিএইচপি নেতা সচিন আরও বলেন, ‘‘ভিডিওটিতে দেখলাম ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান শুনে গাড়ি থামিয়ে রাস্তায় নেমে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন আমাকে গালিগালাজ করেছে৷ হিন্দুদের রাষ্ট্রীয় মহাপুরুষ শ্রী রামচন্দ্র৷ যার উপর আপামর হিন্দুদের আস্থা রয়েছে৷ বাংলার ঘরে ঘরে যিনি পূজিত হন সেই রামের নাম নেওয়াকে উনি গালাগালি বলছেন? এতে বাংলার হিন্দুরা অবশ্যই অপমানিত বোধ করবেন৷ ওঁর এজন্য বাংলার হিন্দুদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ৷’’