থমে বলা হয়েছিল ১৯টি। এবার বলা হল, ২৭টি। গোটা বৌবাজার এলাকার এতগুলি বাড়িই ভেঙে ফেলা হবে বলে জানানো হল সরকারি তরফে। এই সপ্তাহেই গোটা ঘটনাস্থল ভাল করে ঘুরে দেখে মেট্রো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট জমা দিল কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের বিল্ডিং সংক্রান্ত একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি।
ওই কমিটি জানিয়েছে, বৌবাজারে যে বাড়িগুলি ভেঙে গেছে, আর যেগুলি ভেঙে ফেলতে হবে, সেই সংখ্যাটা মোট ২৭। এই বাড়িগুলি আর কোনও ভাবেই বসবাসযোগ্য করে তোলা যাবে না। সব ক’টিই এই মুহূর্তে বিপজ্জনক বাড়ির আওতায় পড়ছে।
তবে সূত্রের খবর, ওই বাড়িগুলি ছাড়াও আরও যে সব বাড়ির পরিবার ঘরছাড়া, তাদের মধ্যে থেকেও ২৭টি পরিবারের বাসিন্দাদের দ্রুত ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সব ঠিক থাকলে, পুজোর আগেই নিজের বাড়িতে ফিরে যেতে পারেন তাঁরা।
কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন,দুর্গা পিতুরি লেন ও স্যাকরাপাড়া লেনে এই মুহূর্তে কাউকে ফেরানো যাবে না। কিন্তু খানিক দূরে মদন দত্ত লেনের দিকে ২৭টি বাড়িকে ফিট সার্টিফিকেট দেওয়া যায়। তবে শুধু কমিটি বললেই হবে না, কেএমআরসিএলের তরফে সেগুলি পরীক্ষা করে, পুরসভার চূড়ান্ত ছাড়পত্র পাওয়ার পরে তবেই ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানো হবে।
অবশ্য যে ২৭টি বাড়ি ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার বাইরে আরও ১৬টি বাড়ি নিয়ে দ্বন্দ্বে আছে কমিটি। সেগুলি ভেঙে ফেলা হবে নাকি রাখা হবে, সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলেই এই রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে।
চলতি মাসের গোড়ায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সম্প্রসারণের কাজের জন্য মাটির তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময়ে ভেঙে পড়েছিল বৌবাজার এলাকার একাধিক বাড়ি। রাতারাতি খালি করে দেওয়া হয়েছিল গোটা এলাকা। এর পরেই বৌবাজারের বাড়িগুলির হাল-হকিকত জানতে তৈরি হয়েছিল বিশেষজ্ঞ কমিটি।
সয়েল স্পেশ্যালিস্ট নীতিন সোমের নেতৃত্বে কেএমআরসিএলের তরফে এই বিল্ডিং কমিটি তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে রয়েছেন ডঃ সোমনাথ ঘোষ, ডঃ অমিতাভ ঘোষ, চেন্নাই আইআইটি-র ডঃ এল কে পিছুমনি, এবং মিঃ কেনওয়াং। পাঁচ জনের এই কমিটির তত্ত্বাবধানে বৌবাজার এলাকায় মোট ৭৪টি বাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় সম্প্রতি। বুধবার রাতেই সেই রিপোর্ট জমা পড়ে কেএমআরসিএলের কাছে।
কেএমআরসিএলের জেনারেল ম্যানেজার এ কে নন্দী বলেন, ”বিল্ডিং সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট জমা পড়েছে। ২৭টি বাড়ি ভেঙে ফেলা হবে বলে ঠিক হয়েছে। পাশাপাশি, অন্য ২৭টি বাড়ির বাসিন্দাদের নিজের বাড়িতে ফেরানো হবে। এর বাইরে ১৬টি বাড়ি নিয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি, এ বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।”