অনেক দিন আগেই হয়ে গিয়েছে করোনার বছরপূর্তি। তবুও রেহাই নেই। বরং দিন যত যাচ্ছে ততই যেন সংক্রমণের বন্যা বইছে চারিদিকে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাজেহাল গোটাদেশ। প্রতি মুহুর্তে বিশ্বের মধ্যে করোনা সংক্রমণে রেকর্ড গড়ছে ভারত। ভোটের আবহে বাংলায়ও বাড়ছে দৈনিক রেকর্ড হারে সংক্রমণ। আর এই অবস্থায় ভয় ধরাচ্ছে করোনার নয়া স্ট্রেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনার এই নতুন স্ট্রেন নাকি ট্রিপল মিউট্যান্ট। অর্থাৎ তিনটি মিউটেশন হয়ে জন্ম হয়েছে ভাইরাসের এই নতুন রূপ। যারফলে বাংলা জুড়ে হু-হু করে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ।
আর এই কঠিন পরিস্থিতিতে বঙ্গবাসীর জন্য ভ্রমণের উপর নয়া নিষেধাজ্ঞা জারি করল ওড়িশা সরকার। জানা গিয়েছে, বাংলায় যে হারে করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে বর্তমান পরিস্থিতিতে কেউ যদি পশ্চিমবঙ্গ থেকে ওড়িশায় যান তাহলে তারজন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে কাটাতে হবে। তারপরই মিলবে প্রকাশ্যে ঘোরার ছাড়পত্র।
শুধু তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা এমন কোনও ব্যক্তির যদি করোনার দুটি ডোজ নেওয়াও থাকে এমনকি ৪৮ ঘণ্টা আগে করানো আরটি-পিসিআর টেস্ট নেগেটিভ আসে তা সত্ত্বেও ওড়িশায় আসার পর ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
এই বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব সুরেশ চন্দ্র মহাপাত্র জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণ রুখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেভাবে পাশের রাজ্যে হু-হু করে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাতে এরাজ্যেও যাতে করোনার নয়া স্ট্রেন ছড়িয়ে না পড়তে পারে তার জন্যই এই নির্দেশিকা লাগু করা হয়েছে।
সংক্রমণ রুখতে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই নিয়ম জারি থাকবে। এমনকি কোনওভাবেই যাতে বাংলার কেউ এ রাজ্যে অবাধে ঘোরাফেরা না করতে পারেন তার জন্য ন্যাশনাল হাইওয়ে, ওড়িশা বর্ডার এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সড়কপথে চেকপয়েন্টে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে পুলিশ ফোর্স।
বিমানবন্দর এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দিয়ে ওড়িশায় প্রবেশের ক্ষেত্রে পুলিশ, বিডিও এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য প্রদান বাধ্যতামূলক। এছাড়াও এই সময়ে কেউ সরকারি কোয়ারেন্টাইনে না থাকতে চাইলে তাঁকে নিজে টাকা দিয়ে সেফহোমে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু তাই নয়, কোনও ব্যক্তি যদি সরকারি এই গাইডলাইন অমান্য করেন তাহলে তাঁর জন্য ভারতীয় দন্ডবিধির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০০৫ এবং মহামারী আইন ১৮৯৭ এর অ্যাক্ট অনুযায়ী শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।