ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে বিধ্বস্ত বাংলা৷ উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি, ভাটপাড়া থেকে বাংকুড়ার পাত্রসায়রে বিপন্ন আইনশৃঙ্খলা৷ বিজেপির কাঠগড়ায় রাজ্যের শাসক দল৷ বাংলায় এই বেড়ে চলা হিংসার নেপথ্যে তৃণমূলের ভোট ব্যংকের রাজনীতিকে দায়ী করলেন বিজেপি রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষ৷
গেরুয়া শিবিরের রাজ্য সভাপতির কথায়, ‘‘রাজ্যের সংখ্যালঘুদের বোড়ে হিসাবে ব্যবহার করছে তৃণমূল৷ তারা নয় মারছে, নয় মারছে৷ একটি রাজনৈতিক দলের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে সংখ্যালঘুরা৷’’ তাঁর মতে এর থেকে সংখ্যলঘুদেরই বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ রাজনৈতির মহলের ব্যাখ্যা, এবার লোকসভায় সংখ্যালঘু ভোট গিয়েছে তৃণমূলের কাছে৷ সে কথা স্বীকার করে কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন মমতা৷ তাই দিলীপের পরামর্শের কেন্দ্রে তারাই৷
রাজ্যে অরাজক পরিস্থির জন্য মুখ্যমন্ত্রী সহ জোড়াফুল শিবিরের নেতাদের মন্তব্যকে কাঠগড়ায় তোলেন দিলীপ ঘোষ৷ তিনি বলেন, ‘‘লাগামছাড়া কথা বলছেন তৃণমূল নেতারা। দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো আচরণ করছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ তাদের উস্কানিতেই তৃণমূল কর্মীরা এত উদ্যত আচরণ করছেন৷
কোথাও পুলিশের সামনে, আবার কোথাও থানা থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বেই চলছে হানাহানি৷ পুলিশ পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ বলে দাবি পদ্ম শিবিরের৷ এই প্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘পুলিশ সামলাতে পারছে না। মানুষের রাগ সরকারের উপরে আছড়ে পড়ছে। রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা নেই। মারপিট, খুনোখুনি হয়েই চলেছে৷ এইভাবে চলতে পারে না৷’’ ভাটপাড়ায় দুই বিজেপি কর্মীর মৃত্যর জন্যও পুলিশের গুলি চালানোকে দায়ী করা হয়েছে বিজেপির তরফে৷ প্রতিবাদে সোমবার জেলায় জেলায় পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও অভিযান করবে বিজেপি৷
‘কাটমানি’র বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি অনিবার্য বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি৷ তারপর থেকেই রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত বিভিন্নস্তরের তৃণমূল জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে জেহাদ৷ অস্বস্তিকর অবস্থা রাজ্যের শাসক দলের৷ মুখ্যমন্ত্রীর এইসব হুঁশিয়ারি লোক দেখানো বলে কটাক্ষ বিজেপি রাজ্য সভাপতির৷ তাঁর কথায়, ‘‘কোনও জনপ্রতিনিধির বাড়ি ঘেরাও করে লাভ নেই৷ সব থেকে বড় ‘কাটমানি’ নেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাই কালীঘাটে তাঁর বাড়ি ঘেরাও করা উচিত৷’’
মেয়াদ ফুরনোর আগেই সংখ্যালঘু হবে মমতা সরকার৷ আগেই হুঙ্কার দিয়েছেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয় থেকে মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষরা৷ তাহলে কী এরাজ্যে জারি হবে রাষ্ট্রপতি শাসন৷ বিজেপির তরফে উত্তরে আগেই জানানো হয়েছিল ‘না’৷ এতে রাজনৈতিকভাবে সুবিধা পেয়ে যাবে মমতা শিবির৷ এদিন দিলীপবাবু বলেন, ‘‘হিংসার বদলে মানুষই এবার বদল চাইছেন৷ তারাই ৩৫৬ করবেন৷’’
লাগাতার আন্দোলনের সুফল পেয়েছে বিজেপি৷ লোকসভা ভোটে তাদের ঝুলিতে ২ থেকে বেড়ে ১৮টি আসন৷ এবার সেই ফর্মুলাতেই আন্দোলন জারি রেখে শাসক দলের উপর চাপ সৃষ্টিতে মরিয়া গেরুয়া শিবিরের নেতারা৷