বিশ্বকর্মা পুজোর দিন শ্রমিক দিবস পালন করুন। ‘মে-দিবস’ নামক বিদেশি উৎযাপন বাতিল করুন

শ্রমের দেবতা হলেন বিশ্বকর্মা। শ্রমিক দিবস হচ্ছে ভাদ্র সংক্রান্তির দিন, অর্থাৎ বিশ্বকর্মা পুজোর দিন। আর বাম-কংগ্রেসী ঘরানার পয়লা মে ভুলে যান। মে-দিবস দিবস – ভারতীয় ঘরানা নয়। দাবী তুলুন, আগামী বছর থেকে যেন মে-দিবসে ছুটি বাতিল হোক।

সনাতনী সংস্কৃতিতে বিশ্বকর্মাকে এ বিশ্বের যাবতীয় স্থাপনার আশীর্বাদক দেবতা বলে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। এ বিশ্বের সকল কর্মের কারিগরী-দেবতা তিনি। সকল যন্ত্রের যন্ত্রী-দেব। সকল প্রযুক্তির প্রকাশ-শক্তি। পৃথিবীর সকল গতির প্রকাশ তিনি৷
তাঁকে বিনম্র প্রণাম করে, স্মরণ-মনন করে কাজে নিয়োজিত হন ভারতীয় শ্রমিক। তাঁর আশিস প্রার্থনা করে দুঃসাহসিক নির্মাণ কর্মে ব্রতী হন তারা। কাজেই বিশ্বকর্মার বাৎসরিক আরাধনার দিনটি অর্থাৎ ভাদ্রের সংক্রান্তি-টি হওয়া উচিত শ্রমের পুজো, শ্রমিকের স্বীকৃতি আর শ্রমিক-দেবতার আশীর্বাদ প্রার্থনার দিন।

আশ্চর্য লাগে, কীভাবে একটি আপাদমস্তক বামপন্থী-শালুতে মোড়া ১ লা মে ভারতে শ্রমের পরব হতে পারে? কারা পালন করছেন? না, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি; মনে রাখতে হবে নামটি কিন্তু ‘ ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি’ নয়। অর্থাৎ এই কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে ভারতীয়ত্ব নেই, ভারতীয় বোধ নেই; দলটি কেবলমাত্র আন্তর্জাতিক একটি পার্টির ভারতীয় শাখা । তার আবার নানান শাখা-প্রশাখা। সবকটি দল-ই ভারতীয়ত্বের বিরোধী। এদের কাছ থেকে ভারতীয় সংস্কৃতি আশা করা যায় না, যদিও এরা নিজেদের ধর্ম নিরপেক্ষ বলে থাকে, কিন্তু একটি বিশেষ ধর্মের কর্তা-ব্যক্তি দেখলেই কেমন একটু ধর্মভীরু হয়ে যান। মুসকিল হল, কেউ নিজেকে হিন্দু বলে গর্ব বোধ করলে, তাকে ‘সাম্প্রদায়িক ‘ আখ্যা দেন। এরা একটি বিশেষ ধর্মে নাড়া বেঁধে বসে রয়েছে।

এদিকে, ভারতবর্ষের মধ্যেই বহু মনীষার চিন্তা চেতনার পরতে পরতে ছিল সমাজতত্ত্ব। শ্রীচৈতন্যদেব থেকে শুরু করে বঙ্কিমচন্দ্র, শিবনাথ শাস্ত্রী, স্বামী বিবেকানন্দ প্রমুখের নাম এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য। তা সত্ত্বেও ভারতীয় মনীষায় সমাজতান্ত্রিক দল গঠিত হয় না; তৈরি হয় না ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (বিবেকানন্দ বাদী) – র মত দল। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির শেকড় ভারতে নয়, ভারতের বাইরে — কখনও হেড অফিস রাশিয়া, কখনও চীন, কখনও কিউবা।

এ দেশের সমস্ত কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যদেরও অনুরোধ — তারা প্রথমে ভারতীয় হোন, ভারতের সীমার মাঝেই ভারতীয়ত্ব খুঁজুন, ভারতের প্রাচীন ইতিহাস আর সংস্কৃতিকে মান্যতা দিন; তারপর বরং দুনিয়ার কমিউনিজমের সুলুকসন্ধান করতে বেরোন।
আগামী বিশ্বকর্মা পুজোর দিনটিতে ভারতীয় রীতি মেনে শ্রমের পুজো আর শ্রমিকের পুজো করুন @ কমরেড। যদি মনে হয়, পুজো-পার্বনে গর্দান যেতে পারে, তাহলে বিশ্বকর্মাকে না হয় আপাতত কুলুঙ্গিতে তুলে রাখুন; পরে মনে হলে সিংহাসন পরিষ্কার করে বসাবেন। কিন্তু বিশ্বকর্মা পূজার দিনেই শ্রমিক দিবস পালন করুন আর পয়লা মে-কে বাই-বাই করুন; জলদি। এসে গেল বিশ্বকর্মা পূজা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.