তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগে সরব এবার খোদ তৃণমূল কর্মী। ৮ লক্ষ টাকা দিতে অস্বীকার করায় দলীয় কর্মীর ইটভাটা দখলের অভিযোগ উঠল শাসনের বিতর্কিত তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সইদুল ইসলাম সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। এলাকার পরিচিত তৃণমূল কর্মী আবু বক্করের আরও অভিযোগ, ইটভাটা অঞ্চল সভাপতিকে লিখে না দেওয়ায় তাঁর স্ত্রীকে বেধড়ক মারধরও করেছে অভিযুক্ত সইদুল ইসলামের দলবল। এমনকি এই ঘটনায় শাসন থানায় অভিযোগ দায়ের করায় তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে অভিযোগ তোলার জন্যে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।
জানা গিয়েছে ঘটনার সূত্রপাত একাদশীর দিন ১৬ অক্টোবর। অভিযোগ, সেদিন রাত ১১ টা নাগাদ শাসন থানার অন্তর্গত মজলিশপুরে আবু বক্করের বাড়িতে চড়াও হন তৃণমূলের শাসন অঞ্চল সভাপতি সইদুল ইসলাম, অঞ্চল কমিটির সদস্য কুদ্দুস আলি, অঞ্চল সেক্রেটারি সুকুর আলি এবং অঞ্চল সহ সভাপতি মুকুন্দ মন্ডল। তাঁর মালিকানাধীন ইটভাটা সইদুলকে লিখে দেওয়ার জন্য আবু বক্করকে চাপ দিতে থাকেন তাঁরা। কিন্তু আবু বক্কর সই করতে অস্বীকার করায় শুরু হয় তাঁকে মারধর। তাঁর পুত্র এবং স্ত্রী আলেয়া বিবি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে দু’জনকেই বেধড়ক মারধর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের বারাসাত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আরও অভিযোগ, পুরো ঘটনা লিখিত আকারে শাসন থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানায় প্রথমে অভিযোগ পত্র নিতে অস্বীকার করে। এরপর বারাসতের পুলিস আধিকারিককে ঘটনার কথা জানালে, তাঁর নির্দেশে অভিযোগ নেওয়া হয়। কিন্তু বয়ান বদল করতে বাধ্য করা হয় বলে দাবি করেছেন আবু বক্কর। একইসঙ্গে থানায় অভিযোগের পরেই অভিযুক্তরা তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে প্রাণে মারার হুমকি দিতে শুরু করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। ভয়ে আতঙ্কে বাড়ি ছাড়া পরিবার।
যদিও এই বিষয়ে বারাসত ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শম্ভু ঘোষের দাবি, মিথ্যে অভিযোগ। এধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি। সমস্তটাই নাটক চলছে। দলের বদনাম করতে এরকম অভিযোগ করা হচ্ছে। ওদিকে ঘটনার পরেই শাসকদলের নিন্দায় সরব বিজেপি বারাসাত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “তৃণমূলের জমানায় দুটো জিনিস চলছে। একটা হচ্ছে দখলদারি আর একটা হচ্ছে তোলাবাজি । ভোটের সময় বুথ দখল আর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলা আদায়।” গোটা বিষয় নিয়ে শাসক দল ও প্রশাসনকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি সিপিএম নেতৃত্বও। সিপিআইএম-এর বারাসত দক্ষিণ ১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক কুতুবউদ্দিন আহমেদ কটাক্ষ করেন, বারাসাত ব্লকের তৃণমূল নেতৃত্ব শুধুমাত্র নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। পাশাপাশি প্রশাসনও শাসক দলের ক্যাডারে পরিণত হয়েছে।