সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে হাওড়া সদর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে প্রচারের ঘটনায় মাথা ঝোঁকালো শাসক দল। ক্ষমা চাইতে এক রকমের বাধ্য হল তৃণমূল।
মধ্য হাওড়ার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে তৃণমূলের মিছিলে সামিল হন বেশ কিছু শাসক দলের সমর্থক। সন্দেহ নেই তাঁরাও মোহনবাগান প্রেমী। সোমবার সবার প্রথম ‘দ্য ওয়াল’ই এই খবর লিখেছিল। এরপরই বিতর্কের ঝড় ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন মোহনবাগান সমর্থকরা। অবশেষে ঘরে-বাইরে চাপে পড়ে মধ্য হাওড়া ২৪ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূল কংগ্রেসের পেজ থেকে স্টেটাস দিয়ে ক্ষমা চাওয়া হয় শাসক দলের পক্ষ থেকে। যদিও মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ওই পেজ থেকে দু’দিন আগের বিতর্কিত মিছিলের ছবিগুলি সরানো হয়নি।
এই ঘটনা সামনে আসতেই নিন্দা করেছিলেন মোহনবাগানের কর্মকর্তা তথা প্রাক্তন ফুটবলার সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে তিনিও বালির বাসিন্দা। হাওড়া সদর কেন্দ্রেরই ভোটার। সত্যজিৎ বলেন, “এই ব্যাপারটা একদমই ঠিক না। প্রত্যেকের ব্যক্তিগত মতামত থাকতেই পারে। কিন্তু ক্লাব আর রাজনীতি তো আলাদা জায়গা। এটা যাঁরা করেছেন, তাঁদের দায়িত্ব। তাঁরা রঙটা ব্যবহার না করলেই পারতেন।” সেই সঙ্গে সত্যজিৎবাবু আরও বলেন, “যে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় মোহনবাগানের হয়ে এত ম্যাচ খেলেছেন, এত তাঁর অবদান, তিনিও তো কখনও সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে প্রচারে যান না।”
আদ্যোপান্ত মোহনবাগানী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ কুনাল ঘোষ একটি দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট করে এই ঘটনাকে ‘কুৎসিত ঘটনা’ বলে তোপ দাগেন। সেই সঙ্গে দাবি জানান, যাঁরা এই করেছেন, তাঁদের ক্লাবের সামনে এনে ৬ ঘণ্টা নিল ডাউন করিয়ে রাখা হোক। অন্য রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী মোহনবাগান সমর্থকরা ক্ষোভে ফুঁসতে শুরু করেন। অনেকের মতে, হাওড়ার প্রাক্তন সাংসদ অম্বিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী করেছিলেন প্রসূনকে। রাজনৈতিক মহলের অনেকে মনে করেন, হাওড়ার মোহনবাগান আবেগকে ব্যবহার করতেই দিদি কৌশলে প্রার্থী করেছিলেন তাঁকে। যদিও সবটাই ছিল ভিতর ভিতর। কিন্তু মধ্য হাওড়ার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের এই ঘটনায় সবতাই বেআব্রু হয়ে পড়ে। পর্যবেক্ষকদের মতে, ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কোনও রাস্তা ছিল না তৃণমূলের কাছে।