সারদা মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তথা ইডি-র জেরার মুখে পড়ে মাস খানেক আগে তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় জানিয়েছিলেন, তিনি টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন। তখন বলেছিলেন, ২৯ লক্ষ টাকা সারদার থেকে নিয়েছিলেন তিনি। তা কড়ায়গণ্ডায় ফেরত দিয়ে দেবেন ইডিকে।
বুধবার সেটাই করলেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ। সূত্রের খবর, এ দিন সকালে ইডি-র কাছে ড্রাফট পাঠিয়ে ৩০ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন তিনি। যদিও এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি শতাব্দী রায়।
লোকসভা ভোট শেষ হতেই সারদা মামলায় সিবিআই এবং ইডি যে শতাব্দী-র খোঁজ নেওয়া শুরু করেছে তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই খোলা মঞ্চ থেকে জানিয়েছিলেন। ২১ জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ সমাবেশের মঞ্চে মমতা ওঠার মুখে শতাব্দী তাঁর হাত চেপে ধরেন। বলেন, দিদি ওরা আবার ডাকাডাকি করছে।
এর ক’দিন বাদেই টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ইডিকে জানান শতাব্দী। অতীতে ঠিক যে ভাবে অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী একবার চিটফান্ডের টাকা ফেরত দিয়েছিলেন সে পথেই হাঁটলেন এই টলিউড অভিনেত্রী।
কিন্তু এ ঘটনা নিয়ে সমান্তরালেই নতুন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রথম প্রশ্ন হল, সারদা চিটফান্ডের টাকা নয়ছয়ে শতাব্দীর কী ভূমিকা ছিল? আদৌ কোনও ভূমিকা ছিল কিনা? যদি কোনও ভূমিকা থেকে থাকে তা হলে টাকা ফেরত দিলেই কি দোষ মাফ?
শতাব্দীর নাম না করেও এর আগে চিটফান্ড কাণ্ডে অন্য অভিযুক্ত তথা তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, এতদিন পর অনেকের বিবেক জাগ্রত হচ্ছে দেখছি। কিন্তু তাঁদের বিবেক আগে জাগেনি কেন?
গত পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে সারদা তথা চিটফাণ্ড কাণ্ডের তদন্ত করছে কেন্দ্রের দুই তদন্ত এজেন্সি সিবিআই এবং ইডি। শতাব্দীকে ২০১৪ সাল থেকেই জেরার জন্য ডাকা হচ্ছে। কিন্তু তখন একবারও টাকা ফেরত দেওয়ার কথা তিনি বলেননি।
আরও গুরুত্বপূর্ণ হল, চিটফাণ্ড কাণ্ডে অভিযুক্ত প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেতা তাপস পাল যেমন সারদা-র হয়ে চিঠি লিখেছিলেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে। কিন্তু শতাব্দী সারদার হয়ে ঠিক কী করেছিলেন তা পরিষ্কার নয়। শতাব্দী সারদার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন না। তাদের কোনও বিজ্ঞাপনেও অভিনয় করেননি। তা হলে ৩০ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা কোন খাতে সারদা-র থেকে নিয়েছিলেন।
এই প্রশ্ন রইলই।