বিধানসভা ভোটের আগে অস্বস্তি বাড়ল তৃণমূলের। সাংবাদিক সম্মেলন করে দলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিলেন কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। এমনকী অমিত শাহ ডাকলে তাঁর সঙ্গে কথা বলতেও তিনি প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানালেন। তাঁর তৃণমূলে ফেরার আরও কোনও সম্ভাবনা নেই বলে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ।
বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা ভোট। ইতিমধ্যেই ঘর গুছোতে শুরু করে দিয়েছে সব দল। আসন্ন ভোটে জিতে বাংলা দখলে মরিয়া গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে দলের সাংগঠনিক ফাঁক-ফোকর মিটিয়ে নতুন করে ঝাঁপাতে প্রস্তুত শাসকদল তৃণমূল। উত্তরবঙ্গে এমনিতেই বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি বেশি। গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে আশাতীত সাফল্য পেয়েছে পদ্ম-শিবির।
গত কয়েকদিন ধরেই দলের প্রতি উষ্মা প্রকাশ করে চলেছেন কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। দলের নেতাদের একাংশের আচরণে তিনি মর্মাহত বলেও জানিয়েছিলেন। সুযোগ বুঝে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মিহিরবাবুকে কাছে টানতে দেরি করেনি বিজেপি।
দুর্গাপুজো মেটার পরেই মিহির গোস্বামীর বাড়িতে গিয়ে বিজয়ার প্রমাণ সেরে এসেছেন কোচবিহারের তৃণমূস সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। মিহির গোস্বামী তৃণমূল ছাড়তে পারেন এই আশঙ্কা জোরালো হতেই এরপর মাঠে নামে তৃণমূল নেতৃত্ব।
দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে মিহিরবাবুর বাড়িতে পৌঁছে যান রাজ্যের দুই মন্ত্রী ও উত্তরবঙ্গের তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও গৌতম দেব। তবে মিহিরবাবুর সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়নি। একটানা ৯ দিন অন্তরালে থাকার পর সোমবার নিজের বাড়িতে ফিরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী।
দলের প্রতি একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। তৃণমূলে ফেরার তাঁর আর ইচ্ছা নেই বলেও জানিয়েছেন এই বিধায়ক। একইসঙ্গে সুযোগ পেলে তিনি বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে পারেন বলেও জানিয়েছেন।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মিহির গোস্বামী বলেন, ‘‘তৃণমূলে ফিরছি না। আমার যে ন্যূনতম প্রাসঙ্গিকতা আছে তা দলের কলকাতার নেতারা মনে করেন না। তৃণমূলে ফেরার কথা ভাবিনি, ভাবছিও না।’’
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘অমিত শাহ অনেক ওপরের মানুষ৷ আমার মতো মানুষকে তিনি ডাকলে কথা বলব। আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষকে যে তিনি ডাকবেন এটা আশা করি না। সময় বলবে বিজেপিতে যাচ্ছি কিনা। তবে গেলেও কোনও কিছুর বিনিময়ে নয়। মানুষের কাজের ইচ্ছে নিয়ে আমি আমার সিদ্ধান্ত নেব।’’