শারীরিক ভাবে অক্ষম ব্যক্তি তিনি। অনেক চেষ্টার পর সরাকারি অনুদান হিসাবে মিলেছিল একটা ট্রাই সাইকেল। কিন্তু তিনি বিজেপি করেন এই অভিযোগে রাজ্য সরকার প্রদত্ত সেই ট্রাই সাইকেল কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ উঠেছে হুগলির তারকেশ্বরের শামসেরপুর এলাকায়।
অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা চন্দ্র শেখর ঘোষ বালিগরি ২ নম্বর পঞ্চায়েতের বুথ সভাপতি। এবং তিনি সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের ছায়া সঙ্গী হিসাবে পরিচিত এলাকায়।
শামসেরপুরের বাসিন্দা ইন্দ্র রায়। বছর চারেক আগে শারীরিক সমস্যার কারণে দুটি পা পঙ্গু হয়ে যায় যুবকের। পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থাও তথৈবচ। এই অবস্থায় একটা ট্রাই সাইকেলের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছিলেন তিনি। আবেদন মেনে একটি ট্রাই সাইকেল পেয়েও যান। এর পর ওই ট্রাই সাইকেলে চেপে লটারির টিকিট বিক্রি করে কোনওরকম সংসার চালাতেন যুবক। সংসারে রয়েছে স্ত্রী, দুই সন্তান ও বৃদ্ধ বাবা। এহেন ইন্দ্র বিজেপি করেন, এই অভিযোগে তাঁর কাছ থেকে ট্রাই সাইকেল কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি।
ইন্দ্র রায়ের অভিযোগ, এক মাস আগে এলাকার যুবকদের বিজেপি তকমা লাগিয়ে মারধোর করা হয়। সেসময় তাঁর ট্রাই সাইকেলটি কেড়ে নেন তৃণমূল নেতা চন্দ্র শেখর ঘোষ। সাইকেলটি তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে রাখা আছে বলে জানতে পেরেছেন তিনি। ট্রাই সাইকেলটি না থাকার কারণে গত একমাস ধরে তিনি বেকার হয়ে ঘরে বসে আছেন বলে জানান। তাঁর দাবি, থানায় অভিযোগ জানাতে গেলেও অভিযোগ নেওয়া হয়নি। এখন প্রশাসন যেন তাঁর ট্রাই সাইকেলটি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে, এটাই তাঁর আবেদন করেছেন।
অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা চন্দ্র শেখর ঘোষ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যকে মারধোর করার অভিযোগ ওঠে ওই এলাকার কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে থানায় অভিযোগও জানানো হয়েছে। যে প্রতিবন্ধী যুবক তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি তাঁর। এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল হুগলি জেলার সহ সভাপতি স্বপন সামন্ত বলেন এই ধরণের কোনও ঘটনা ঘটেনি। তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করতে কেউ চক্রান্ত করেছে। তবে ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ। তাঁর কথায়, “তৃণমূলের বুথ সভাপতি নয়, উনি একজন দুষ্কৃতী। একজন প্রতিবন্ধীর উপর এই নির্মম অত্যাচারে ধিক্কার জানাই।”