সময় আন্দাজ বেলা বারোটা। নেতাদের বক্তৃতাও শুরু হয়ে গিয়েছে ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে। ধর্মতলার সেই মঞ্চ থেকে কিলোমিটার খানেক দূরে তখন মাইকে আর্জি জানানো হচ্ছে, দয়া করে আপনারা সভাস্থলে যান। এখন চিড়িয়াখানার দিকে যাবেন না। গিয়ে লাভ নেই।
সভা উপলক্ষ্যে কলকাতার বিভিন্ন জায়গাতেই বরাবরই তৈরি হয় সহায়ক মঞ্চ। তেমনই একটি মঞ্চ ছিল এসএসকেএম হাসপাতাল, পিটিএস-এর কাছাকাছি। সেখানেই শোনা গেল এই আর্জি।
জেলা থেকে সভা দেখতে আসা কর্মী-সমর্থকরা যাতে ধর্মতলার বদলে চিড়িয়াখানামুখী না হয়ে যান তাই মাইকে হঠাৎই বলতে শোনা গেল, “এখন চিড়িয়াখানায় যাবেন না। খোলেনি। আড়াইটের পর খুলবে। এখন সভায় যান।“
২১ শে জুলাই উপলক্ষ্যে প্রতি বছর বিভিন্ন জেলা গ্রাম-গঞ্জ থেকে যত লোক আসেন তাঁদের একটা অংশ ‘রথ দেখা কলা বেচা’-র জন্য বরাবরই চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল বা এদিক-ওদিক ঢুঁ মেরেই থাকেন। দলের নেতারাও জানেন, এটাকে পুরোপুরি ঠেকানো যায় না। এবং তাঁরা এদিক-ওদিক না গিয়ে সোজা ধর্মতলা যেতে গ্রাম থেকে আসা মানুষদের উদ্বুদ্ধ করেন, এটাও আগে হয়েছে। কিন্তু এই ভাবে মাইক ফুঁকে এতবার করে ‘চিড়িয়াখানায় যাবেন না, এখানে যাবেন না, ওখানে যাবেন না’—-এমন কাতর আবেদন বড় একটা শোনা যায় না।
কিন্তু এ বার এত মরিয়া আর্জি কেন? অনেকেই বলছেন, অন্যান্য বারের মতো এ বছর ২১ জুলাইয়ের সভায় তেমন লোক হয়নি। তৃণমূল নেতৃত্বেরও সেই আশঙ্কা প্রথম থেকেই ছিল। তাই যে ক’টা লোককে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে গ্রাম-গঞ্জ থেকে ধরে আনা হয়েছে তাঁদের একটা অংশও যদি আবার নেত্রীকে না দেখে জিরাফ দেখতে বেশি আগ্রহী হয়ে যান তাহলে ভিড় আরও একটু পাতলা হওয়ার আশঙ্কা। সকাল থেকে তাই জোরকদমে মাইকে চলছে ঘোষণা। আগে সভা, তারপর বেড়ানো।