পশ্চিমবঙ্গে এবার আক্রান্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী । রাজ্যে ভোটের ফল প্রকাশের পর আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের দেখতে এসে এবার পশ্চিম মেদিনীপুর এসেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি মুরলীধরণ। সেখানে তাঁর গাড়ির উপর হামলা চালাল এক দল দুষ্কৃতী। ঘটনায় অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
পশ্চিমবঙ্গে ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে হিংসা, খুনোখুনির ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার নবান্নে এসেছে কেন্দ্রীয় টিম। রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে সেই টিমের যখন বৈঠক চলছে তখনই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উপর হামলার ঘটনা ঘটল মেদিনীপুরে। বৃহস্পতিবারন মেদিনীপুরের পাঁচকড়ি এলাকায় পরিদর্শনে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি মুরলীধরন। এদিন সকালে মেদিনীপুর থেকে ঘাটাল যাওয়ার পথে কোতওয়ালি থানার অন্তর্গত পাঁচখুরি এলাকায় আক্রান্ত হয়েছেন মুরলীধরণ। অভিযোগ, ইট ছুড়ে, বাঁশ দিয়ে মেরে ভাঙচুর করা হয়েছে তাঁর গাড়ি। সেই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহাও। তিনি আহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রীর গাড়ির চালকও।
এই ঘটনায় জন্য তৃণমূল এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘‘কোনও জায়গায় বিরোধীরা হেরে গিয়ে হতাশ হয়ে কিছু ঘটনা ঘটাতে পারে। কিন্তু এখানে জেতার পর শাসক দলের লোকজন অত্যাচার করছে। মহিলাদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে।’’ যদিও এই ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেছেন, ‘‘আমাদের কেউ এই কাজের সঙ্গে জড়িত নয়। ভোটের পরই এলাকা শান্তই রয়েছে। কিন্তু বিজেপি-র নেতারা এসে প্ররোচনা ছড়িয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে।’’
রবিবার ভোট গণনার দিন থেকেই রাজ্যের একাধিক প্রান্ত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। পরদিন থেকে সংঘর্ষের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। তৃণমূল বিজেপি হাতাহাতির খবর আসতে থাকে বারবার। বিরোধীদের অভিযোগ, ফল প্রকাশের পর থেকেই বল্গাহীন সন্ত্রাস চালাচ্ছে শাসক দল তৃণমূল। কোথাও পার্টি অফিসে ভাঙচুর করছে, জ্বালিয়ে দিচ্ছে। কোথাও কর্মীদের মারধর করছে। এমনকি ইতিমধ্যে খুন হয়েছেন বহু দলীয় কর্মী । সেই সঙ্গে হাত পড়ছে মহিলাদের গায়েও । একাধিক স্থান থেকে মহিলাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর । যা নিয়ে ইতিমধ্যেই নবান্নে জোড়া চিঠি পাঠিয়েছে নর্থব্লক। প্রথম চিঠির জবাব না দেওয়ায় দ্বিতীয় চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা লিখেছেন, গত ২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষিত হয়। তারপর থেকেই রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে। বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছে। উঠেছে খুনের অভিযোগও। এই ব্যাপারে রিপোর্ট চেয়ে ৩ তারিখে রাজ্য সরকারকে চিঠি পাঠিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু আজ অবধি কোনও রাজ্যের তরফে কোনও রিপোর্ট পেশ করা হয়নি বলেই অভিযোগ। স্বরাষ্ট্রসচিব বলেছেন, “প্রথম চিঠির উত্তর পাইনি। এটা আমার দ্বিতীয় চিঠি। মনে করিয়ে দিতে চাই রাজ্যে যে হিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে সে ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ না করা হলে বিষয়টা আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।” এর মধ্যেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উপর হামলা ঘটে গেল রাজ্যে।