শুক্রবার ছট পুজো৷ তার আগে আজ বৃহস্পতিবার রবীন্দ্র সরোবর নিয়ে শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে৷ কিন্তু শীর্ষ আদালত কেএমডিএ -এর আর্জি খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখল৷ হাইকোর্টের নির্দেশ, এবারও রবীন্দ্র সরোবর ও সুভাষ সরোবরে করা যাবে না ছটপুজো৷
কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল কলকাতা মেট্রোপলিট্যান ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)৷ আজ বৃহস্পতিবার ওই আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট৷
তার ফলে ফের একবার ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার৷ এমনটাই বিরোধীদের দাবি৷ তবে সুপ্রিম কোর্টর শুনানির আগে থেকেই রবীন্দ্র সরোবরের খোলা অংশ টিন দিয়ে ঘিরে দেওয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছে কেএমডিএ৷
আদালতের নির্দেশ থাকা স্বত্বেও বিগত বছরে অনেকেই দল বেঁধে রবীন্দ্র সরোবরে গিয়ে ছটপুজো করেছে বলে অভিযোগ৷ তাই এবার যাতে সরোবরের ভিতরে কেউ ঢুকে ছটপুজো করতে না পারে তার জন্য, খোলা জায়গা টিন দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে৷ পাশাপাশি রবীন্দ্র সরোবরের গেটে সতর্কতামূলক পোষ্টার দেওয়া হয়েছে৷
সামনে রয়েছে পুলিশি পাহারা৷ এ বছর রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজো করা যাবে না৷ কোনও শর্তেই রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজোয় অনুমতি দেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে আদালত৷ এছাড়া সুভাষ সরোবরেও করা যাবে না ছটপুজো৷
পরিবেশ আদালতের কাছে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটি তথা কেএমডিএ আবেদন করেছিল, শর্ত সাপেক্ষে ছটপুজো করতে দেওয়া হোক রবীন্দ্র সরোবরে। কলকাতার অন্যতম ফুসফুস রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজো করতে অনেক আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত।কিন্তু এই বছর সেই নিষেধাজ্ঞা
তুলে দিতে জাতীয় পরিবেশ আদালতের কাছেই আর্জি জানায় কলকাতা মেট্রোপলিট্যান ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) ।কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে দেয় আদালত৷ রাজ্য সরকার সেই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে৷ রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজো করা নিয়ে রাজ্য সরকারের আবেদনের শুনানি পিছিয়ে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
কিন্তু রাজ্য সরকারে আবেদনে বৃহস্পতিবার তার শুনানি হয়৷ তাতে সুপ্রিম কোর্ট এদিন হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রাখল৷ প্রসঙ্গত, ১৯২০ সালে ব্রিটিশদের হাতে গড়ে ওঠা এই রবীন্দ্র সরোবরকে জাতীয় সরোবর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কলকাতার ফুসফুসেক একটি দিক হল এই সরোবর, আর একটি দিক ময়দান।
এখানে দেখতে পাওয়া নানা প্রজাতির পাখিগুলির মধ্যে রয়েছে কটন পিগমি গুজ, লার্জ–বিল্ড লিফ ওয়ার্বলার, টিক্কেল্স লিফ ওয়ার্বলার, ব্লাক–হেডেড কুক্কুস্রাইক এবং স্লটি–ব্লু ফ্লাইক্যাচার। অন্যদিকে ছটপুজোর জন্য কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করছে কলকাতা পুরসভা৷ এ কাজ কেএমডিএ ও কলকাতা পুরসভা যৌথভাবে করছে৷
গতবছরের তুলনায় এ বছর বেশি কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করা হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর৷ কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, করোনা আবহে এবছর কলকাতায় গত বছরের তুলনায় বেশি গঙ্গার ঘাট ও কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করা হচ্ছে।ছটপুজোর জন্য এবার ১৩০ টির বেশি গঙ্গার ঘাট ও কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করা হবে৷
এর মধ্যে প্রায় ৫৫ টি কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করা হচ্ছে৷ কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস কুমার জানিয়েছেন, ছটপুজোয় পুণ্যার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধে না হয় তার জন্য গঙ্গার ঘাট ও কৃত্রিম জলাশয়গুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক৷ কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে সব ঘাটে মাস্ক বিলি করা হবে৷ এছাড়া ঘাটগুলিতে শৌচালয় এবং মহিলাদের পোশাক পরিবর্তনের আলাদা জায়গা করা হচ্ছে৷ ঘাটে থাকবে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও৷ সামাজিক দূরত্ব বিধি মানা হচ্ছে কিনা,সেদিকে বিশেষ নজরদারি চলবে৷