সংক্রমণের ভয় এড়াতে ডেটল ও স্পিরিট দিয়ে টাকা ধুয়ে নিচ্ছেন দোকানদার। ক্রেতাদের হাতে কোনও জিনিস তুলে দিয়েই হাত পরিষ্কার করে নিচ্ছেন স্যানিটাইজার দিয়ে। ক্রেতারা চাইলে তাঁদের হাতেও দিচ্ছেন স্যানিটাইজার। এই ছবি দেখা গেল খেজুরির হলুদবাড়ি বাজারে। আতঙ্ক আর সচেতনতা যেখানে মিলেমিশে একাকার।
খেজুরি ২ নম্বর ব্লকের হলুদবাড়ি বাজারে স্টেশনারি জিনিসের দোকান ননীগোপাল সাউয়ের। নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দোকান হওয়ায় করোনা আতঙ্ক উপেক্ষা করে লকডাউনের বাজারে দোকান খোলা রাখতে হয়েছে তাঁকে। সকাল বিকেল সে দোকানে ভিড় কিনতে আসা মানুষজনের। তাই নিজের, পরিবারের, ও সমাজের সবার সুরক্ষাকে উপেক্ষা করতে পারেননি ননীগোপালবাবু। টাকাপয়সার মাধ্যমে বেশি ছড়ায় জীবাণু। এটা ভেবেই ক্রেতাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দোকানের সামনে রাখা ডেটল জলে চুবিয়ে দিচ্ছেন। এরপর ভিজে টাকা পাশেই রাখা খবরের কাগজের ভাঁজে রেখে শুকিয়ে নিচ্ছেন তিনি।
দোকানদারের এমন কাণ্ড দেখে কৌতুহল ছড়িয়েছে ক্রেতাদের মধ্যেও। তবে বাতিক ভেবে বিষয়টিকে একেবারে বাতিলও করে দিতে পারছেন না তাঁরা। দোকানে আসা এক ক্রেতা বললেন, ‘‘আমাদের ব্যাগেও টাকা থাকে। কখনও এভাবে টাকা ধুয়ে নেওয়ার কথা ভাবিনি। তাই প্রথমে দেখে একটু অবাক হয়ে গেছিলাম। পরে ভাবলাম, এভাবে উনি যদি সামাল দিতে পারেন, মন্দ কী?’’
ননীগোপালবাবু বলছেন, ‘‘ভাইরাস টাকার মাধ্যমেও ছড়াতে পারে, বিশেষ করে কয়েনের মাধ্যমে। আর জিনিস বেচাকেনা করি বলে সারাক্ষণ আমাদের টাকা পয়সা নিয়ে নাড়াচাড়া করতে হয়। তাই ডেটল জলে কিছুক্ষণ রেখে পরে শুকিয়ে নিচ্ছি। সবার নিরাপত্তাই তো দেখতে হবে। রোগ যদি আমার হয়, আমার থেকে তো আরও ছড়াতে পারে। সাবধানের মার নেই।’’
ননীগোপালবাবুকে দেখে এখন আশেপাশের দোকান মালিকরাও ভাবতে বসেছেন, সতর্কতা হিসেবেও তাঁরাও কি এই পথ ধরবেন?