করোনা আবহে এবারের সব পুজো কমিটি ছোট পুজো করে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহারে গুরুত্ব দিচ্ছে। উত্তরবঙ্গের অন্যতম সেরা দুর্গোৎসব হয় উত্তর দিনাজপুর জেলা সদর রায়গঞ্জ শহরে। রায়গঞ্জ শহরে ত্রিশটি বিগ বাজেটের পুজোর দশটি পুজো কমিটির দুর্গাপুজা কলকাতার পুজোর সাথেও পাল্লা দিয়ে থাকে। কিন্তু এবছর করোনার কারনে সবকিছু থমকে যাওয়ার সাথে সাথে ম্লান করে দিয়েছে রায়গঞ্জের বিগ বাজেটের পুজোগুলোকেও৷
পুজোর তিনমাস আগে থেকে প্রতিবছর যেখানে মন্ডপ নির্মানের কাজ শুরু হয় সেখানে এবছর একটি বাঁশও পড়েনি মন্ডপ তৈরির মাঠে। আজ থেকে দুএকটি বিগ বাজেটের পুজো কমিটি ঘাস ছাঁটা ও বাঁশ ফেলার কাজ শুরু করেছে। তবে পুজোর বাজেট অর্দ্ধেকেরও অনেক কম। কেননা করোনা ও লকডাউনের কারনে সাধারণ মানুষের আর্থ সামাজিক পরিস্থিতির করুন দশা হয়েছে। সাধারণ মানুষ থেকে ব্যাবসায়ী কারও কাছে চাঁদা তুলে পুজো করা যাবে না এবার। পুজো কমিটির সদস্যরা নিজেরাই টাকা দিয়ে কোনওরকমে পুজোটা সারবেন এবার।
জাঁকজমক ও জৌলুস না করে সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রেখে এবং রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনেই এবার ছোট করে দুর্গাপূজা করতে চলেছে রায়গঞ্জ শহরের সুদর্শনপুর সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি, অমর-সুব্রত স্পোর্টিং ক্লাবের মতো বিগ বাজেটের পুজো কমিটি।
রায়গঞ্জ শহরের বেশ কয়েকটি বিগ বাজেটের দুর্গাপূজা হয়ে থাকে। সুদর্শনপুর সার্বজনীন, অমর-সুব্রত স্পোর্টিং ক্লাব, শাস্ত্রী সংঘ, বিদ্রোহী ক্লাব, সমাজ সেবক সংঘ, বিপ্লবী ক্লাব বিশাল বাজেটের পুজো করে দর্শকদের মন জয় করে আসছে। কেউ অক্ষরধাম মন্দীর, কেউ মায়াপুরের ইস্কন মন্দিরের আদলে সুদৃশ্য মন্ডপ ও সুন্দর প্রতিমা তৈরি করে রাজ্যের সেরার শিরোপা পুজোর সন্মানও লাভ করেছে। কিন্তু এবার করোনা আবহে সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। ভেঙে গিয়েছে সাধারন মানুষের আর্থিক পরিকাঠামো। চাঁদা দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই সাধারন মানুষের। নেই পুজোর উচ্ছাস আনন্দ। তাই এবার পুজো হলেও একেবারে ছোট করে পুজো করছেন রায়গঞ্জ শহরের বিগ বাজেটের পুজো উদ্যোক্তারা।
ছোট ও কম বাজেটের মধ্যে যতটুকু আকর্ষনীয় করা যায় সেটাই করছেন পুজো কমিটির কর্মকর্তারা। তবে পুজো মন্ডপে প্রবেশ করতে গেলে অবশ্যই দর্শনার্থীদের পড়তে হবে মাস্ক এবং ব্যবহার করতে হবে স্যানিটাইজার। সেই ব্যবস্থাও মন্ডপে মন্ডপে রাখছেন পুজো কমিটিগুলি। মানা হবে সামাজিক দূরত্ব বিধি এবং রাজ্য সরকারের সমস্ত করোনা সংক্রমণ নির্দেশিকা।